নির্বাচন ঠেকাতে চাওয়া শক্তিকে জনগণ ক্ষমা করবে না: আমীর খসরু
Published: 1st, May 2025 GMT
নির্বাচন ঠেকাতে চাওয়া শক্তিকে জনগণ ক্ষমা করবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, যারা জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে আন্দোলনে ছিল না, এখন তারাই বলছেন নির্বাচন না হলেই ভালো। তারা এক ধরনের সুবিধা নিচ্ছেন। কিন্তু জনগণ তাদের এ সুযোগ বেশিদিন দেবে না। বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন ছাড়া কাউকে ক্ষমতা গ্রহণের বৈধতা দেবে না।
বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়ি নাসিমন ভবনস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে মহান মে দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দল এ সমাবেশের আয়োজন করে।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যারা নির্বাচন ঠেকাতে চায়, তাদের প্রতি দেশের মানুষের বার্তা স্পষ্ট। তাদের জনগণ ক্ষমা করবে না। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মাটিতে তাদের কোনো ইচ্ছাও পূরণ হবে না।
তিনি বলেন, দেশে এখন নির্বাচিত সরকার নেই। ফলে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা, পারিশ্রমিক ও চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না। মালিক ও প্রশাসনের একচেটিয়া অবস্থানে শ্রমিকেরা নানাভাবে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। তাই সবাইকে এগিয়ে এসে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিতে সহায়তা করতে হবে। ন্যায্য পাওনা আদায়ের লড়াইয়ে শ্রমিকদের পাশে আছে বিএনপি।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের রাখাইনের জন্য মানবিক করিডোর দেওয়ার বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, যদি দেশে একটি নির্বাচিত সরকার থাকতো, তাহলে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে সংসদে আলোচনা হতো। জনগণের মতামত বিবেচনা করা হতো। অথচ এখন এমন সিদ্ধান্ত কে নিচ্ছে, কাদের সঙ্গে বসে নিচ্ছে- তা জাতি জানে না।
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, জাতিসংঘের একজন প্রতিনিধি বলেছেন- বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতিতেই কেবল এই করিডোর সম্ভব, তাও নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনের শর্তে। তাহলে এখন যারা বাইরে বসে এসব দিচ্ছেন, তারা কীভাবে এত সাহস পাচ্ছেন?
বিএনপির এ নেতা বলেন, শ্রমিকদের আন্দোলন হতে হবে শান্তিপূর্ণ এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ। যেন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক না ছড়ায় এবং দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। কারণ, দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বিদেশি বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তিনি আরও বলেন, আমরা গত ১৬ বছর ধরে লড়াই করছি একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। গণতন্ত্রের বাহনই হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচন ছাড়া জনগণের ক্ষমতায়ন ও জবাবদিহিমূলক সরকার গঠন সম্ভব নয়। নির্বাচন ছাড়া জনগণের মালিকানা ফেরানো সম্ভব নয়।।
তিনি আরও বলেন, যারা নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন, তারা নিজেরাই অনির্বাচিত সরকারের সুবিধাভোগী। তারা এখন নানান শর্ত দিচ্ছেন, এই না হলে নির্বাচন হবে না, ওই না হলে নির্বাচন হবে না। এসব বলে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন। কারণ, তারা জানেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে গেলে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান মুখ থুবড়ে পড়বে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা.
চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহারের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র জনগণ র র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত স্থগিতের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের
মিয়ানমারের রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়া নিয়ে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত স্থগিত করে রাজনৈতিক আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানিয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের জনগণ আরাকানে মানবিক বিপর্যয় নিয়ে উদ্বিগ্ন। নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সম্ভাব্য সব উপায়ে আরাকানের সাধারণ জনগণের পাশে দাঁড়াতে বাংলাদেশের জনগণ আগ্রহী; কিন্তু আন্তদেশীয় করিডর একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। এতে বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্ব ও সামরিক নিরাপত্তার প্রশ্ন যুক্ত। বিশ্বের সর্বত্র যুদ্ধক্ষেত্রে ‘মানবিক করিডর’ শেষমেশ সামরিক তাৎপর্য নিয়ে হাজির হয়ে যায়। ফলে প্রস্তাবিত এই উদ্যোগে বাংলাদেশের স্বার্থ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে সেটি দীর্ঘ মেয়াদে উভয় দেশের জনগণের জন্য বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
আরও পড়ুন‘মানবিক করিডর’ নিয়ে উদ্বিগ্ন বিএনপি, সরকারের কাছে জানতে চাইবে২ ঘণ্টা আগেবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সরকার এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্বভাবসুলভ একপক্ষীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের জনগণের প্রতিনিধি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নূ৵নতম আলোচনা না করে একক এই সিদ্ধান্ত জনগণের জন্য নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মনে করে, গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ নিয়ে দেশে এবং দেশের বাইরে প্রচুর ষড়যন্ত্র চলছে। এখনো দেশে রাজনৈতিক ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।
আরও পড়ুনরাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের২৭ এপ্রিল ২০২৫