‎আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি হয়েছে রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) ছাত্রদলের দুই গ্রুপ। শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার্স ক্লাবে ছাত্রদলের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এই উত্তেজনার সূত্রপাত হয়। আমন্ত্রিত অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, প্রক্টর এবং ছাত্রপরামর্শকের উপস্থিতিতে এ ঘটনা ঘটেছে।

‎জানা গেছে, ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ওই দুই গ্রুপের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।

‎প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনুষ্ঠানের শুরুতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আহমেদুল কবির তাপস এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরসহ ছাত্রদলের এক গ্রুপের নেতাকর্মীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.

আব্দুস সামাদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. তারিফুল ইসলাম তারিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন গ্রুপের নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হলে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুরোধে পরে সামাদ-তারিফ-ফরহাদ গ্রুপ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

‎তবে রাত ৯টা ১৫ মিনিটের দিকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপ একটি মিছিল বের করে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় গেটে শেষ হয়। এ সময় ক্যাম্পাসে বিকট শব্দে কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

‎অন্যদিকে সামাদ-ফরহাদ-তারিফ গ্রুপ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অবস্থান নেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাদের হাতে লাঠি ও রড সদৃশ বস্তু দেখা গেছে।

‎পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. আরফান আলী এবং সহকারী প্রক্টর ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেন, ছাত্রদলের অনুষ্ঠানে একটি গ্রুপ অন্য গ্রুপকে বাধা দিয়েছে। পরে দুটি গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। বিকট শব্দে বিস্ফোরণের সময় আমি ছিলাম না। এ বিষয়ে জানার চেষ্টা করছি। একটি গ্রুপ বহিরাগতদের নিয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিচ্ছে- এমন খবর শোনার পর ক্যাম্পাসের প্রধান গেটগুলো বন্ধ করতে বলেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ছ ত রদল র অন ষ ঠ ন র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ

বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।

দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।

পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।

বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’

সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসী

সম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।

এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।

সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।

রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ