বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও কিশোর গ্যাংয়ের মামলায় আসামিপক্ষে সরকারি আইনজীবীদের না দাঁড়ানোর নির্দেশ
Published: 30th, April 2025 GMT
কুমিল্লার আদালতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও কিশোর গ্যাংয়ের মামলায় আসামিপক্ষে সরকারি কোনো আইনজীবীকে না দাঁড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার কুমিল্লা জেলা আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) কাইমুল হক ও সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) মো. তারেক আবদুল্লাহ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ওই সিদ্ধান্তের কারণে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও কিশোর গ্যাংয়ের মামলায় আসামিপক্ষে কুমিল্লার আদালতের কোনো পিপি, জিপি, অতিরিক্ত পিপি, সহকারী পিপিসহ রাষ্ট্রপক্ষের কোনো আইনজীবী জামিন আবেদন বা অন্যান্য আইনি কার্যক্রম চালাতে পারবেন না। আজ বুধবার পিপি কাইমুল হক বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।
নির্দেশনাপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘এতদ্দ্বারা কুমিল্লা জেলার সকল সরকারি আইন কর্মকর্তা ও সরকারি কৌঁসুলিদের জানানো যাইতেছে যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলাকারী ও কিশোর গ্যাংয়ের কোনো মামলা আসামিপক্ষে পরিচালনা না করার জন্য আপনাদের অনুরোধসহকারে নির্দেশ প্রদান করা গেল।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা মহানগরের আহ্বায়ক আবু রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমন সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। আমরা আইনজীবীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দেশের সব জেলায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এ ছাড়া এমন গণমুখী সিদ্ধান্তের কারণে অপরাধপ্রবণতাও কমে আসবে বলে আমরা মনে করি। তবে সরকারি আইনজীবীদের পাশাপাশি আমরা সব সাধারণ আইনজীবীদেরও ওই দুই শ্রেণির আসামিপক্ষে না দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করব।’
পিপি কাইমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, কুমিল্লার আদালতে যাঁরা সরকারি আইন কর্মকর্তা আছেন, সবাই বসে সবার সঙ্গে আলোচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ তাঁরা জানতে পেরেছেন, বিভিন্ন সরকারি আইন কর্মকর্তা ও কৌঁসুলি এসব মামলায় আসামিদের পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন। তাই লিখিত অনুরোধ–সংবলিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে সবাই মেনে চলেন। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। এখনো বহু মানুষ হাসপাতালে পঙ্গু হয়ে ধুঁকছে। আর কিশোর গ্যাং এখন কুমিল্লার মানুষের কাছে আতঙ্কের নাম। তাঁরা নিরাপদ কুমিল্লা চান। তাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার পাশাপাশি কিশোর গ্যাংয়ের মামলায় কুমিল্লার আদালতে আসামিপক্ষে সরকারি আইনজীবীদের না দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইনজ ব দ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র বাবুল কারাগারে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার মামলায় পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আইয়ুব বাবুলকে (৫৯) কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হলে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। পরে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ নুরুল ইসলাম জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আইয়ুব বাবুল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের মহল্লা বাড়ির মৃত আমিনুর রহমানের ছেলে।
জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট দুপুরে পটিয়া পৌরসদর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।
এ ঘটনায় গত বছরের ১৯ আগস্ট দুপুরে পটিয়া আল জামিয়া আল ইসলামিয়া জমিরিয়া কাসেমুল উলুমের (পটিয়া মাদরাসা) ছাত্র মো. নুরুল হাসান ৭৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ২৫০-৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় আইয়ুব বাবুল এজাহারনামীয় আসামি। এছাড়াও বিএনপি অফিসে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট, বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টাসহ আরও তিনটি মামলার তিনি এজাহারনামীয় আসামি ছিলেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ সমকালকে বলেন, ‘পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আইয়ুব বাবুল হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। মঙ্গলবার নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আইয়ুব বাবুল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা একাধিক মামলার আসামি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আইয়ুব বাবুল নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথম বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভোট পেয়েছিলেন ১৪ হাজার ৮৩৬টি। অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির প্রার্থী নুরুল ইসলাম সওদাগর পেয়েছিলেন ১ হাজার ৪৯৪ ভোট।