জেলেনস্কির ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব, পুুতিনের সায়ের অপেক্ষা
Published: 10th, May 2025 GMT
যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি এবং পোল্যান্ডের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর রাশিয়ার সঙ্গে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সায় পেলে সেটি অগ্রসর হবে। যুদ্ধবিরতির এই প্রচেষ্টায় যুক্ত রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
জেলেনস্কি যুদ্ধবিরতি নিয়ে যেসব প্রস্তাব দিয়েছেন, তার সারাংশে রয়েছে এটি হতে হবে ‘শর্তহীন’। জেলেনস্কির যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে আরো যা যা রয়েছে-
জেলেনস্কির যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব: শান্তির পথে ৩০ দিনের সুযোগ
মূল প্রস্তাবনার সারাংশে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। যুদ্ধবিরতি শুরু হবে সোমবার (১২ মে) থেকে এবং এটি ৩০ দিন চলবে।
আরো পড়ুন:
রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে গিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণের নিহতের খবর
জেলেনস্কির শহরে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৮
যুদ্ধবিরতির আওতায় থাকবে আকাশপথ (ড্রোন, যুদ্ধবিমান ইত্যাদি বন্ধ), সমুদ্রপথ (নৌযান, সাবমেরিন অপারেশন নিষিদ্ধ), স্থলপথ (সেনা আগ্রাসন, গোলাবর্ষণ সম্পূর্ণ বন্ধ)। এই যুদ্ধবিরতি হবে ‘নিঃশর্ত’ – অর্থাৎ কোনো পক্ষকে অতিরিক্ত শর্ত পূরণ করতে হবে না।
যুদ্ধবিরতি তদারকির ব্যবস্থা
জেলেনস্কির মতে, যুদ্ধবিরতির তদারকি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে করা সম্ভব এবং বাস্তবায়নযোগ্য। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা কাজ করবে উভয় পক্ষের কার্যক্রম নিরীক্ষণ করতে।
শান্তি আলোচনার সূচনা
যুদ্ধবিরতির এই সময়টিকে ব্যবহার করে শুরু হবে আলোচনা, যার মূলে থাকবে নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক ভিত্তি। ভবিষ্যতে কীভাবে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে, তার সুনির্দিষ্ট ও বাস্তবায়নযোগ্য রূপরেখা থাকতে হবে।
রাজনৈতিক জায়গা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দ্বন্দ্ব নিরসনে কূটনৈতিক কাঠামো তৈরি করতে হবে।
মানবিক দিক থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে সহায়তা, বন্দিমুক্তি ও বাস্তুচ্যুতদের পুনর্বাসন করতে হবে।
রাশিয়ার প্রতিক্রিয়ার শর্ত
যদি রাশিয়া এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে, তাহলে জ্বালানি খাত (গ্যাস, তেল) এবং ব্যাংকিং খাতের ওপর আরো কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যে একটি ‘শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ’ প্রস্তুত করছে, যা যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও নরওয়ের সঙ্গে সমন্বিতভাবে করা হয়েছে।
ইউরোপের পাঁচ নেতার সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপ
বিবিসি লিখেছে, ইউক্রেন সফর করছেন ইউরোপের চার নেতা। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেৎজ, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার ও পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক। তারাসহ জেলেনস্কি মিলে কিয়েভ থেকে ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।
জেলেনস্কি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে এই ফোনালাপকে ‘ইতিবাচক ও বাস্তবমুখী’ বলে বর্ণনা করেছেন।
তিনি লিখেছেন, “আমরা একমত হয়েছি যে, অবিলম্বে, পূর্ণাঙ্গ এবং নিঃশর্তভাবে কমপক্ষে ৩০ দিনের জন্য একটি যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন।”
“প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি সোমবার থেকে শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তবে তারা এখনো রাশিয়ার প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন,” বলেন জেলেনস্কি।
জেলেনস্কি আরো বলেন, “যখন যুদ্ধবিরতি শুরু হবে, তখনই হবে কূটনীতির জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। ইউক্রেন আলোচনার জন্য প্রস্তুত– যেকোনো ফরম্যাটে, যেকোনো স্তরে।”
অন্যান্য নেতাদের প্রতিক্রিয়া
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, এই যুদ্ধবিরতি "ইউক্রেনে একটি দৃঢ় এবং স্থায়ী শান্তির পথ সুগম করবে।"
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, "একটি ন্যায়সঙ্গত ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।"
এই আলোচনার মাধ্যমে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, পশ্চিমা বিশ্ব ইউক্রেনে অবিলম্বে যুদ্ধ থামিয়ে রাজনৈতিক সমাধানের দ্বার খুলতে চায়, এবং সেই লক্ষ্যে যুদ্ধবিরতি হচ্ছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক পদক্ষেপ।
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন প রস ত ব ৩০ দ ন র ইউক র ন র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি
সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।
আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’
অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।