সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় যাওয়া-আসার পথে দুই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত এবং এর প্রতিবাদ করায় এক ছাত্রীর চাচাকে মারধরের ঘটনায় তিন তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার তরুণেরা হলেন উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের মহিবুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫), আলমগীরের ছেলে মারুফ মিয়া (২১) ও জাহাঙ্গীরের ছেলে তৌশিক মিয়া (২২)।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, এলাকার একটি মাদ্রাসায় যাওয়া-আসার পথে গ্রেপ্তার তরুণেরা ওই ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করতেন। একপর্যায়ে ছাত্রীরা মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেন। বিষয়টির প্রতিবাদ করায় এক ছাত্রীর চাচাকে মারধর করেন ওই তরুণেরা। এরপর গত ২৯ এপ্রিল ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও মারধরের ঘটনায় তাহিরপুর থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন মারধরের শিকার ওই ব্যক্তি। এই মামলায় পুলিশ শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পর আসামিদের ধরতে অভিযান শুরু করে। শনিবার রাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়ানোর কথা বলে পাচারের চেষ্টা, ভারতীয় গ্রেপ্তার

দুই নারী ও এক শিশুকে ভারতে পাচারের চেষ্টা করার সময় শংকর অধিকারী (৩৯) নামে এক ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে বিজিবি। বৃহস্পতিবার (১ মে) বিকেল ৫টার দিকে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার (২ মে) সকালে মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার শংকর অধিকারী ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাগদা থানার পূর্বহুদা গ্রামের নুকুল অধিকারীর ছেলে।

আরো পড়ুন:

আখাউড়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যুবক আহত

ট্রেনে বিজিবির অভিযান, কোটি টাকার হেরোইন জব্দ

বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বাঘাডাঙ্গা বিওপির নায়েক আবু হানিফ ভারতীয় নাগরিক শংকর অধিকারীকে গ্রেপ্তার করেন। সীমান্ত পিলার-৬০/৩৩ সংলগ্ন বাংলাদেশের ১ কিলোমিটার ভেতরে কাঞ্চনপুর গ্রামের ব্রিজের ওপর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্রেপ্তার শংকর অধিকারী দুই নারী ও এক শিশুকে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের চেষ্টা করছিলেন। বিজিবির টহল দল তাকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তার কাছ থেকে ৫০ হাজার ১১০ টাকা, ৮৫০ ভারতীয় রুপী এবং ৭ ওমানি রিয়েল জব্দ হয়েছে।

গ্রেপ্তারের পর শংকর অধিকারী ও দুই নারীর দেওয়া তথ্য যাচাই বাছাই শুরু করে বিজিবি। বেরিয়ে আসে নারী ও শিশু পাচারের চাঞ্চল্যকর কৌশলের অজানা তথ্য।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির বরাতে বিজিবি জানায়, গত বছরের ১১ নভেম্বর ৬ মাসের ভিসা নিয়ে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন শংকর অধিকারী। এরপর তিনি মাদারীপুরে রাজৈর থানার বড়খোলা গ্রামে তার আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান নেন। সেখানে তিনি কৌশলে এক কিশোরীকে (১৩) বিয়ে করে ভারতে ফিরে যান। গত ১৭ এপ্রিল আবারো বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসেন শংকর অধিকারী। এরপর বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে নিজের কথিত কিশোরী স্ত্রী, প্রতিবেশী যুথিকা বালা (২৯) ও তার ছেলে বাধন বৈদ্যকে নিয়ে মহেশপুর সীমান্তে আসেন শংকর অধিকারী। একপর্যায়ে দালালদের মাধ্যমে দুই নারী ও এক শিশুকে ভারতে পাচারের চেষ্টাকালে বিজিবির জালে আটকা পড়েন তিনি। 

শংকরের কথিত কিশোরী স্ত্রী ও অপর নারী যুথিকা হালদারের বরাতে বিজিবি জানায়, ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে পাচারের জন্য দুই নারী ও এক শিশুকে সীমান্ত এলাকায় নিয়ে আসেন শংকর অধিকারী। সীমান্ত এলাকায় পৌঁছানোর আগে পর্যন্ত ভিকটিম নারী ও শিশু শংকর অধিকারীর আসল উদ্দেশ্য বুঝতেও পারেননি। ভিকটিম নারী ও শিশু ভারতে প্রবেশের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না বলে তারা বিজিবির কাছে দাবি করেছেন।

শংকর অধিকারী বিজিবির কাছে জানিয়েছেন, কথিত স্ত্রীসহ দুজন নারী এবং এক শিশুকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য  জনৈক দালাল আনোয়ারের সঙ্গে ৪৭ হাজার টাকার চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী ওই দুই নারী ও শিশুকে ভারতে অনুপ্রবেশ করানোর পরে কথিত দালাল আনোয়ারকে টাকা দেওয়ার কথা ছিল শংকরের।

বিজিবি বলছে, আটক মানব পাচারকারী চক্রের হোতা শংকর অধিকারী কৌশলে নিজের টাকা ব্যয় করে ওই তিনজনকে ভারতে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ভারতে নেয়ার পরে ওই তিনজনকে বিক্রি করে দিয়ে নিজের টাকা উসুল করার পরিকল্পনা ছিল পাচারকারীর। মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন নানা কৌশলে বাংলাদেশ থেকে ভারতে নারী ও শিশু পাচারের চেষ্টা করছে। গ্রেপ্তার শংকর অধিকারীকে মহেশপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। 

মহেশপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‍“গ্রেপ্তার পাচারকারী চক্রের হোতা ভারতীয় নাগরিক শংকর অধিকারীর বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা করা হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। নারী শিশুসহ তিন বাংলাদেশিকে যশোরের জাস্টিস এন্ড কেয়ার সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।”

ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বেড়ানোর কথা বলে পাচারের চেষ্টা, ভারতীয় গ্রেপ্তার