বগুড়ার শেরপুরে এক নারী তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে সিগারেটের ছ্যাঁকা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তিনি শেরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগী নারীর নাম জান্নাতি বেগম (২৫)। তিনি উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের তালপুকুরিয়া গ্রামের আবু শাহিনের (৩২) স্ত্রী। পারিবারিক কলহের কারণে জান্নাতি শেরপুর পৌর শহরের উত্তরসাহাপাড়া মহল্লায় ভাড়া বাসায় থাকেন।

শেরপুর থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) তোফাজ্জল হোসেন বলেন, নির্যাতনের বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছেন। সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জান্নাতি বেগমের অভিযোগ, গতকাল সন্ধ্যায় স্বামী আবু শাহিন শহরের ভাড়া বাসা থেকে ডেকে নিয়ে তাঁকে খানপুর ইউনিয়নের শুবলি-চাঁনপুর গ্রামের একটি নির্জন সড়কে নিয়ে যান। সেখানে আবু শাহিন ও তাঁর পরিবারের আরও দুই সদস্য মিলে জান্নাতির মুখ বেঁধে নির্যাতন করেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, স্বামী জ্বলন্ত সিগারেট দিয়ে তাঁর (জান্নাতি) ডান হাতে অন্তত ১৫ বার ছ্যাঁকা দেন এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর দুই বাহু ও বুকে আঘাত করেন। একপর্যায়ে জান্নাতি দৌড়ে চানপুর গ্রামের একটি দোকানের সামনে গিয়ে আশ্রয় নেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাঁর বাবা আজিজুল শেখ তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাজিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, জান্নাতি বেগমকে গতকাল রাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে আনা হয়। ভর্তি রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার পর আজ শুক্রবার তাঁকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

জান্নাতি বেগমের বাবা আজিজুল শেখ বলেন, পাঁচ মাস আগে জান্নাতি ও আবু শাহিনের বিয়ে হয়। তখন জামাতাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। পরে তাঁরা জানতে পারেন, শাহিন এর আগেও একবার বিয়ে করেছিলেন। এ কারণে তাঁর মেয়ে স্বামীর সঙ্গে না থেকে শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আবু শাহিন বলেন, জান্নাতির ওপর নির্যাতনের অভিযোগ মিথ্যা। এর মাধ্যমে তাঁদের পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি বর্তমানে শেরপুরের বাইরে রয়েছেন বলেও জানান।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত নেতার অনুসারীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীরা। আজ সোমবার রাত ৯টার দিকে শহরের মজমপুর রেলগেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে এ বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

সেখানে বিক্ষোভকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভের পাশাপাশি প্রতিবাদ মিছিলও করেন। এ ছাড়া সদর উপজেলার মধুপুর-লক্ষীপুর এলাকাতেও সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।

বিক্ষোভকারী নেতা-কর্মীদের দাবি, সোহরাব উদ্দিন কুষ্টিয়া-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বদলে এখানে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সোহরাব উদ্দিনকে পুনরায় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।

এর আগে সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার।

এ বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘শুনেছি আমার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমি শহরের বাইরে আছি।’ এর বেশি কথা বলেননি তিনি।

জানতে চাইলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এ নির্দেশনা যদি কেউ না মানেন, তাহলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হাসেন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণ করেছি।’

কুষ্টিয়ার অন্য তিনটি সংসদীয় আসনে বিএনপির প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহম্মেদ বাচ্চু মোল্লা, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভোড়ামারা) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ