আজ সত্যজিৎ রায়ের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী। নির্মাতা ও লেখক হিসেবে সারা দুনিয়াতেই সমীহ জাগানিয়া এক নাম তিনি। তাঁর নির্মিত সিনেমার মধ্যে অন্যতম ‘চারুলতা’। সত্যজিৎ নিজেও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে ‘চারুলতা’কে তাঁর অন্যতম প্রিয় সিনেমা হিসেবে অবহিত করেছেন। সত্যজিতের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কলকাতার দৈনিক ‘এই সময়’-এ কলাম লিখেছেন ‘চারুলতা’ অভিনেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায়। তাঁর লেখায় উঠে এসেছে অস্কারজয়ী এ বাঙালি নির্মাতা সম্পর্কে অনেক তথ্য।

আরও পড়ুনছবিতে আরেকবার সত্যজিৎ রায় ২৩ এপ্রিল ২০২১

নিজের লেখায় মাধবী জানিয়েছেন, ‘চারুলতা’ সিনেমায় তাঁর যুক্ত হওয়ার গল্প। তাঁর ভাষ্যে, ‘একদিন এক অনুষ্ঠানে দেখা। একগাল হেসে জিজ্ঞেস করলেন, “আবার কবে তোমার সঙ্গে কাজ করব?” এ কথা শুনে তো আমি অবাক! বলে কী। এ তো আমার বলার কথা। আমি খানিকক্ষণ চুপ করে গিয়েছিলাম। কিছুদিন পর আমার কাছে ফোন এল একদিন। বললেন, “তুমি একটু রবি ঠাকুরের “নষ্টনীড়”টা পারলে পড়ো।” আমি বললাম, ও মা, সে তো আমার পড়া। বললেন, “না আবার পড়ো।” সঙ্গে সঙ্গে বই পাঠিয়ে দিলেন।’

এর কিছুদিন পরই ডাকে আসে মাধবীর। তিনি হাজির হন সত্যজিতের বাড়িতে। নির্মাতা চিত্রনাট্য শোনালেন। যে দৃশ্যে মাধবী অভিনয় করবেন, সে দৃশ্য পুরোপুরি লেখা ছিল না। তখন সত্যজিৎ বলেন, ‘ওটা পুরোপুরি লেখা নেই। কিন্তু, আমি শুরু করে দিয়েছি। লিখছি।’ সেই স্মৃতি মনে করে নিজের কলামে মাধবী লিখেছেন, ‘তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুবিধা হলো, সবটাই ছবির মতো থাকত। পুরো চিত্রনাট্য দিয়ে দিতেন, তাও আবার নিজের হাতে লিখে। এখন যেমন ফটোকপির ব্যবহার করা হয়, সেটা ছিল না। ফলে নিজে হাতে লিখে সবটা দিয়ে দিতেন। তখন অবশ্য সব পরিচালকই তা–ই করতেন। নিজের হাতে লিখে দিতেন চিত্রনাট্য।’

সত্যজিতের সিনেমায় মাধবী মুখোপাধ্যায়। আইএমডিবি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ