বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২০ দেশের ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষার্থীদের পারমাণবিক আইসব্রেকারে (বরফে ঢাকা পানিপথে চলার জন্য বিশেষ ধরনের জাহাজ) চড়ে উত্তর মেরু অভিযানে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় পরমাণুশিল্পের ৮০ বছর পূর্তি এবং উত্তর সমুদ্রপথ উন্নয়নের ৫০ বছর উদ্‌যাপন উপলক্ষে উত্তর মেরু অভিযানের এ আয়োজন করা হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাশিয়ার পরমাণু সংস্থা রোসাটম একটি বেসরকারি বার্তা সংস্থার মাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি (রোসাটম) পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের জন্য এ সুযোগ সৃষ্টি করেছে রাশিয়া। তবে এ জন্য শিক্ষার্থীদের একটি অনলাইন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। রোসাটমের সহায়তায় পরমাণুশিল্প তথ্যকেন্দ্র নেটওয়ার্ক ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও শিক্ষা প্রকল্প ‘আইসব্রেকার অব নলেজের’ অধীনে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের থেকে আবেদন আহ্বান করেছে। আগামী ২৭ মে মধ্যে শিক্ষার্থীদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। এতে আর্মেনিয়া, বাংলাদেশ, বেলারুশ, বলিভিয়া, ব্রাজিল, চীন, মিসর, ঘানা, হাঙ্গেরি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কিরগিস্তান, কাজাখস্তান, মঙ্গোলিয়া, মিয়ানমার, নামিবিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, উজবেকিস্তান, ভিয়েতনাম ও তুরস্কের স্কুলশিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তিনটি ধাপে চূড়ান্ত বিজয়ীদের নির্বাচিত করা হবে। আগামী ২০ জুন চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করে উত্তর মেরু অভিযাত্রী দল গঠন করা হবে। দলটি চলতি বছরের আগস্ট বা সেপ্টেম্বরের কোনো এক সময় পারমাণবিক আইসব্রেকারে চড়ে ১০ দিনব্যাপী উত্তর মেরু অভিযানে যাবে।

অভিযানকালে সদস্যরা বিভিন্ন শিক্ষামূলক প্রোগ্রামে যুক্ত হবে, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে লেকচার সেশন, মাস্টার ক্লাস, কুইজ প্রতিযোগিতা ইত্যাদি। আইসব্রেকার অব নলেজ প্রকল্পটির অন্যতম লক্ষ্য প্রতিভাবান শিশুদের খুঁজে বের করে তাদের প্রতিভার উন্নয়নে সহায়তা দেওয়া এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গঠনে নির্দেশনা দেওয়া বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ