শুটিং শুরুর পরপরই ফাঁস হলো ‘তাণ্ডব’ সিনেমার নায়িকা। সুপারস্টার শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করছেন অভিনেত্রী সাবিলা নূর— এমন খবর ছড়িয়ে পড়েছে রাজশাহীতে শুটিংয়ের ভিডিও প্রকাশের পর।

নির্মাতাদের পক্ষ থেকে নাম গোপন রাখার চেষ্টা থাকলেও শুটিং লোকেশনে ভক্তদের উপস্থিতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় আর গোপন থাকেনি কিছুই। ভিডিওতে দেখা গেছে, পুঠিয়া রাজবাড়ীতে রোমান্টিক দৃশ্যের শুটিং করছেন শাকিব ও সাবিলা।

তাণ্ডব সিনেমাটি পরিচালনা করছেন রায়হান রাফী, প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল। প্রযোজনায় আছে আলফা আই এসভিএফ এন্টারটেইনমেন্ট। সিনেমাটিতে বিশেষ একটি চরিত্রে থাকছেন জয়া আহসান।

আরো পড়ুন:

প্রেমের কারণেই ইসলাম গ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র

এফডিসিতে প্রবীর মিত্রের জানাজা বাদ জোহর, দাফন আজিমপুরে

আগামী ঈদুল আজহায় মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে অ্যাকশন ফ্যান্টাসি ঘরানার এই ছবির। শাকিব-সাবিলার জুটি এবারই প্রথম বড় পর্দায়। যদিও শুরুতে সিনেমা থেকে সাবিলার বাদ পড়ার গুঞ্জন ছিল, এমনকি নিদ্রা দে নেহা নামের এক নতুন মুখকে নায়িকা হিসেবে আনার কথাও শোনা গিয়েছিল।

গত ২৪ এপ্রিল থেকে রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় চলছে শুটিং, যা চলবে ৬ মে পর্যন্ত। এর আগে ঢাকার এফডিসি ও টঙ্গিতেও শুটিং হয়েছে।

রাজশাহীতে শুটিং চলাকালীন বিভিন্ন জায়গায় ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন নির্মাতারা। গত সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজশাহীর পুঠিয়া রাজবাড়ীতে ক্যামেরার সামনে আসেন শাকিব-সাবিলা। পরদিন মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাজশাহী সুগার মিল এবং তার পাশেই নারকেল গাছে ঘেরা একটি মনোরম রাস্তায় সিনেমার শুটিং হয়। তখনকার ভিডিওগুলোও পাওয়া যাচ্ছে ফেসবুকে। এসব ভিডিওতে শাকিবের নতুন লুক দেখে প্রশংসা করছেন ভক্তরা।

শুটিংয়ের সময় ভক্তদের ভিড় এড়াতে গত বুধবার (২৩ এপ্রিল) হাইটেক পার্কে দৃশ্যধারণ করা হয় গোপনে। তবুও খবর পেয়ে অনেকেই পার্কের বাইরে ভিড় করেন, যদিও পার্ক কর্তৃপক্ষ কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি।

শুটিং নিরাপত্তার জন্য রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশকে গত ১৩ এপ্রিল একটি চিঠি দেয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। এতে জানানো হয়, ২৪ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত বোয়ালিয়া, মতিহার, রাজপাড়া, কাশিয়াডাঙ্গা, শাহমখদুম ও কাটাখালী থানার বিভিন্ন স্থানে শুটিং হবে।

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, রাজশাহীতে শুটিং নির্বিঘ্নেই চলছে। তিনি বর্তমানে ঢাকায় থাকলেও টিম থেকে এ পর্যন্ত কোনো সমস্যা জানানো হয়নি।

ঢাকা/কেয়া/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন ম হল করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ