শিশুর শরীরে বার্ড ফ্লু সন্দেহ, নমুনা সংগ্রহ
Published: 2nd, May 2025 GMT
যশোরে এক শিশুর শরীরে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ হয়েছে—এমন সন্দেহে আইইডিসিআরের একটি প্রতিনিধি দল যশোরে অবস্থান করছে। শুক্রবার (২ মে) তারা শিশুটির রক্ত ও অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করেছে। পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের নিয়ে স্থানীয় পোল্ট্রি খামার এবং আশপাশের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করেছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকেলে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল যশোরে পৌঁছায়। ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা.
তিনি বলেন, ‘‘সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের আট বছর বয়সী এক শিশু শ্বাসকষ্ট ও জ্বর নিয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। শিশুটির উপসর্গ দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আইইডিসিআরকে জানায়। এরই ধারাবাহিকতায় একটি প্রতিনিধি দল যশোরে আসে। তারা শিশুটির রক্ত ও অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করেছে। পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের নিয়ে স্থানীয় পোল্ট্রি খামার এবং আশপাশের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করেছে। সংগ্রহ করা নমুনা ঢাকায় আইইডিসিআরের পরীক্ষাগারে পরীক্ষার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’
ডা. নাজমুস সাদিক রাসেল আরো বলেন, ‘‘এটি এখনো সন্দেহের পর্যায়ে আছে। তাই শিশুটির পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না। যেহেতু এটি ছোঁয়াচে রোগ, নিশ্চিত না হয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না। এতে অযথা আতঙ্ক সৃষ্টি হতে পারে।’’
ঢাকা/রিটন/রাজীব
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে
চট্টগ্রামে এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব গত এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে, আর এর সরাসরি ফল ভোগ করছেন নগরবাসী। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, এবার ডেঙ্গুর চেয়েও চিকুনগুনিয়া ঘরে ঘরে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, যা এক নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। মশা নিধনে কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগের অভাবই এ রোগের দ্রুত বিস্তারের প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। চট্টগ্রামে এভাবে জনস্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, চট্টগ্রাম নগর এডিস মশাবাহিত রোগের জন্য এখন অতি ঝুঁকিপূর্ণ। গত বছর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগ একই ধরনের জরিপ চালিয়েছিল। এই দুই জরিপের তুলনামূলক চিত্র আমাদের সামনে এক ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরে—এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব দুটিই আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।
২০২৪ সালে চট্টগ্রামে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব (ব্রুটো ইনডেক্স) ছিল ৩৬ শতাংশ, যা এবার আইইডিসিআরের গবেষণায় পৌঁছেছে ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান যেখানে ২০ শতাংশ, সেখানে চট্টগ্রামের এ চিত্র রীতিমতো ভয়াবহ। বাসাবাড়িতেও লার্ভার উপস্থিতি বেড়েছে। গত বছর ৩৭ শতাংশ বাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেলেও এবার তা প্রায় ৪৮ শতাংশে পৌঁছেছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবার ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ার রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আবার অনেকের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটিই হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। চলতি বছরেই ৭৬৪ জনের চিকুনগুনিয়া ও ৭৯৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে এবং ডেঙ্গুতে আটজন প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ছয়জনই মারা গেছেন এই জুলাই মাসে।
সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আইইডিসিআরের সুপারিশগুলো সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম দাবি করছেন যে মশকনিধনে ক্রাশ কর্মসূচি চলছে এবং নতুন জরিপ অনুযায়ী হটস্পট ধরে কাজ করা হচ্ছে। তবে প্রশ্ন হলো এ উদ্যোগগুলো কি যথেষ্ট? লার্ভার ঘনত্ব যেখানে তিন-চার গুণ বেশি, সেখানে গতানুগতিক কর্মসূচির ওপর নির্ভর করলে চলবে না।
মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার কোনো বিকল্প নেই। এ কাজে সিটি করপোরেশনকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। বাসাবাড়িতে নানা জায়গায় জমে থাকা স্বচ্ছ পানিও এডিস মশার প্রজননের জন্য যথেষ্ট। ফলে নাগরিকদের সচেতনতা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম শহরকে মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে হলে স্থানীয় প্রশাসন, নগর কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে; নগরবাসীকে দ্রুত তৎপর হতে হবে।