কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে রাতভর গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত ও পাকিস্তানের সেনারা সারারাত ধরে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় (লাইন অফ কন্ট্রোল) হালকা অস্ত্র ও কামানের গোলা বিনিময় করেছে।

এক বিবৃতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘রাতের বেলা.

.জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা, বারামুলা, উরি ও আখনূর এলাকার উল্টোদিকে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাকিস্তানি সেনাচৌকি থেকে বিনা উসকানিতে ছোট অস্ত্র থেকে গুলি এবং কামানের গোলা বর্ষণ করা হয়।’ 

ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারতীয় সেনারা সে অনুযায়ী জবাব দিয়েছে।

তবে সীমান্তে সর্বশেষ সংঘাতের খবরের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে নিশ্চিত কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

অন্যদিকে ভারতের হামলার পর বুধবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, বদলা নেবে পাকিস্তান। মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে উভয় পক্ষে অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। ইসলামাবাদ বলেছে, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং সীমান্তে গোলাগুলিতে পাকিস্তানে ৩১ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। নয়াদিল্লি বলেছে, পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে তাদের দিকে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ভূপাতিত করা ২৫ ড্রোন ইসরায়েলের তৈরি: পাকিস্তান আইএসপিআর

পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী বুধবার রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৫টি হরপ ড্রোন ভূপাতিত করেছে। পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) দাবি, এসব ড্রোন ইসরায়েলের তৈরি। খবর ডন, বিবিসির

সেনাবাহিনী বলেছে, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী তাদের ‘সফট-কিল’ (প্রযুক্তিগত) ও ‘হার্ড-কিল’ (অস্ত্রশস্ত্রের ব্যবহার) দক্ষতা পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে ভারত থেকে পাঠানো ২৫টি ইসরায়েলি হরপ ড্রোন গুলি করে নামিয়েছে।

কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত বড় ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে উল্লেখ করে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বলেছে, ‘পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে ভূপাতিত করা এসব ইসরায়েলি হরপ ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ জড়ো করা হচ্ছে।’

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থাপনায় এই হামলা চালায় ভারত। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও গুলিবর্ষণে নিহত হন ৩১ জন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৫৭ জন। 

অন্যদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতেই নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে (এলওসি) পাকিস্তানি সেনারা গোলাবর্ষণ করেছে। এতে ১৫ ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর গণসংযোগ শাখার মহাপরিচালক (ডিজি আইএসপিআর) লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানিয়েছেন, গত রাতে ভারত আবারও পাকিস্তানের সীমান্ত লঙ্ঘন করেছে এবং বিভিন্ন স্থানে ড্রোন পাঠিয়েছে। ৭ থেকে ৮ মে পর্যন্ত ভারত থেকে আসা ২৫টি ড্রোন ধ্বংস করেছে তারা।

এদিকে ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করা হয়েছে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানান, এর মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, একটি রাশিয়ার তৈরি সু-৩০ ও অন্যটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান। সু-৩০ ও মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান সোভিয়েত আমলে তৈরি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী এখন পর্যন্ত ২৫টি ড্রোন ধ্বংস করেছে এবং বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

আইএসপিআর মুখপাত্র বলেন, ভারতীয় ড্রোনগুলো পাকিস্তানের লাহোর, গুজরানওয়ালা, চকওয়াল, অ্যাটক, রাওয়ালপিন্ডি, বাহাওয়ালপুর, মিয়ানওয়ালি, ছোড় এবং করাচির দিকে পাঠানো হয়েছিল।

ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন যে লাহোরে একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে, যাতে চারজন পাকিস্তানি সেনা আহত হয়েছেন এবং সামরিক স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ বলেন, আমরা এই আগ্রাসনের মোকাবিলা খুব ভালোভাবে করতে জানি, আমরা এর মোকাবিলা করছি। আমরা কেবল দৃঢ় প্রতিজ্ঞই নই, এই আক্রমণকারীদের প্রতিহত করার ক্ষমতাও আমাদের রয়েছে।

গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এখন তা পাল্টাপাল্টি হামলায় রূপ নিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ