সারাদেশে চলছে তাপপ্রবাহ, রাজধানীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
Published: 10th, May 2025 GMT
চলতি মে মাসের প্রথম সপ্তাহেও তাপমাত্রা মোটামুটি সহনীয় ছিল। কিন্তু গত বুধবার থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। গতকাল শুক্রবার দেশের ৪৫ জেলায় তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। এটি বিস্তৃত হয়ে আজ শনিবার সারাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও রাজধানীতে এ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আজ দেশের যত অংশজুড়ে তাপের বিস্তার, তা চলতি বছরে দেখা যায়নি। আজ রাজধানীতেও প্রচণ্ড গরম পড়েছে। আজ রাজধানীতে তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি এই বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা সমকালকে বলেন, আজ দেশের সব জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। আজ ঢাকার তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
শাহনাজ সুলতানা আরও বলেন, আগামীকাল রোববারও দেশে এমন তাপপ্রবাহজ বয়ে যাবে। সোমবার থেকে দেশের কয়েক স্থানে বৃষ্টি হবে। এরপর থেকে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা কমে আসতে থাকবে।
আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চুয়াডাঙ্গা, ঢাকা, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ ও যশোর জেলাসমূহের ওপর দিয়ে অতিতীব্র থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা মাঝারি তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ ধরা হয়। তাপমাত্রা ৪২-এর বেশি হলে তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলে গণ্য হয়।
বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারাদেশে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে ।
সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারাদেশে চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
আজ ঢাকার বাতাস পশ্চিম বা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হবে। সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৮ শতাংশ।
আজ ঢাকায় সূর্যান্ত সন্ধ্যা ৬টা ৩২ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ১৮ মিনিটে।
সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
আজ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়, ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সিলেটে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আজ ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি বছরে এটি রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে ২৮ মার্চ রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
২ কেজির ইলিশ বিক্রি হলো ৭ হাজার ৭০০ টাকায়
সারাদেশে ইলিশের দাম নিয়ে যখন হইচই তখন জেলেরা ভুগছেন ইলিশ সংকটে আর ক্রেতারা হতাশ দাম নিয়ে। এ অবস্থায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জামাল মাতুব্বর নামের এক জেলের জালে ধরা পড়লো ২ কেজির এক ইলিশ যা বিক্রি হলো ৭ হাজার ৭০০ টাকায়।
রোববার বিকেলে উপজেলার আশাখালী মাছ বাজারে ২ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশটিকে ৭ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেন জেলে। মাছটি কেনেন বন্ধন ফিসের মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম।
জেলে জামাল মাতুব্বর বলেন, গত কালকে সমুদ্রে মাছ ধরতে নেমে আজকে আবহাওয়া খারাপ হওয়া তীরে চলে এসেছি৷ ইলিশ মাছ কম তবে একটি ইলিশ আমি ৭ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেছি। যে কারণে কম মাছ পেলেও খুব ভালো লাগছে। এর চেয়েও বড় ইলিশ সমুদ্রে পাওয়া যায় তবে এখন দাম অনেক হওয়ায় যা দাম এসেছে তাতে পুষিয়ে যায় আমাদের।
বন্ধন ফিসের মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, গত ১১ জুন ৬০ দিনের অবরোধ শেষ হওয়ার পর কয়েকবার আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় জেলেরা ঠিকমতো মাছ ধরতে পারছেন না। তবে আজকে জেলে জামাল একটি মাছ প্রায় ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। এটা তার জন্য অনেক আনন্দের। মাছটি আমি কিনে ঢাকায় পাঠিয়েছি।
উপজেলার বেশ কয়েকটি মাছের বাজারে কথা বলে জানা যায়, ইলিশ সংকট হওয়ায় তার দাম আকাশচুম্বী। আজকে এক কেজির উপরের ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে এক লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ৯৫ থেকে ৯৮ হাজার টাকায়, ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৭০ হাজার থেকে ৮৫ হাজার টাকায়, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৬৫ থেকে ৬৮ হাজার টাকায়, ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের ইলিশ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ৬০ দিনের অবরোধ সঠিকভাবে পালন হওয়ায় সাগরে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ায় জেলেরা ঠিকমত মাছ ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তবে আবহাওয়া ঠিক হলে মাছের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে আর দামও নাগালে চলে আসবে।