উর্দু ভাষায় পাকিস্তানে মুক্তি পাচ্ছে বাংলাদেশের ‘জংলি’
Published: 4th, May 2025 GMT
দেশের সিনেমা পাকিস্তানে মুক্তির ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও শাকিব খান ও শরিফুল রাজের সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশি কোনো সিনেমা উর্দু ভাষায় ডাবিং করে মুক্তি দিতে যাচ্ছে। এটি অন্য কোনো সিনেমা নয়, বরং সিয়াম আহমেদ অভিনীত ও এম রাহিম পরিচালিত ‘জংলি’।
গত ঈদুল ফিতরে বাংলাদেশে মুক্তি পাওয়া ‘জংলি’ দারুণ জনপ্রিয়তা ও প্রশংসা কুড়ায়। এরপর সিনেমাটি আমেরিকা ও কানাডার ৪০টি প্রেক্ষাগৃহে একযোগে মুক্তি পায় এবং সেখানেও দর্শকদের ব্যাপক সাড়া পায় বলে জানিয়েছে পরিবেশক প্রতিষ্ঠান স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো। দেশে ও বিদেশে দর্শকপ্রিয়তার ধারাবাহিকতায় সিনেমাটি পাকিস্তানে মুক্তি পাচ্ছে।
পাকিস্তানে ‘জংলি’ পরিবেশনা করবে লাহোরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সিনে এন্টারটেইনমেন্ট। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আসিফ চৌধুরী বলেন, “শিগগির আমরা ‘জংলি’ সিনেমাকে উর্দুতে ডাবিং করে পাকিস্তানে মুক্তি দিচ্ছি। বাংলাদেশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে উর্দু ডাবিংয়ের কাজ চলছে। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো কোনো বাংলা সিনেমা উর্দুতে ডাবিং হয়ে পাকিস্তানে মুক্তি পাবে।”
আরো পড়ুন:
শাশুড়ি মায়ের হাতের রান্না যেন মধু: শবনম বুবলী
সিয়াম-বুবলীর ‘জংলি’: দর্শকরা কাঁদছেন কেন?
‘জংলি’ সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিয়াম আহমেদ। ‘পাখি’ চরিত্রে রয়েছে শিশুশিল্পী নৈঋতা। আরো রয়েছেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা বুবলী এবং এক সময়ের প্রিয় শিশুশিল্পী ও অভিনেত্রী দিঘী। সিনেমাটির সংগীত পরিচালনা করেছেন প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক প্রিন্স মাহমুদ।
‘জংলি’ সিনেমার গল্প লিখেছেন আজাদ খান। চিত্রনাট্য রচনা করেছেন মেহেদী হাসান মুন ও কলকাতার সুকৃতি সাহা। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে টাইগার মিডিয়া। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার জাহিদ হাসান অভি বলেন, “আমাদের সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। এখন ডাবিংয়ের কাজ চলছে। দর্শকদের ভালোবাসার এই সিনেমা শিগগির পাকিস্তানে মুক্তি পাবে।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
১০ বছরে বিকাশের আয় বেড়ে ৯ গুণ, মুনাফা ১৭ গুণ
মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা বা এমএফএস প্রতিষ্ঠান বিকাশের জন্য ২০২৪ সালটি ছিল রেকর্ডের বছর। এ বছর প্রতিষ্ঠানটির আয় প্রথমবারের মতো পাঁচ হাজার কোটি টাকার মাইলফলক ছাড়িয়েছে। সেই সঙ্গে প্রথমবারের মতো মুনাফা ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকার ঘর। সম্প্রতি ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশের গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদন থেকে বিকাশের রেকর্ড আয় ও মুনাফার এই তথ্য পাওয়া গেছে।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর শেষে বিকাশের আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৮ কোটি টাকায়। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বিকাশের আয় ৮৬৭ কোটি টাকা বা ২১ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি গত বছর শেষে প্রতিষ্ঠানটির প্রথমবারের মতো ৩১৬ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৯৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বিকাশের মুনাফা বেড়েছে ২১৭ কোটি টাকা বা ২১৯ শতাংশ।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিকাশ এত মুনাফা ও আয় করেনি। ২০১১ সালে যাত্রা শুরুর পর বিকাশের সর্বোচ্চ মুনাফা ছিল ২০২৩ সালে, ওই বছর প্রতিষ্ঠানটি ৯৯ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল। গত বছর একলাফে তা ৩০০ কোটি টাকার মাইলফলক ছাড়িয়ে যায়। বিকাশের এই মুনাফার ওপর ভর করে ব্র্যাক ব্যাংকও সমন্বিতভাবে ১ হাজার ৪৩২ কোটি টাকার রেকর্ড মুনাফা করেছে। কারণ, বিকাশের সিংহভাগ মালিকানা ব্র্যাক ব্যাংকের হাতে রয়েছে।
এদিকে বিকাশের গত ১০ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১০ বছরের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির আয় বা ব্যবসা বেড়ে হয়েছে ৯ গুণ। আর একই সময়ের ব্যবধানে মুনাফা বেড়ে ১৭ গুণ হয়েছে। ১০ বছর আগে ২০১৪ সালে বিকাশের আয় ছিল ৫৭৩ কোটি টাকা। আর ওই বছর প্রতিষ্ঠানটি মুনাফা করেছিল ১৯ কোটি টাকা। দুটোই এখন বেড়ে বিকাশকে বড় অঙ্কের লাভজনক এক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে।
তিন বছর ধরে বিকাশের মুনাফা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠানটি ১১৭ কোটি টাকা লোকসান করেছিল। এরপর ২০২২ সালে ১৮ কোটি এবং ২০২৩ সালে ৯৯ কোটি টাকা মুনাফা করে বিকাশ। তবে ২০১৪ সাল থেকে প্রতিবছরই প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা বা আয় বেড়েছে। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে মুনাফায় ছেদ পড়ে। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিকাশের মুনাফা ধারাবাহিকভাবে বেড়েছিল। ২০১৮ সালে এসে তা কমে যায়। এরপর ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিন বছর বিকাশ লোকসানে ছিল। গত বছর শেষে মুনাফায় বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটে।
জানতে চাইলে বিকাশের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা বা সিএফও মঈনুদ্দিন মোহাম্মদ রাহগীর প্রথম আলোকে বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় এমএফএস প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিকাশ সব সময় ব্যবসা টেকসই করতে দীর্ঘমেয়াদি পুঁজি বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যকে সামনে রেখেছে। ক্যাশলেস দেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে বিকাশ এক দশক ধরে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি, পরিষেবা অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও গ্রাহকসহ অংশীজনদের ডিজিটাল শিক্ষা বাড়াতে ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ করেছে। এই কৌশলগত উদ্যোগ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজস্ব প্রবৃদ্ধিতে স্থিতিশীলতা এনেছে। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতের টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথকে সুগম করেছে।
২০১১ সালে এমএফএস প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করা বিকাশের এখন গ্রাহক প্রায় ৮ কোটি। দেশজুড়ে প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার এজেন্ট ও সাড়ে ৫ লাখ মার্চেন্ট পয়েন্ট। আর্থিক লেনদেন ছাড়াও বিকাশে রয়েছে বিভিন্ন পরিষেবা বিল পরিশোধ, ন্যানো ঋণ ও ডিপোজিট সুবিধা। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানার সঙ্গে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানি ইন মোশন, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন বা আইএফসি, গেটস ফাউন্ডেশন, অ্যান্ট ইন্টারন্যাশনাল ও সফটব্যাংক।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটি গত বছর ১৮৯ কোটি টাকা সরকারকে কর দিয়েছে। আর ওই বছর ব্যাংক থেকে সুদ বাবদ প্রতিষ্ঠানটি আয় করেছে ১৯০ কোটি টাকা।