নতুন অভিনয়শিল্পীরা ভুল করলে কী করতেন সত্যজিৎ?
Published: 2nd, May 2025 GMT
আজ সত্যজিৎ রায়ের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী। নির্মাতা ও লেখক হিসেবে সারা দুনিয়াতেই সমীহ জাগানিয়া এক নাম তিনি। তাঁর নির্মিত সিনেমার মধ্যে অন্যতম ‘চারুলতা’। সত্যজিৎ নিজেও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে ‘চারুলতা’কে তাঁর অন্যতম প্রিয় সিনেমা হিসেবে অবহিত করেছেন। সত্যজিতের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কলকাতার দৈনিক ‘এই সময়’-এ কলাম লিখেছেন ‘চারুলতা’ অভিনেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায়। তাঁর লেখায় উঠে এসেছে অস্কারজয়ী এ বাঙালি নির্মাতা সম্পর্কে অনেক তথ্য।
আরও পড়ুনছবিতে আরেকবার সত্যজিৎ রায় ২৩ এপ্রিল ২০২১নিজের লেখায় মাধবী জানিয়েছেন, ‘চারুলতা’ সিনেমায় তাঁর যুক্ত হওয়ার গল্প। তাঁর ভাষ্যে, ‘একদিন এক অনুষ্ঠানে দেখা। একগাল হেসে জিজ্ঞেস করলেন, “আবার কবে তোমার সঙ্গে কাজ করব?” এ কথা শুনে তো আমি অবাক! বলে কী। এ তো আমার বলার কথা। আমি খানিকক্ষণ চুপ করে গিয়েছিলাম। কিছুদিন পর আমার কাছে ফোন এল একদিন। বললেন, “তুমি একটু রবি ঠাকুরের “নষ্টনীড়”টা পারলে পড়ো।” আমি বললাম, ও মা, সে তো আমার পড়া। বললেন, “না আবার পড়ো।” সঙ্গে সঙ্গে বই পাঠিয়ে দিলেন।’
এর কিছুদিন পরই ডাকে আসে মাধবীর। তিনি হাজির হন সত্যজিতের বাড়িতে। নির্মাতা চিত্রনাট্য শোনালেন। যে দৃশ্যে মাধবী অভিনয় করবেন, সে দৃশ্য পুরোপুরি লেখা ছিল না। তখন সত্যজিৎ বলেন, ‘ওটা পুরোপুরি লেখা নেই। কিন্তু, আমি শুরু করে দিয়েছি। লিখছি।’ সেই স্মৃতি মনে করে নিজের কলামে মাধবী লিখেছেন, ‘তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুবিধা হলো, সবটাই ছবির মতো থাকত। পুরো চিত্রনাট্য দিয়ে দিতেন, তাও আবার নিজের হাতে লিখে। এখন যেমন ফটোকপির ব্যবহার করা হয়, সেটা ছিল না। ফলে নিজে হাতে লিখে সবটা দিয়ে দিতেন। তখন অবশ্য সব পরিচালকই তা–ই করতেন। নিজের হাতে লিখে দিতেন চিত্রনাট্য।’
সত্যজিতের সিনেমায় মাধবী মুখোপাধ্যায়। আইএমডিবি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় ব্যবসায়ীকে রাতে ফেলে গেছে অপহরণকারীরা
কুষ্টিয়ার সদর উপজেলা থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী মো. জাহা বক্সকে বাড়ির সামনে ফেলে গেছেন অপহারণকারীরা। সোমবার (১৬ জুন) দিবাগত রাত ১২টার দিকে মোটরসাইকেলে দুইজন ব্যক্তি জাহা বক্সকে চোখ ও মুখ বেঁধে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায় বলে পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। তাকে মারধর করা হয়েছে। অসুস্থ থাকায় জাহা বক্সের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
পরিবারের সদস্যরা জানান, জাহা বক্স জীবিত ফিরে এসেছেন, এতেই তারা সন্তুষ্ট। কারো বিরুদ্ধে তাদের কোনো অভিযোগ নেই। জাহা বক্স উপজেলার আব্দালপুর ইউনিয়নের পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামের মৃত কুদ্দুস আলীর ছেলে। তিনি বাড়ির পাশে প্রান্ত স্টোর নামে একটি পাইকারি মুদি দোকান চালাতেন। গত রবিবার (১৫ জুন) দিবাগত রাত ১টার দিকে নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ টাকাসহ জাহা বক্সকে অপহরণ করার অভিযোগ ওঠে। অপহরণকারীরা চিঠিতে লিখে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পাঁচ দিনের মধ্যে নির্দিষ্ট ঠিকানায় টাকা না পৌঁছালে লাশ গুম করার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলী হায়দার স্বপনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকাল ৮টায় জাহা বক্সের ছেলে প্রান্ত বলেন, ‘‘বাবা ফিরে এসেছেন। রাত ১২টার দিকে বাড়ির বারান্দায় কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পাই। বাইরে বেরিয়ে দেখি, অচেতন অবস্থায় বাবা পড়ে আছেন। তার মুখ ও চোখ বাঁধা ছিল। পরে জানতে পারি, দুইজন ব্যক্তি মোটরসাইকেল করে বাড়ির সামনে তাকে নামিয়ে দিয়ে গেছেন। বাবাকে মারধর করা হয়েছে। মাথায় একটু দাগও আছে। তিনি কারো সঙ্গে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।’’
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, ইউপি চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ
র্যাব পরিচয়ে অপহরণ: চক্রের মূল হোতা গ্রেপ্তার
প্রান্ত আরো বলেন, ‘‘অপহরণের রাতে যে ব্যক্তি স্যালাইন নেয়ার জন্য বাবাকে বাড়ি থেকে ডেকে দোকানে নিয়ে যান, তাকে বাবা পরিচিত কেউ মনে করেন। বাইরে বেরিয়ে দেখেন তিনি অপরিচিত। প্রথমে একজন থাকলেও পরে আরো একজনকে দেখতে পান। দোকান খোলার সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে বাবাকে মুখ, চোখ ও হাত বেঁধে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যান। এরপরের আর কিছু বাবা বলতে পারেননি।’’
প্রান্ত আরো বলেন, ‘‘দোকানে ক্যাশ বক্সের নিচে যে টাকা ছিল তাও নিয়ে গেছে। আব্বা বাড়ি আসার পর রাতেই বাড়িতে পুলিশ এসে কথা বলে গেছে। আমাদের আর কিছু দরকার নেই। কারোর বিরুদ্ধে অভিযোগও নেই। বাবা জীবিত ফিরে এসেছেন, এটাই যথেষ্ট।’’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, জাহা বক্স অসুস্থ। পুলিশের তত্ত্বাবধানে আছেন। সুস্থ হলে তাকে সার্বিক বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
আটক হওয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিষয়ে ওসি জানান, তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে। তাকে অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল