রাজধানী ঢাকার বাতাস আজ অস্বাস্থ্যকর। বায়ুর মান সূচকে ঢাকার স্কোর ১৭৯। আর দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ শীর্ষ স্থানে রয়েছে ইরাকের বাগদাদ।
আজ শনিবার সকাল ৮টার পর সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান নির্ধারণ সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
একিউআই সূচক অনুযায়ী, দূষিত শহরের শীর্ষে থাকা বাগদাদের স্কোর ২০৪, যা খুবই অস্বাস্থ্যকর। তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারতের দিল্লির স্কোর ১৯৩। তৃতীয় নম্বরে রয়েছে ঢাকা। আর চতুর্থ স্থানে থাকা ভিয়েতনামের হ্যানয়ের বায়ুর স্কোর ১৫৫। পঞ্চম স্থানে রয়েছে সৌদি আরবের রিয়াদ (স্কোর ১৩৭)।
যখন দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে তখন বাতাসের গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে তা ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আর ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে বিবেচনা করা হয়। এ ছাড়া ৩০১ থেকে বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চাকসুতে এমফিল-পিএইচডি শিক্ষার্থীদের প্রার্থিতার সুযোগ নিয়ে সমালোচ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) সংশোধিত গঠনতন্ত্রের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে চবি থেকে স্নাতক-স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে এমফিল ও পিএইচডি কোর্সে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদেরও প্রার্থিতার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা-সমালোচনা করছেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।
শুক্রবার (১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৫৯তম সিন্ডিকেট সভায় নতুন এ গঠনতন্ত্রের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন:
‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’
জবির পরিত্যক্ত ডাস্টবিনগুলো সংস্কার করল ছাত্রদল
শিক্ষার্থীদের ওই অংশটি বলছেন, নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে চাকসুতে শুধু স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরাই ভোটার ও প্রার্থী হবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবিকে উপেক্ষা করে এমফিল-পিএইচডি কোর্সধারীদেরও চাকসুতে ভোটার ও প্রার্থিতার সুযোগ দিচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চবি থেকে স্নাতক-স্নাতকোত্তর করে এমফিল-পিএইচডি প্রোগ্রামে অধ্যয়নকারীরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে বিবেচিত। তাই এখানে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেনি এবং শিক্ষার্থীদের আপত্তি তোলারও যৌক্তিকতা নেই।
নতুন সংশোধিত গঠনতন্ত্রে এমফিল ও পিএইচডি অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের চাকসুর সাধারণ সদস্য তথা ভোটার হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। তবে ভোটার ও প্রার্থী হতে হলে সেই শিক্ষার্থীকে চবির পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী হতে হবে; যিনি ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে স্নাতক, মাস্টার্স, এমফিল বা পিএইচডি প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত এবং কোনো আবাসিক হলে অবস্থানরত বা সংযুক্ত।
অভিযোগের বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, “বর্তমান প্রশাসন এমফিল ও পিএইচডি গবেষকদের দাঁড়ানোর সুযোগ রেখে এবং বয়সসীমা ৩০ এর মধ্যে বেঁধে দিয়ে আসলে কি কোনো বিশেষ সংগঠনের জন্য রাস্তা পরিষ্কার করে দিচ্ছে?”
তিনি বলেন, “এমন নিয়মে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব কি না, তা নিয়ে গভীর সন্দেহ পোষণ করছি। আমরা চাই, ছাত্রসমাজের প্রকৃত প্রতিনিধিরাই যেন নির্বাচনে অংশ নিতে পারে- প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক নীতিতে নয়, বরং ন্যায্যতার ভিত্তিতে। চাকসু হোক ছাত্রসমাজের, কোনো গোষ্ঠীর নয়।”
শাখা ছাত্রদল নেতা আইয়ুবুর রহমান তৌফিক ফেসবুকে লেখেন, “চবি ছাত্রদলসহ অন্যান্য সব ছাত্র সংগঠন চাকসু নির্বাচনে প্রার্থিতার ক্ষেত্রে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের পক্ষে। ইসলামী ছাত্রশিবির ছিল এর বিপক্ষে।”
তিনি বলেন, “চবি প্রশাসন সকল ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের মতামত উপেক্ষা করে পিএইচডি ও এমফিলের শিক্ষার্থীদের প্রার্থিতার সুযোগ দিয়েছে। পিএইচডি-এমফিল অন্তর্ভূক্ত কোন উদ্দেশ্যে?”
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় সংগঠক রশিদ দিনার ফেসবুকে বলেন, “সব ছাত্র সংগঠনের উপস্থিতিতেই পাস হয় নিয়মিত অনার্স ও মাস্টার্সে অধ্যায়নরতরাই চাকসুতে শুধু ভোটার ও প্রার্থী হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু সিন্ডিকেটে কাদের ফেভার দেওয়ার জন্য এমফিল ও পিএইচডি ও অন্তর্ভুক্ত করল?”
শাখা ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি আব্দুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে শুধু স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরাই চাকসুতে ভোটার ও প্রার্থী হতে পারবে।”
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী রাইজিংবিডিকে বলেন, “চাকসুর নীতিমালা নিয়ে যে সভা হয়েছিল, সেখানে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে সবার মতোই বলেছি, চাকসুতে শুধু স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরাই ভোটার ও প্রার্থী হতে পারবে। এমফিল ও পিএইচডি কোর্সধারীদের চাকসুতে প্রার্থিতা নিয়ে শিবিরকে জড়িয়ে যা বলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। চাকসু নির্বাচনের কমিটিতে যারা আছেন তারা সবাই বিএনপিপন্থি। তাহলে তারা কীভাবে শিবিরের পক্ষে কাজ করবেন?”
তিনি বলেন, “সেদিন সভায় প্রশাসনের যারা ছিলেন, তাদের কাছে আমরা প্রশ্ন করেছিলাম, ‘আপনারা এমফিল-পিএইচডি কোর্সধারীদের চাকসুতে অংশগ্রহণের সুযোগ দিচ্ছেন কেনো?’ তখন উত্তরে বলেছিলেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী নিয়মিত শিক্ষার্থী।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় আইন এবং ৭৩’র অ্যাক্ট অনুযায়ী, এমফিল-পিএইচডি প্রোগ্রামে অধ্যয়নকারীরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে বিবেচিত। তবে তাদের এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই স্নাতক-স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে হবে। এ সুযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক বা অন্য কেউ যাতে চাকসুতে না আসতে পারে, সেজন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমরা শুধু নিয়মিত শিক্ষার্থীদের চাকসুতে ভোটার ও প্রার্থিতার সুযোগ দিচ্ছি। অনিয়মিত কোনো শিক্ষার্থীকে এখানে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এমফিল-পিএইচডি কোর্সধারীরা চাকসুতে অংশ নিতে পারবে, এটি শুধু আমাদের এখানেই নয়, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও রয়েছে। সুতরাং, এতে শিক্ষার্থীদের আপত্তি থাকার যৌক্তিকতা নেই।”
তফসিল ঘোষণার বিষয়ে চাকসু নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, “আগামী রবিবার (৩ আগস্ট) চাকসু গঠনতন্ত্র হাতে পাব। তারপর সভা ডেকে যত দ্রুত সম্ভব তফসিল ঘোষণা করা হবে।”
সংশোধিত গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে, সান্ধ্যকালীন কোর্স, পেশাদার বা এক্সিকিউটিভ মাস্টার্স, ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট ও ভাষা কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ভোটার বা প্রার্থী হওয়ার যোগ্য হবেন না। একইসঙ্গে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ও সংযুক্ত কলেজ-ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
নতুন সংশোধনীতে নির্বাচনে অংশ নেওয়া কিংবা সদস্যপদ লাভে আগ্রহীদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা করা হয়েছে ৩০ বছর। এতে চাকসুর কার্যনির্বাহী কমিটিতে মোট ২৮টি পদ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩টি কার্যকরী এবং পাঁচটি নির্বাহী সদস্য পদ রয়েছে।
পুরোনো গঠনতন্ত্রে মোট পদসংখ্যা ছিল ১৮টি। তখন নির্বাহী সদস্য ছিল ১০ জন। নতুন কাঠামোতে নির্বাহী সদস্য সংখ্যা অর্ধেকে কমিয়ে আনা হয়েছে।
গঠনতন্ত্রে সময়োপযোগী বেশকিছু নতুন পদ যোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে- গবেষণা, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, দপ্তর ও ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক ও সহকারী সম্পাদক পদগুলো রয়েছে। তবে দপ্তর সম্পাদক পদটি পুরুষ এবং ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক পদটি নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।
একই সঙ্গে ‘সমাজসেবা সম্পাদক’ও ‘উপ-সমাজসেবা সম্পাদক’ দুইটি পুরাতন পদ রূপান্তর করে করা হয়েছে— সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এবং সহ-সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী