দেশে মুক্তবাণিজ্য এলাকা স্থাপনে জাতীয় কমিটি গঠন
Published: 30th, April 2025 GMT
দেশে মুক্তবাণিজ্য এলাকা বা ফ্রি ট্রেড জোন (এফটিজেড) স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। চলতি বছরের মধ্যেই এই মুক্তবাণিজ্য এলাকা স্থাপনের ঘোষণা আসতে পারে।
ইতিমধ্যে এফটিজেড স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই, বিশ্বের অন্যান্য দেশের সংশ্লিষ্ট আইন, প্রণোদনা, মডেল প্রভৃতি পর্যালোচনার জন্য জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। ২১ এপ্রিল এই কমিটি গঠন করা হয়।
আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। সংস্থাটি জানায়, অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দক্ষতা উন্নয়ন, অর্থনীতি ও রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনা ও আঞ্চলিক উন্নয়নসহ নানা কারণে বর্তমান বিশ্বে মুক্তবাণিজ্য এলাকা (এফটিজেড) জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে এফটিজেড স্থাপনের বিষয়টি পর্যালোচনা করতে বেজার উদ্যোগে আট সদস্যের জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি বেজার নির্বাহী সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন); সদস্যসচিব বেজার পরিচালক (ওএসএস ও সমন্বয়)।
এ ছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, শিল্প মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) থেকে একজন করে প্রতিনিধি থাকবেন এই কমিটিতে। এই কমিটির কাজ সার্বিকভাবে তত্ত্বাবধান করবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এবং বেজা ও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন (আশিক চৌধুরী)।
মুক্তবাণিজ্য এলাকা স্থাপনে গঠিত এই জাতীয় কমিটির প্রথম সভা আগামী ৬ মে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এতে সভাপতিত্ব করবেন বেজা ও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।
বেজা জানিয়েছে, উল্লিখিত কমিটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন, কাস্টমস আইন, আমদানি ও রপ্তানি আইনসহ সংশ্লিষ্ট সব আইন, বিধি, বিধান পর্যালোচনা করে মুক্তবাণিজ্য এলাকা স্থাপনে সহায়ক হয়—এমন আইন, বিধি, নীতিমালা প্রণয়ন বা সংশোধন করবে। যেসব দেশে সফলভাবে এফটিজেড পরিচালিত হচ্ছে সেগুলোর মডেল, আইন, নীতি ও প্রণোদনা—প্রভৃতি বিষয়ে পর্যালোচনা করবে কমিটি। পরবর্তীকালে সে আলোকে বাংলাদেশে এফটিজেড স্থাপনের ক্ষেত্রে অনুসরণীয় কাঠামোর খসড়া প্রস্তুত করা হবে।
কমিটির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে মুক্তবাণিজ্য এলাকা স্থাপনের সম্ভাব্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করা এবং সেগুলোর প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাই করা। সম্ভাব্য স্থানগুলোর ভৌগোলিক, অবকাঠামোগত ও সরবরাহ (লজিস্টিকস) সুবিধা যাচাই করা। এ ছাড়া এফটিজেড স্থাপনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অংশীজন নির্ণয় এবং তাদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় আলোচনা করবে এ কমিটি। এসবের আলোকে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দেবে তারা।
এ বিষয়ে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশকে বৈশ্বিক উৎপাদনকেন্দ্র (ম্যানুফ্যাকচারিং হাব) হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। সে জন্য মুক্তবাণিজ্য এলাকা অন্যতম অনুষঙ্গ। তাঁর আশা, এ লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় কমিটি ও সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা উদ্যোগী হলে চলতি বছরের মধ্যেই দেশে মুক্তবাণিজ্য এলাকা ঘোষণা করা সম্ভব হবে।
বেজা জানিয়েছে, মুক্তবাণিজ্য অঞ্চল (এফটিজেড) এমন ধরনের নির্দিষ্ট এলাকা, যেখানে শুল্ক কর্তৃপক্ষের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়াই পণ্য আমদানি, উৎপাদন ও পুনঃ রপ্তানি করা যেতে পারে। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, রপ্তানি, বাণিজ্য বৃদ্ধি ও শিল্পায়ন বৃদ্ধিতে এফটিজেড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ত য় কম ট কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপির উদ্বেগ আদালত অবমাননার শামিল: ইশরাক
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদ নিয়ে ইশরাক হোসেনের মামলা, রায় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তৎপরতা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টিকে আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, এনসিপি আইনের ব্যাখ্যা এবং আইন সম্পর্কে অজ্ঞ থাকায় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। একই সঙ্গে বিজ্ঞ আদালতের আদেশকে অবমাননা করেছে।
বুধবার রাতে এক প্রতিবাদলিপিতে ইশরাক হোসেনের পক্ষে তাঁর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম এ কথা বলেছেন। এর আগে গতকাল বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল এনসিপি।
দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হওয়া নিয়ে এনসিপির উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করে ইশরাক হোসেনের পক্ষে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে তাঁর আইনজীবী বলেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির কারণ নিয়ে এনসিপির বক্তব্য একেবারেই শিশুসুলভ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যেকোনো মামলায় দ্রুত নিষ্পত্তির বিজ্ঞ আদালতের একটি সহজাত ক্ষমতা। তা ছাড়া ২০২০ সালে দায়ের করা মামলাটি ২০২৫ সালে নিষ্পত্তি হয়েছে। এটি দীর্ঘ পাঁচ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, যা মোটেও সংক্ষিপ্ত সময় নয়; বরং মোকদ্দমাটি আরও আগেই নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন ছিল।
নির্বাচনী মামলার নিষ্পত্তি সংক্ষিপ্ত সময়ে হওয়া উচিত উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, এনসিপির এ জাতীয় বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত যে বক্তব্য দিয়েছে, তার সম্পূর্ণ আইনি অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। মামলার তদবিরকারক বাদীর ইচ্ছা অনুযায়ী যে কেউ হতে পারে বিধায় বিজ্ঞ আদালত হলফনামা গ্রহণ করেছেন, যা সম্পূর্ণ আইন মেনেই করা হয়েছে। এ ছাড়া আদালত কোনো প্রকার বিচার-বিশ্লেষণ করেননি বলে যে বক্তব্য এনসিপি দিয়েছে, তা এককথায় তাদের জ্ঞানের স্বল্পতারই বহিঃপ্রকাশ এবং আদালত অবমাননার শামিল।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘আদালত যথাযথ আইন মেনেই রায় প্রদান করেন। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি ন্যায়বিচার হয়নি বলে মনে করে, তাহলে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ আছে এবং তার বক্তব্য ওই উচ্চ আদালতে রাখারও সুযোগ আছে। এভাবে প্রেসনোট দিয়ে বক্তব্য প্রদান দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা ও বিজ্ঞ আদালতকে অবমাননা ছাড়া কিছুই নয়।’
২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফল বাতিল করে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপি নেতার ইশরাক হোসেনকে গত ২৭ মার্চ মেয়র ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন আদালত। এর এক মাস পর আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গেজেট প্রকাশের পর এটি বর্তমানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই মন্ত্রণালয় থেকে শপথ গ্রহণের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। তবে কবে নাগাদ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে, সে বিষয়টি নিয়ে এখন ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী আগামী ১৫ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।