ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা কমাতে আলোচনায় বসছে যুক্তরাষ্ট্র
Published: 30th, April 2025 GMT
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে কূটনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। উত্তেজনা প্রশমন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।  
বুধবার (৩০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
মঙ্গলবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ওয়াশিংটন উভয় পক্ষকে উত্তেজনা কমাতে আহ্বান জানাচ্ছে।
আরো পড়ুন:
নির্বাচনে জিতেই ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী
ইয়েমেনে মার্কিন হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা ইরানের
ট্যামি ব্রুস সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা উভয় পক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি এবং স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি, যেন কেউ পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে না করে।”
তিনি বলেন, “পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বিশ্বাস করেন কূটনীতির নেতৃত্ব নেওয়া উচিত। ব্রুস বলেন, “পররাষ্ট্রমন্ত্রী অন্যান্য জাতীয় নেতা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীদেরও ‘এই বিষয়ে দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে উৎসাহিত করেছেন’।”
ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলার পর দুই পারমাণবিক-সশস্ত্র প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে।
২২ এপ্রিল সংঘটিত ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক ছিলেন। ফলে ২০০০ সালের পর থেকে এই অঞ্চলের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনাগুলোর মধ্যে এটি একটি।
২৩ এপ্রিল ভারত একতরফাভাবে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করে, যা বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় পাকিস্তানের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ পানিবণ্টন চুক্তি, যা দুই দেশের মধ্যে অসংখ্য সংঘাতের পরেও টিকে আছে।
পরের দিন, পাকিস্তান ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি স্থগিত রাখার এবং ভারতীয় বিমানের জন্য তার আকাশসীমা বন্ধ করার হুমকি দিয়ে প্রতিশোধ নেয়।
ভারতের দাবি, এই হামলায় আন্তঃসীমান্ত সংযোগ জড়িত থাকতে পারে, যদিও তারা কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সরবরাহ করেনি। বিপরীতে, পাকিস্তান দৃঢ়ভাবে এতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ সত্য উদঘাটনের জন্য ঘটনার স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আত্তা তারার আজ বুধবার ভোরে সতর্ক করে বলেছিলেন, ইসলামাবাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে, ভারত পহেলগাম হামলাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সামরিক হামলা চালাতে পারে।
মন্ত্রী ভারতের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে অভিযোগ করেন যে, ভারত এই অঞ্চলে ‘বিচারক, জুরি এবং জল্লাদের স্ব-নির্ধারিত ভূমিকা’ গ্রহণ করছে। নয়াদিল্লির এমন ভূমিকাকে বেপরোয়া এবং অস্থিতিশীলকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ইসলামাবাদ ।
সংযম এবং আঞ্চলিক শান্তির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, পাকিস্তান নিজেই সন্ত্রাসবাদের কারণে প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এই ধরনের সহিংসতার যন্ত্রণা ও পরিণতি বোঝে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র পরর ষ ট রমন ত র পরর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’