তিন সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতি অনেকে সন্দেহের চোখে দেখছেন: কামাল আহমেদ
Published: 4th, May 2025 GMT
সাংবাদিক সুরক্ষা অধ্যাদেশ এবং একটি স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠনের ওপর জোর দিয়েছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ।
তিনি বলেন, “কোনো আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ ছাড়াই তিন সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতিকে অনেকে সন্দেহের চোখে দেখছেন। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, সরকারকে বিব্রত করার উদ্দেশ্য এটি কোনো সমন্বিত পদক্ষেপ ছিল কি না। তবে সাংবাদিক সুরক্ষা অধ্যাদেশ এবং একটি স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠন করা গেলে এ ধরনের ঘটনার তদন্ত ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় তা কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে।”
রবিবার (৪ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে ‘ব্রেভ নিউ বাংলাদেশ: রিফর্ম রোডম্যাপ ফর প্রেস ফ্রিডম’ শীর্ষক এক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
সাংবাদিকদের প্রশ্ন করা যাবে না, আমি এটা চাই না: তথ্য উপদেষ্টা
টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন
আত্মহত্যা নয় খুন হয়েছেন সাগর-রুনি, হত্যায় অংশ নেন ২ জন
সাংবাদিকদের ওপর বেশির ভাগ হামলার পেছনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকি এবং মব ভায়োলেন্স কাজ করছে বলেও মন্তব্য করেছেন কামাল আহমেদ।
তিনি বলেন, “গণমাধ্যমের সেলফ সেন্সরশিপ ও সাংবাদিকদের ওপর বেশির ভাগ হামলার পেছনে এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকি এবং কথিত মব ভায়োলেন্স কাজ করছে। সরকারের এগুলো কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণের কথা থাকলেও তা দেখা যাচ্ছে না।”
তিনি বলেন, “স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য বিদ্যমান বৈরি পরিবেশের প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। সাংবাদিকদের ওপর মৌখিক ও শারীরিক হামলা এখনো হচ্ছে। অনেকে মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত হচ্ছেন। কেউ কেউ কারাবন্দি হয়েছেন, তবে তা তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য। তারা একই সঙ্গে সাংবাদিক, আবার রাজনৈতিক কর্মী।”
“সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ন্যায্য পারিশ্রমিক ও নীতিগত সহায়তা জরুরি। সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যম উভয়ে আর্থিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, যা তাদের আপস করতে বাধ্য করছে,” বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গণমাধ্যমের বিনিয়োগ বৈধ উৎস থেকে এসেছে কি না, তা জানানোর কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না উল্লেখ করে কামাল আহমেদ বলেন, “ফলে অনেক ক্ষেত্রে কালো টাকা ব্যবহৃত হয়েছে।পরিণতিতে সংবাদমাধ্যম হয়ে উঠেছে একেকটি গোষ্ঠীর হাতিয়ার, যার মাধ্যমে তারা তাদের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যকে প্রশ্নের বাইরে রাখতে বা সরকারের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছে।”
তিনি বলেন, “রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজের দপ্তর থেকে পাওয়া আর্থিক বিবরণীতে দেখা গেছে, দেশে দেড় ডজনের বেশি সংবাদমাধ্যম লাভজনক। এটা প্রমাণ করে, গণমাধ্যমকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করা মোটেও অযৌক্তিক নয় এবং তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব।”
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্য রাখেন টাইমস মিডিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ, বিজেসির চেয়ারম্যান রেজয়ানুল হক রাজা প্রমুখ।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে যৌথভাবে সেমিনারটি আয়োজন করে ইউনেসকো ঢাকা অফিস, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সুইডেন দূতাবাস।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ম ল আহম দ র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো চুক্তি দেশবাসী মেনে নেবে না: বাম গণতান্ত্রিক জোট
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘গোপন বাণিজ্যচুক্তির’ খবরে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এ জোটের নেতারা বলেছেন, দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো চুক্তি দেশবাসী মেনে নেবে না। একই সঙ্গে জনগণের সামনে চুক্তির খসড়া প্রকাশ এবং তাদের সম্মতি ছাড়া কোনো চুক্তি না করার আহ্বান জানানো হয়।
রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এর আগে সকাল ১০টায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জোটের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বাম জোটের নেতারা বলেছেন, বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, তথাকথিত ‘ছাড়’-এর বিপরীতে বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশি দামে গম ও এলএনজি কিনতে হবে, ২৫টি বোয়িং বিমান কিনতে হবে। ১১০টি মার্কিন পণ্যকে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিতে হচ্ছে এবং বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রের খনিজসম্পদের ওপর মার্কিন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পথ তৈরি হচ্ছে, যা নিয়ে জনমনে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
নেতারা আরও বলেন, অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামরিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সীমিত করে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা ও ভূরাজনৈতিক সমঝোতা জোরদার করা হচ্ছে বলেও শোনা যাচ্ছে। এতে করে দেশের সার্বভৌমত্ব, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং কূটনৈতিক ভারসাম্য মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়বে। এসব বিষয় পরিষ্কার করার দায়িত্ব সরকারের। অবিলম্বে চুক্তি প্রকাশ করে জনগণের সংশয় সরকারকেই দূর করতে হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স)। আলোচনায় অংশ নেন সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবদুস সাত্তার, বাসদের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী, সাধারণ সম্পাদক বাবুল মোল্ল্যা, সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাসদের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিখিল দাস, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন নান্নু।
এ ছাড়া ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থান দিবসে বিকেল সাড়ে চারটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাম গণতান্ত্রিক জোট সমাবেশ করবে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।