‘সন্ত্রাসী’ ছোট সাজ্জাদের অন্যতম সহযোগী গ্রেপ্তার
Published: 3rd, May 2025 GMT
চট্টগ্রামে জোড়া খুনের মামলায় ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের আরেক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম মেহেদি হাসান। গতকাল শুক্রবার রাতে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নলের চর ভূমিহীন বাজার এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মেহেদি হাসান জোড়া খুনের ঘটনায় নেতৃত্বে ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শনিবার ভোরে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার পশ্চিম শহীদ নগরে মেহেদি হাসানের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও দুটি গুলি উদ্ধার করা হয়। ওসি বলেন, মামলায় ১ নম্বর আসামি সাজ্জাদ, ২ নম্বর আসামি তাঁর স্ত্রী তামান্না ও ৩ নম্বরে ছিলেন মেহেদি হাসান। তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মেহেদি হাসানের বিরুদ্ধে আগেই ১৪টি নিয়মিত মামলা ছিল। এর মধ্যে ৪টি হত্যা মামলা। বাকি মামলাগুলো মাদকসহ বিভিন্ন ঘটনায় হয়েছে। মেহেদি হাসান ছোট সাজ্জাদের ডানহাত বা অন্যতম সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তাঁর তথ্যের ভিত্তিতে উদ্ধার করা অস্ত্র-গুলি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছিল বলে পুলিশের ধারণা।
গত ৩০ মার্চ রাতে রুপালি রঙের একটি প্রাইভেট কার কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে বাকলিয়া অ্যাকসেস রোডের দিকে আসছিল। গাড়িটি শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর পেছন থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেল সেটিকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। প্রাইভেট কারের ভেতর থেকেও মোটরসাইকেল আরোহীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। এতে গাড়িতে থাকা দুজনের মৃত্যু হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন বখতিয়ার হোসেন (৩০) ও মো.
এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবারের করা মামলায় বলা হয়েছে, দুই ‘সন্ত্রাসী’ ছোট সাজ্জাদ ও সরোয়ার হোসেনের বিরোধের জের ধরে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ায় জন্য সরোয়ারকে দায়ী করে এই হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনার পর ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ, তাঁর স্ত্রী তামান্না শারমিনকে হুকুমের আসামিসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে ১ এপ্রিল বাকলিয়া থানায় মামলা করেন নিহত বখতিয়ারের মা ফিরোজা বেগম। মামলার বাকি পাঁচ আসামি হলেন মোবারক হোসেন, মো. খোরশেদ, মো. রায়হান ও মো. বোরহান। তাঁরা সবাই সাজ্জাদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর গত বৃহস্পতিবার নগরের চান্দগাঁও খাজা রোড ও ফটিকছড়ির কাঞ্চন নগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেলাল ও মানিক নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এ ছাড়া ৬ এপ্রিল গভীর রাতে নগরের সদরঘাট এলাকা থেকে মোহাম্মদ সজীব (২৯) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
এবার ভারতীয় জাহাজ নিষিদ্ধ করল পাকিস্তান
পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজসমূহ ভারতীয় বন্দর ব্যবহার নিষেধাজ্ঞার পর এবার পালটা পদক্ষেপ নিল পাকিস্তান। দেশটি জানিয়েছে, ভারতীয় জাহাজসমূহ পাকিস্তানি বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না।
শনিবার রাতে পাকিস্তান পাল্টা এই পদক্ষের কথা ঘোষণা দিয়েছে। সাম্প্রতিক কাশ্মীর হামলার পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এটি একটি প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ। খবর দ্য ডনের।
পাকিস্তান সরকারের সমুদ্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বন্দর ও জাহাজ চলাচল বিভাগের এক বিবৃতিতে বলেছে, “পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে সমুদ্র বিষয়ক সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পাকিস্তান তার সমুদ্রের স্বাধীনতা বজায় রাখার জন্য, অর্থনৈতিক এবং জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করতে ভারতের পতাকাধারী কোনো জাহাজকে পাকিস্তানের বন্দরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। পাকিস্তানের পতাকাধারী কোনো জাহাজ ভারতের বন্দরে ঢুকবে না। এর ব্যতিক্রম হলে তা আলাদা করে যাচাই করা হবে এবং তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
আরো পড়ুন:
এবার পাকিস্তান রেঞ্জার্স সদস্যকে আটক করল ভারত
দুই দেশের নাগরিকদের ফেরত দিল বিজিবি-বিএসএফ
এর আগে শনিবার ভারত সরকার জানিয়েছিল, সরাসরি হোক বা ঘুরপথে, পাকিস্তানি পণ্য কোনোভাবেই এ দেশে প্রবেশ করতে পারবে না। পেহেলগাম কাণ্ডের পর উদ্ভূত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পাকিস্তান থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ আমদানি নিষিদ্ধ করেছে নয়াদিল্লি।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিবৃতি জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়। এতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশনা জারি না-হওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। এর কোনো ব্যতিক্রমের জন্য অবশ্যই ভারত সরকারের আগাম অনুমতি নিতে হবে।
কাশ্মীরে হামলার ঘটনার পরেই ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল পাকিস্তান। তারা জানিয়েছিল, ভারত থেকে কোনো পণ্য আমদানি করা হবে না বা ভারতে কোনো পণ্য রপ্তানি করা হবে না।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একমাত্র বাণিজ্যপথ ওয়াঘা-আটারি ক্রসিং পহেলগাঁও হামলার পর বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরও পাকিস্তান থেকে পরোক্ষ আমদানি চালু ছিল।
ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র পহেলগামে গত ২২ এপ্রিলের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পটভূমিতে দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক। এই ঘটনার জন্য কোনো প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেছে ভারত।
এ ঘটনায় প্রতিবেশি দেশ দুটি ইতিমধ্যে একে-অপরের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পাল্টা-পাল্টি পদক্ষেপ নিয়েছে।
এদিকে, উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী শনিবার তার আবদালি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের একটি পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা, এই পদক্ষেপকে ‘প্রকাশ্য উস্কানি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ