দেশের সিনেমা পাকিস্তানে মুক্তির ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও শাকিব খান ও শরিফুল রাজের সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশি কোনো সিনেমা উর্দু ভাষায় ডাবিং করে মুক্তি দিতে যাচ্ছে। এটি অন্য কোনো সিনেমা নয়, বরং সিয়াম আহমেদ অভিনীত ও এম রাহিম পরিচালিত ‘জংলি’।

গত ঈদুল ফিতরে বাংলাদেশে মুক্তি পাওয়া ‘জংলি’ দারুণ জনপ্রিয়তা ও প্রশংসা কুড়ায়। এরপর সিনেমাটি আমেরিকা ও কানাডার ৪০টি প্রেক্ষাগৃহে একযোগে মুক্তি পায় এবং সেখানেও দর্শকদের ব্যাপক সাড়া পায় বলে জানিয়েছে পরিবেশক প্রতিষ্ঠান স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো। দেশে ও বিদেশে দর্শকপ্রিয়তার ধারাবাহিকতায় সিনেমাটি পাকিস্তানে মুক্তি পাচ্ছে।

পাকিস্তানে ‘জংলি’ পরিবেশনা করবে লাহোরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সিনে এন্টারটেইনমেন্ট। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আসিফ চৌধুরী বলেন, “শিগগির আমরা ‘জংলি’ সিনেমাকে উর্দুতে ডাবিং করে পাকিস্তানে মুক্তি দিচ্ছি। বাংলাদেশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে উর্দু ডাবিংয়ের কাজ চলছে। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো কোনো বাংলা সিনেমা উর্দুতে ডাবিং হয়ে পাকিস্তানে মুক্তি পাবে।”

আরো পড়ুন:

শাশুড়ি মায়ের হাতের রান্না যেন মধু: শবনম বুবলী

সিয়াম-বুবলীর ‘জংলি’: দর্শকরা কাঁদছেন কেন?

‘জংলি’ সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিয়াম আহমেদ। ‘পাখি’ চরিত্রে রয়েছে শিশুশিল্পী নৈঋতা। আরো রয়েছেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা বুবলী এবং এক সময়ের প্রিয় শিশুশিল্পী ও অভিনেত্রী দিঘী। সিনেমাটির সংগীত পরিচালনা করেছেন প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক প্রিন্স মাহমুদ।

‘জংলি’ সিনেমার গল্প লিখেছেন আজাদ খান। চিত্রনাট্য রচনা করেছেন মেহেদী হাসান মুন ও কলকাতার সুকৃতি সাহা। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে টাইগার মিডিয়া। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার জাহিদ হাসান অভি বলেন, “আমাদের সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। এখন ডাবিংয়ের কাজ চলছে। দর্শকদের ভালোবাসার এই সিনেমা শিগগির পাকিস্তানে মুক্তি পাবে।”

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

বক্সিং রিংয়ে চ্যাম্পিয়ন জিনাতই, বোনকে উৎসাহ দিতে গ্যালারিতে আফঈদা

কদিন ধরে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের আড্ডায় ঘুরেফিরে একটাই নাম জিনাত ফেরদৌস। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এই বক্সার প্রথমবারের মতো পা রেখেছেন জাতীয় বক্সিং রিংয়ে। আর প্রথমবারই নিজের জাত চেনালেন।

আজ বিকেলে পল্টনের মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়ামে ৫২ কেজি ওজন শ্রেণির ফাইনালে নেমে প্রতিপক্ষ আফরা খন্দকারকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নের মুকুট মাথায় তুলেছেন জিনাত। প্রতিযোগিতার আগেই যাঁর আগমন ঘিরে কৌতূহল ছিল তুঙ্গে, সেই জিনাত রিংয়ে নামতেই যেন বুঝিয়ে দিলেন, অন্যদের চেয়ে কেন তিনি এগিয়ে।

তিন রাউন্ডের লড়াইয়ে শুরু থেকেই জিনাত ছিলেন আক্রমণাত্মক। পাঞ্চে ছিল গতি, রক্ষণে ছিল আত্মবিশ্বাস। অন্যদিকে আফরা খন্দকার চেষ্টা করেছেন রক্ষণ সামলে লড়াইয়ে টিকে থাকতে। খান কয়েক মোক্ষম ঘুষিতে কিছুটা নড়বড়ে হলেও শেষ পর্যন্ত দমে যাননি আফরা।

বরং জিনাতের ঘন ঘন আক্রমণের ফাঁক গলে এক-আধটু পাল্টা আঘাত করতেও পেরেছেন। তবে এই পর্যায়ের এক প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত হয়ে পড়ে তাঁর জন্য অনেকটাই চাপের। তবু আফরা লড়ে গেছেন। আর জিনাতের আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতি এ লড়াইকে করে তুলেছিল দেখার মতো।

গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছিলেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক ও আফরার বড় বোন আফঈদা খন্দকার। উৎসাহ দিচ্ছিলেন ছোট বোনকে। পাশে ছিলেন মা–বাবাও। তবে পরিবারের ষোলো আনা সমর্থনও জিনাতকে হারানোর জন্য যথেষ্ঠ হয়নি।

ম্যাচ শেষে আফরা বললেন, ‘তিনি একজন ভালো খেলোয়াড়। তাঁর বিপক্ষে খেলা আমার জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে তাঁর আক্রমণাত্মক স্কিলটা দুর্দান্ত। ম্যাচ শেষে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, গুড ফাইট।’

বিজয়ী জিনাত পরে কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, ‘আমি সবাইকে বলতে চাই, বাংলাদেশের ছেলে-মেয়েরা খেলতে চায়। তারা যদি সুযোগ-সুবিধা পায়, অনেক ভালো করবে। ওদের স্কিল আছে।’

সেমিফাইনালে আছিয়া না ফাইনালে আফরা—কোন লড়াইটা বেশি কঠিন ছিল? জিনাতের জবাব, ‘আমি আমার খেলাটা খেলেছি এবং জিতেছি। দুজনই আলাদা ধাঁচের প্রতিপক্ষ।’

জিনাত বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পদক জয়ের আকাঙ্ক্ষার কথা আজও বলেছেন। আগামী এশিয়ান গেমসে সুযোগ পেলে পদক জিতবেন কি না, প্রশ্নের ছোট্ট উত্তর, ‘ইনশা আল্লাহ।’

আফরা-জিনাত ফাইনাল ম্যাচটা যেন ছিল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বক্সারের লড়াই নয়, এর বাইরেও চলছিল আরেক নাটক। ফাইনালের কয়েক ঘণ্টা আগেই বক্সিং রিংয়ে এক ব্যতিক্রমী দৃশ্য। আনসারের বক্সার জাহিদুল হক রেফারির রায় নিয়ে ক্ষোভ জানাতে রিংয়ে বসে পড়েন প্রতিবাদ হিসেবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বক্সার জনি ভদ্রর ঘুষিতে কপালে চোট পান জাহিদুল। চিকিৎসাও নেন। একপর্যায়ে রিংয়ের মাঝখানে বসেই অভিনব প্রতিবাদ জানান।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ আনসার দল বাংলাদেশ বক্সিং ফেডারেশনের সভাপতির কাছে অভিযোগ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিযোগিতা থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের হুমকি দেয়। একপর্যায়ে আনসারের প্রতিনিধিরা রিং ছেড়ে চলে যান। মুহূর্তেই ঘনীভূত হয়ে ওঠে অনিশ্চয়তা, আফরা-জিনাত ফাইনালটি আদৌ হবে তো? কারণ, আফরা বাংলাদেশ আনসারের প্রতিযোগী। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আনসার ফিরে আসে এবং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

এ বিষয়ে বক্সিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুস কুদ্দুস প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফাইটে হারলে যা হয়। হারলেই বলে অন্যায় হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত রিংয়ে ফিরে এসেছে, খেলেছে, এটা ভালো।’

ম্যাচ শুরুর ঠিক আগে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল গ্যালারিতে এসে জিনাতকে শুভেচ্ছা জানায়, তাঁকে উপহারও দেয় তারা। গ্যালারিতে বাড়তি উত্তেজনা আর গুরুত্ব যোগ করে ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে। আর দেশের সংবাদমাধ্যমের ব্যাপক উপস্থিতি তো ছিলই ম্যাচটা ঘিরে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্লাবে মাইক্রোসফট
  • বক্সিং রিংয়ে চ্যাম্পিয়ন জিনাতই, বোনকে উৎসাহ দিতে গ্যালারিতে আফঈদা