বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব কমানোর চেষ্টা করছে চীন। মার্কিন পণ্যে যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে তারা, সেই শুল্ক থেকে কিছু কিছু মার্কিন পণ্যে ছাড় দিচ্ছে তারা। ইতিমধ্যে তার একটি তালিকাও করা হয়েছে। এমনকি কোম্পানিগুলোকে সে বিষয়ে তারা অবগতও করেছে। বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত দুটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

ইতিমধ্যে চীন কিছু পণ্যে শুল্কছাড় দিয়েছে, যেমন নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ, মাইক্রোচিপস, বিমানের ইঞ্জিন। সেই সঙ্গে কোম্পানিগুলোর কাছে তারা জানতে চেয়েছে, কোন কোন পণ্যে ছাড় দেওয়া প্রয়োজন। যদিও বিষয়টি নিয়ে আগে সংবাদ প্রতিবেদন করা হয়নি।

অনেকটা সন্তর্পণে এ কাজ করছে চীন। এতে সুবিধা হলো, তারা একদিকে জনসমক্ষে যুদ্ধংদেহী অবস্থান বজায় রাখছে, অন্যদিকে সবার অজান্তে ছাড় দিচ্ছে।

তবে এ তালিকায় ঠিক কী পরিমাণ পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তা পরিষ্কার নয় বা এখন পর্যন্ত তা জানা যায়নি। কর্তৃপক্ষও বিষয়টি জনসমক্ষে প্রকাশ করেনি। সেই সূত্র দুটিও নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি। কারণ, এ তথ্য এখনো সরকারিভাবে জানানো হয়নি।

চীন সরকার গোপনে কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানিয়ে দিচ্ছে, কোন কোন পণ্যে এই ছাড় দেওয়া হয়েছে। মার্কিন এক ওষুধ কোম্পানির একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এই কোম্পানি চীনের বাজারে ওষুধ বিক্রি করে।

চীনের সাংহাই প্রদেশের সরকার সেই কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে গত সোমবার। সূত্র জানিয়েছে, সেদিনই তারা ছাড়ের তালিকা সম্পর্কে তাদের অবগত করে। ওষুধ তৈরিতে তাদের মার্কিন প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করতে হয়। সে জন্য তারা আগে থেকেই ছাড়ের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছিল।

সেই সূত্র আরও জানায়, ওষুধ তৈরিতে এখনো তাদের মার্কিন প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করতে হয়। আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, আরও বিভিন্ন কোম্পানিকে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের আমদানি করা পণ্যে শুল্কছাড়ের প্রয়োজন আছে কি না।

তবে এই ছাড়ের তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। এর আগে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ইথেনে ছাড় দিয়েছে। ইথেনের একমাত্র সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্র। যে কারণে ইথেন প্রক্রিয়াজতাকারী কোম্পানিগুলো ছাড় চেয়েছে।

মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, শিগগিরই চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হবে। তবে এই চুক্তিতে ন্যায্যতা থাকবে।

আরও দুটি সূত্র জানিয়েছে, এই বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব পরিমাপ করতে চীন বিভিন্ন কোম্পানির ওপর জরিপ করছে। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কর্তৃপক্ষ এক বিদেশি ব্যবসায়িক লবিকে বলেছে, শুল্কের কারণে বড় ধরনের কী সমস্যা হতে পারে, তা যেন সরকারকে জানানো হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের লাশ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাসুমের বাম হাতের একটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলার আলামত থাকায় তার পরিবার অভিযোগ করছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে কালনা মধুমতি সেতুর পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর মাসুমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ইজিবাইকের চালক সুজন শেখ তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে। 

আরো পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

মাসুমের স্বজনরা জানিয়েছেন, শালনগর ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে মাসুমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে তিনি ঢাকা থেকে লোহাগড়ায় আসেন। সকালে পরিবারের সঙ্গে তার শেষবার কথা হয়, এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।

মাসুম বিল্লাহর চাচা শরিফুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা শুনেছি, সকালে লোহাগড়া বাজারের একটি পার্লারে মেয়েটির সঙ্গে মাসুমের কথা হয়। এর পর মেয়েটির বাবার কাছ থেকে হুমকি পায় সে। পরে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে মাসুমের মৃত্যুর খবর জানি। তার বাম হাতের  নখ উপড়ানো ছিল। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”

মাসুমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া ইজিবাইক চালক সুজন বলেছেন, “ঘটনাস্থলে কোনো দুর্ঘটনার চিহ্ন ছিল না। তবে মনে হয়েছে, কেউ মাসুমকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছে।”

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম শনিবার (২ আগস্ট) সকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।” 

ঢাকা/শরিফুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ