নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক যুবদল নেতা ও তাঁর বন্ধুদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীরা এ জন্য জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদকে দায়ী করেছেন। শুক্র ও শনিবার রাতে দুই দফায় এ হামলা হয় উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের নাগেরবাগ এলাকায়।

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ৫০-৬০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য অলি মাতবরের বাড়িতে হামলা করে। সেখানে ভাঙচুর চালানোর পর তারা বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে হামলাকারীরা অলি মাতবরের বন্ধু শাওন ও শাহজালালের বাড়িতেও হামলা করে।

অলির ভাই খলিল মাতবরের ভাষ্য, পূর্ববিরোধের জের ধরে তাদের বাড়িতে হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। এর নেতৃত্বে ছিলেন ছাত্রদল নেতা মাসুদ। তারা বাড়ি ভাঙচুর করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। যাওয়ার সময় তাদের নিকটাত্মীয় সুমনকে একা পেয়ে কুপিয়েছে। অলির দুই বন্ধুর বাড়িতেও লুটপাট চালিয়েছে।

জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ শনিবার বিকেলে এ হামলার দায় অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ হামলা করা হয়েছে।
 
এলাকাবাসী জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে হামলার পর শনিবার রাত ৮টার দিকে নাগেরবাগ এলাকায় আরেক দফায় হামলা চালানো হয়। এতে মাসুদের নেতৃত্বে রনি, মামুন, মফিজ, রবিউল, বিদ্যুৎ, শামীম, আকাশ, সবুজ, শাকিব, শুভসহ ৪০-৫০ জন অংশ নেয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

ভূলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, নাগেরবাগ এলাকায় সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। শুক্রবার রাতের বিষয়ে খলিল মাতবর সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তদন্তের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ য বদল ছ ত রদল ম তবর

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভোট দেব না’—এই ‘অস্ত্র’ ব্যবহার করতে পারেন নারীরা: অধ্যাপক আলী রীয়াজ

সংসদে নারীদের জন্য আসন বাড়ানো ও সেসব আসনে সরাসরি নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে বলা হলেও তারা তা শোনেনি বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, এমনকি দলগুলো থেকে অন্তত ৩৩ শতাংশ নারীকে মনোনয়ন দেওয়ার প্রস্তাব করা হলেও তারা তাতে রাজি হয়নি। কমিশন দলগুলোর ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না বা দলগুলোকে নির্দেশ দিতে পারে না।

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশের পরও সংসদে নারীর আসন সংখ্যা না বাড়ানো ও সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি না মেনে প্রচলিত ব্যবস্থা বহাল রাখা নিয়ে নারী অধিকারকর্মীদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার জবাবে আলী রীয়াজ শনিবার প্রথম আলোকে এ কথাগুলো বলেন।

ঐকমত্য কমিশনে নারী প্রতিনিধি না থাকা ও নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ১১টি কমিশন গঠন করেছিল। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কারবিষয়কসহ ৬টি কমিশন আগেই প্রতিবেদন জমা দেয়। ঐকমত্য কমিশন গঠনের তাগিদ থাকায় ওই ছয় কমিশনের প্রধানদের নিয়ে ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। ঘটনাক্রমে এসব কমিশনের প্রধানদের মধ্যে নারী ও সংখ্যালঘু প্রতিনিধি না থাকায় ঐকমত্য কমিশনে নারী ও সংখ্যালঘু প্রতিনিধি ছিলেন না। এটা ইচ্ছাকৃত নয়।

ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, যে ছয়টি কমিশন প্রতিবেদন জমা দিয়ে দিয়েছিল, তাদের সুপারিশগুলো ঐকমত্য কমিশনের টার্মস অব রেফারেন্সের (কাজের পরিধি বা টর) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পরে জমা হওয়ায় তাদের সুপারিশ টরে অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি।

সংরক্ষিত নারী আসন বাড়ানো ও সেসব আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি উপেক্ষিত থাকা প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ বলেন, ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন ১০০ আসন বাড়িয়ে সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো এটাকে নতুনভাবে নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণ করে নির্বাচন পেছানোর অজুহাত বলা শুরু করে। আমরা এমনও বলেছি, সংরক্ষিত আসন বাতিল করে দেন। দল থেকে ৩৩ শতাংশ নারীকে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়ন দেন। তাতেও দলগুলো রাজি হয়নি।’

কমিশন নিজেদের ‘এলিট গ্রুপ’ (অভিজাত গোষ্ঠী) হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল জানিয়ে সমালোচনা করেছেন নারী অধিকারকর্মীরা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার যতটুকু মনে পড়ে, এলিট সেটেলমেন্ট (অভিজাত বন্দোবস্ত) বলেছিলাম। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে, সেটা বোঝাতে বলেছিলাম। নিজেদের এলিট দাবি করি না আমরা।’

শেষ পর্যন্ত নারী আসন নিয়ে নারীদের দাবি পূরণ হলো না, এটাই বাস্তব, এই দাবি পূরণে আর কোনো সুযোগ আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, এখন নাগরিক সমাজকে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। ঐক্যমত্য কমিশনের তৈরি করা জাতীয় সনদে নারী আসন নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত না থাকলেও এই দাবি পূরণে নাগরিক সমাজকে সক্রিয় হতে হবে।

নারীরা ‘ভোট দেবেন না’ বলেও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, সেই প্রসঙ্গে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘ভোট দেব না’ এই কথাটা নারীদের রাজনৈতিক দলগুলোকে বলতে হবে। তাদের চাপ দিতে হবে। রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নারীরা এই ‘অস্ত্র’ ব্যবহার করতে পারেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫ আগস্ট ঘিরে বিশেষ অভিযান, ঢাকায় আওয়ামী লীগের ২১ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
  • ‘ভোট দেব না’—এই ‘অস্ত্র’ ব্যবহার করতে পারেন নারীরা: অধ্যাপক আলী রীয়াজ