এইচএসসি পরীক্ষার দুই মাস বাকি, পরীক্ষার্থীদের করণীয় ১০ পরামর্শ
Published: 1st, May 2025 GMT
প্রিয় পরীক্ষার্থী, তোমরা ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। তোমাদের পরীক্ষা জুন মাসের ২৬ তারিখ থেকে শুরু হবে। এখন থেকে তুমি সময় পাবে মাত্র দুই মাস। মনে রেখো, সিলেবাসটি বড়, তাই এখন থেকেই তোমাকে রিভিশন দিয়ে সঠিক প্রস্তুতি নিতে হবে। তোমরা কীভাবে ভালো ফলাফল করবে, তা নিয়ে দেওয়া হলো ১০টি পরামর্শ।
১. আগে পরিকল্পনা ঠিক করো-
পরীক্ষায় প্রস্তুতি ভালো করে নেওয়ার জন্য প্রয়োজন পড়ার একটা ‘সঠিক পরিকল্পনা’ করা। আর সেই পরিকল্পনাটি কেমন হবে, তোমাকেই তা ঠিক করে নিতে হবে। তোমাকেই ধীরে ধীরে সঠিক প্রস্তুতির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে নিতে হবে।
আরও পড়ুননেদারল্যান্ডসে স্কলারশিপ, আইইএলটিএস ৬.৫ বা টোয়েফলে ৯০ থাকলে আবেদন২৭ এপ্রিল ২০২৫
২. বোর্ড তৈরি করে নাও-
‘পড়া ও পরীক্ষা’বিষয়ক প্রয়োজনীয় সবকিছু চোখের সামনে থাকা চাই। আর তা তোমার পড়ার টেবিলের সামনের বোর্ডে লাগিয়ে রাখতে হবে। যেমন তোমার তৈরি করা পড়ার রুটিন, এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন, পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও গণিতের সূত্রগুলো, ভূগোলের মানচিত্র, ছবি, গ্রাফ, খুঁটিনাটি সমস্যার সমাধান, প্রয়োজনীয় তথ্য ইত্যাদি। বোর্ডে সব দরকারি তথ্যগুলো তোমার চোখের সামনে থাকলে খুব সহজেই চোখে পড়বে, আর তা আয়ত্তে এসে যাবে।
৩. তৈরি করো পড়ার রুটিন-
একজন ছাত্রের প্রতিদিনের পড়ার ‘একটা রুটিন’ থাকতে হবে। তুমি বিজ্ঞান, মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষা—যে বিভাগেই পড়ো না কেন, তুমি নিজেই একটা রুটিন তৈরি করে নেবে। কোন বিষয়টা আগে পড়বে, কোনটা পরে পড়বে, কোন বিষয়টা কত সময় ধরে পড়বে—তোমার প্রয়োজনমতো তা ঠিক করে নাও।
৪. সাইড নোট জরুরি-
প্রতিদিন পড়ার সময় তুমি বিভিন্ন বিষয়ে যে যে সমস্যার মুখোমুখি হবে, তা তখনই নোট খাতায় লিখে রাখবে। পরে সেই সমস্যাগুলো কলেজশিক্ষক বা গৃহশিক্ষক বা বড়দের সহায়তা নিয়ে সমাধান করে নিতে পারবে। এতে তোমার প্রস্তুতিটা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
আরও পড়ুনএইচএসসি পরীক্ষা শুরু ২৬ জুন, শিক্ষার্থীদের যে ১১ নির্দেশা মানতে হবে ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫এম এ কালামউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থানে আহত সামিউলের দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা রাখা বাগেরহাটের ছাত্র সামিউল ইসলাম এখন চরম অসহায়ত্ব ও অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন পার করছেন। হামলায় গুরুতর আহত হওয়ায় তিনি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। এমনকি, ঠিকভাবে বসতেও পারেন না সামিউল।
২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বাগেরহাট কোর্ট চত্বরে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের হামলার শিকার হন সামিউল ইসলাম। এতে তার হাতের পেশি কেটে যায় এবং মাথা ও পিঠে গুরুতর আঘাত লাগে। নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পরও পুরোপুরি সুস্থ হননি তিনি।
এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা সামিউল ইসলামের। ২৬ জুন শুরু হতে যাওয়া পরীক্ষায় অংশ নেওয়া নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। তার পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা দাবি জানিয়েছেন, অসুস্থ শিক্ষার্থীদের জন্য যেমন পরীক্ষায় বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়, সেরকম ব্যবস্থা করা হোক সামিউলের জন্যও।
সামিউলের প্রতিবেশী শামসুদ্দোহা বলেছেন, “সামিউল হামলায় আহত হওয়ার পর থেকেই নানা সমস্যায় ভুগছে। সরকারিভাবে যেভাবে অসুস্থদের সহায়তা দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়, সেভাবে তাকেও সুযোগ দেওয়া হোক।”
সামিউলের বাবা আইয়ুব আলী শেখ বলেছেন, “আমার একমাত্র ছেলে এখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি। এখনো তার পিঠ ও হাতে ব্যথা আছে। অনেক খরচ করে চিকিৎসা করালেও উন্নতি হয়নি। সরকার যেন উন্নত চিকিৎসা ও পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেয়।”
সামিউলের মা রুবিয়া বেগম বলেছেন, “ছাত্রলীগের হামলায় ওর যা অবস্থা হয়েছে, তা বলার মতো না। আমরা ওকে ভয়ে কোথাও নিতে পারিনি। এখন সে কিছুই করতে পারে না। পরীক্ষা দিতে পারলে হয়ত ভবিষ্যতের একটা রাস্তায় পৌঁছাতে পারত।”
সামিউল ইসলাম বলেছেন, “আমি এখনো স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারি না। খেতেও কষ্ট হয়। লেখালেখি করতে পারি না। এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার স্বপ্ন ছিল, কিন্তু এখনো সুস্থ না হওয়ায় সব অনিশ্চিত হয়ে গেছে। আমি চাই, সরকার যেন আমাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেয় এবং উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।”
আন্দোলনের সহযোদ্ধা মো. রেজুয়ান শেখ বলেন, “ছাত্রলীগ রামদা ও হকিস্টিক দিয়ে সামিউলের ওপর হামলা চালায়। সে এখন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে কি না, তা নিয়েই শঙ্কা তৈরি হয়েছে। আমরা সরকারের সহযোগিতা চাই।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাগেরহাট জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক নাঈম শেখ বলেছেন, “সামিউলের চিকিৎসা এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। সে আমাদের আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী। তার বর্তমান অবস্থা আমাদের ব্যথিত করে।”
রাংদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেন বলেছেন, “সামিউল মেধাবী শিক্ষার্থী। সরকার যদি তাকে বিশেষ সুবিধা দেয়, তাহলে সে ভালো ফল করতে পারবে।”
ঢাকা/শহিদুল/রফিক