বগুড়ায় স্ত্রীর শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা, স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
Published: 2nd, May 2025 GMT
বগুড়ার শেরপুরে এক নারী তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে সিগারেটের ছ্যাঁকা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তিনি শেরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী নারীর নাম জান্নাতি বেগম (২৫)। তিনি উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের তালপুকুরিয়া গ্রামের আবু শাহিনের (৩২) স্ত্রী। পারিবারিক কলহের কারণে জান্নাতি শেরপুর পৌর শহরের উত্তরসাহাপাড়া মহল্লায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
শেরপুর থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) তোফাজ্জল হোসেন বলেন, নির্যাতনের বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছেন। সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জান্নাতি বেগমের অভিযোগ, গতকাল সন্ধ্যায় স্বামী আবু শাহিন শহরের ভাড়া বাসা থেকে ডেকে নিয়ে তাঁকে খানপুর ইউনিয়নের শুবলি-চাঁনপুর গ্রামের একটি নির্জন সড়কে নিয়ে যান। সেখানে আবু শাহিন ও তাঁর পরিবারের আরও দুই সদস্য মিলে জান্নাতির মুখ বেঁধে নির্যাতন করেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, স্বামী জ্বলন্ত সিগারেট দিয়ে তাঁর (জান্নাতি) ডান হাতে অন্তত ১৫ বার ছ্যাঁকা দেন এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর দুই বাহু ও বুকে আঘাত করেন। একপর্যায়ে জান্নাতি দৌড়ে চানপুর গ্রামের একটি দোকানের সামনে গিয়ে আশ্রয় নেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাঁর বাবা আজিজুল শেখ তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাজিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, জান্নাতি বেগমকে গতকাল রাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে আনা হয়। ভর্তি রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার পর আজ শুক্রবার তাঁকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
জান্নাতি বেগমের বাবা আজিজুল শেখ বলেন, পাঁচ মাস আগে জান্নাতি ও আবু শাহিনের বিয়ে হয়। তখন জামাতাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। পরে তাঁরা জানতে পারেন, শাহিন এর আগেও একবার বিয়ে করেছিলেন। এ কারণে তাঁর মেয়ে স্বামীর সঙ্গে না থেকে শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আবু শাহিন বলেন, জান্নাতির ওপর নির্যাতনের অভিযোগ মিথ্যা। এর মাধ্যমে তাঁদের পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি বর্তমানে শেরপুরের বাইরে রয়েছেন বলেও জানান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’