রাউজানে তিন হত্যাকাণ্ডে ফাঁসছেন নিরীহ মানুষ
Published: 11th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামের রাউজানে আলোচিত তিনটি হত্যা মামলায় নিরীহ লোকজনকে আসামি করে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। এতে একদিকে মামলার অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে প্রকৃত আসামিরা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। মামলা থেকে আসামির নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে অর্থবাণিজ্যের অভিযোগও রয়েছে। এসব হত্যা নিয়ে পুলিশের নীরব ভূমিকায় প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে মামলার কার্যক্রম। জড়িতদের ধরতে পুলিশের ফেসবুক লাইভ সম্প্রচার আসামিকে রক্ষার কৌশল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, ব্যবসায়ী মানিক আবদুল্লাহ হত্যার পর গত ১৯ এপ্রিল তাঁর স্ত্রী ছেমন আরা বেগম মামলা করেন। মামলার ৫ নম্বর আসামি রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা ইউনিয়নের ইসমাইল হোসেন। তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার। ২৫ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন। একই মামলায় ৯ নম্বর আসামি করা হয় বেতাগী ইউনিয়নের মো.
২২ এপ্রিল রাউজানে গুলি করে হত্যা করা হয় যুবদল কর্মী মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে। এ ঘটনায় মামলা করেন তাঁর মা খালেদা বেগম। সেখানে ৮ নম্বর আসামি করা হয় ব্যবসায়ী এসএম শহিদুল্লাহ রনিকে। তিনি থাকেন চট্টগ্রাম শহরে। ইব্রাহিম হত্যায় ৮ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। ইব্রাহিম হত্যা শেষে দুর্বৃত্তরা যাওয়ার সময় মো. নাঈমকে গুলি করে। ওই ঘটনায় নাঈমের ভাই আবদুল মান্নান বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন।
সূত্র বলছে, ইব্রাহিম হত্যায় অংশ নেওয়া দুর্বৃত্তরাই নাঈমকে গুলি করেছিল। তাহলে দুটি মামলায় আসামির ক্ষেত্রে ভিন্নতার মাধ্যমে অদৃশ্য গায়েবি মামলা দিয়ে হয়রানির বিষয়টি স্পষ্ট বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
মামলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী এস.এম. শহিদুল্লাহ রনি বলেন, ‘প্রকাশ্যে হত্যাটি হলেও আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। অথচ আমি ঘটনার দিন রাউজানই ছিলাম না। এই মামলা প্রত্যাহারের জন্য আমি প্রধান উপদেষ্টা, আইজিপি, পুলিশ সুপারসহ রাউজান থানা বরাবর লিখিত আবেদন করেছি।’ মামলার বাদী খালেদা বেগম বলেন, ‘আমি আসামিকে চিনি না। আমার দেবর আবদুল হালিম আসামিদের নামে মামলায় দিয়েছেন। কেউ নিরপরাধ থাকলে আমার দেবরকে বলে নাম বাদ দেওয়া হবে।’
এদিকে রাউজানের হলদিয়া ইউনিয়নের যুবদলকর্মী কমর উদ্দিন জিতু হত্যার ঘটনায় গত ১৮ মার্চ তাঁর স্ত্রী ডেজি আকতার মামলা করেন। ওই হত্যা মামলায় উপজেলা বিএনপির সদস্য মহিউদ্দিন জীবনকে ১ নম্বর আসামি করা হয়। তিনি দাবি করেছেন, মিথ্যা মামলায় তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। অন্যদিকে একই মামলার দুই ব্যবসায়ীসহ তিনজনকে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মামলার
১৫ নম্বর আসামি হলদিয়া ইউনিয়নের খুদে ব্যবসায়ী মো. সৈয়দ, ১৬ নম্বর আসামি ফুলের দোকানি মো. মামুন ও ১৩ নম্বর আসামি মৎস্য হ্যাচারি কর্মচারী মোহাম্মদ ইব্রাহিম। ফুলের দোকানি মো. মামুন বলেন, ‘বিএনপির দু’পক্ষের কোন্দলের জেরে কমর উদ্দিন জিতু হত্যার শিকার হয়েছে। ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ছিল। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্ত করলে নিরীহ মানুষ হয়রানি থেকে মুক্তি পাবে।’
ব্যবসায়ী মো. সৈয়দ বলেন, ‘আমার মতো খুদে মানুষকে আসামি করে মামলাকে হালকা করা হয়েছে। প্রকৃত খুনিরা মামলা থেকে বাদ পড়েছে। আমি এ মামলার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করছি। মামলার বাদী ডেজি আক্তার বলেন, ‘আমি কাউকে আসামী করিনি। হত্যায় জড়িতদের নাম দিয়েছে পুলিশ।’
এ ব্যাপারে রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া সমকালকে বলেন, ‘মামলার বাদী এজাহারে যাদের আসামি করেছেন, সেটা মামলা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে মামলা থেকে নিরপরাধ লোকদের বাদ দেওয়া হবে। প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে আদালতের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করতে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য ক ণ ড ব যবস য়
এছাড়াও পড়ুন:
ফ্যাসিবাদ ও উগ্র জাতীয়তাবাদ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ
‘ফ্যাসিবাদের কর্মপদ্ধতি ও নীতি সমগ্র মানবজাতির উদ্বেগের বিষয়। যে আন্দোলন নিষ্ঠুরভাবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করে, বিবেকবিরোধী কাজ করতে মানুষকে বাধ্য করে এবং হিংস্র রক্তাক্ত পথে চলে বা গোপনে অপরাধ সংঘটিত করে, সে আন্দোলনকে আমি সমর্থন করতে পারি এমন উদ্ভট চিন্তা আসার কোনো কারণ নেই। আমি বারবারই বলেছি, পশ্চিমের রাষ্ট্রগুলো সযত্নে উগ্র জাতীয়তাবাদ ও সাম্রাজ্যবাদী মনোভাব লালন করে সারা পৃথিবীর সামনে ভয়াবহ বিপদের সৃষ্টি করেছে।’
সি এফ এন্ড্রুসকে লেখা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিঠি, ম্যানচেস্টার গার্ডিয়ান, লন্ডন, ৫ আগস্ট ১৯২৬
রবীন্দ্রনাথই ছিলেন প্রথম ভারতীয় সাহিত্যিক, যিনি ফ্যাসিবাদের ভয়ানক আগ্রাসী ও বর্বর রূপ উপলব্ধি করে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, আন্তর্জাতিকতার সবচেয়ে বড় বিপদ সাম্রাজ্যবাদ ও উগ্র জাতীয়তাবাদ। তাই সারা জীবন দৃঢ়তার সঙ্গে অজস্র গান, কবিতা, রচনা, সাহিত্যকীর্তি ও বক্তৃতায় এই দুই সংকটের বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন তিনি।
বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে যে স্বদেশি আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে, এর সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক প্রতীক ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। তিনি শুধু অসাধারণ কবিতা ও গানই লেখেননি; রাখিবন্ধন, পদযাত্রাসহ সবকিছুতেই সক্রিয় ছিলেন। জাতীয়তাবাদের একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবেই তিনি তখন ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি রবীন্দ্রনাথ বলেই দূরদৃষ্টিতে উগ্র জাতীয়তাবাদের পূর্বাভাস টের পেয়েছিলেন। সে কারণে সরে দাঁড়িয়েছিলেন স্বদেশি আন্দোলন থেকে। গোরা, ঘরে বাইরে ও চার অধ্যায় উপন্যাসে উগ্র জাতীয়তাবাদের তীব্র সমালোচনা করেছেন। ‘কালান্তর’সহ বিভিন্ন প্রবন্ধে, চিঠিপত্রে, অভিধানে উগ্র জাতীয়তাবাদের বিপদ সম্পর্কে সচেতন করেছেন। উগ্র জাতীয়তাবাদ ও কট্টর স্বাজাত্যবোধের পরিণতি তুলে ধরেছেন গোরা (১৯১০) উপন্যাসে। ঘরে বাইরে (১৯১৬) উপন্যাসে দেখালেন সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদ কীভাবে সাম্প্রদায়িকতা ও বিদ্বেষের বীজ বপন করে। ঘরে বাইরে–এর অন্যতম প্রধান চরিত্র নিখিলেশের মুখ থেকে উচ্চারিত হয়েছিল, ‘দেশকে সাদাভাবে সত্যভাবে দেশ বলেই জেনে, মানুষকে মানুষ বলেই শ্রদ্ধা করে, যারা তার সেবা করতে উৎসাহ পায় না—চিৎকার করে মা বলে, দেবী বলে, মন্ত্র পড়ে যাদের কেবল সম্মোহনের দরকার হয়, তাদের সেই ভালোবাসা দেশের প্রতি তেমন নয় যেমন নেশার প্রতি।’
যেখানেই মানুষের সভ্যতা আক্রান্ত হয়েছে, মানবতা বিপর্যস্ত হয়েছে, সেখানেই বিবেকি শিল্পী রবীন্দ্রনাথের কণ্ঠ ধ্বনিত হয়েছে। রোমাঁ রোলাঁ, অঁরি বারবুস, আলবার্ট আইনস্টাইনদের সঙ্গে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নিজের দীপ্ত উপস্থিতি ঘোষণা করেছিলেন। তিনি ১৯২৬ সালে তৃতীয়বারের মতো ইতালি সফরের সময় মুসোলিনির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় রবীন্দ্রনাথের। মুসোলিনির ফ্যাসিস্ট শাসন সম্পর্কে তখন তিনি অবহিত ছিলেন না। অচিরেই নিজের ভুল বুঝতে পারেন রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথকে ফ্যাসিবাদের ভয়াবহতা ও বিপদ সম্পর্কে অবহিত করে তাঁকে ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনের পুরোভাগে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে রোমাঁ রোলাঁর ভূমিকা প্রশ্নাতীত। রোলাঁকে পাঠানো চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘ইতালি সফরের ফলে আমার মনে যে মলিনতার স্পর্শ লেগেছিল, সম্প্রতি এক মুক্তিস্নানে তা দূর হয়েছে।’ রবীন্দ্রনাথের এই ইউরোপ সফরে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অভিজ্ঞতা ছিল ফ্যাসিজম ও যুদ্ধ সম্পর্কে তাঁর সচেতনতা। এ ঘটনার পর থেকেই রবীন্দ্রনাথ পৃথিবীজুড়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী অন্যতম প্রধান কণ্ঠ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। মুসোলিনির স্বরূপ উদ্ঘাটিত হওয়ার পর তাঁর একটি ব্যঙ্গচিত্র আঁকেন রবীন্দ্রনাথ।
১৯২৬ সালের পর থেকেই ক্রমান্বয়ে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে উদাত্ত কণ্ঠস্বর শোনা যেতে থাকল রবীন্দ্রনাথের। ১৯২৭ সালে বিখ্যাত ফরাসি মনীষী ও সাম্যবাদী নেতা অঁরি বারবুস ও ফরাসি দার্শনিক রোমাঁ রোলাঁর মধ্যে মত বিনিময়ের পর তাঁরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী–গুণীদের কাছে ‘দ্য আপিল টু দ্য ফ্রি স্পিরিটস’ শিরোনামের আবেদনপত্র পাঠান, তাঁদের অনুমোদনের জন্য। এর মূল সুর ছিল ফ্যাসিবাদ-বিরোধিতার। সেই আবেদনে সমর্থন জানিয়ে লেখা জবাবে দ্বিধাহীনভাবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিজের দৃঢ় অবস্থানের কথা জানান রবীন্দ্রনাথ।
ফ্যাসিস্ট ইতালি ও জার্মানির মদদপুষ্ট জেনারেল ফ্রাঙ্কো ১৯৩৬ সালে স্পেনের গণতন্ত্র ধ্বংস করে স্বৈরশাসন চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে পুরো স্পেনে তার প্রতিবাদে ও প্রতিরোধে সংগ্রাম শুরু হয়। স্পেনের যুদ্ধে পপুলার ফ্রন্টের হয়ে রণাঙ্গনে শামিল হয়েছিলেন বিভিন্ন দেশের শিল্পী, সাহিত্যিক, সংস্কৃতিকর্মীরা। রবীন্দ্রনাথ এই প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন। ১৯৩৭ সালে লেখা সেঁজুতি কাব্যগ্রন্থে ‘চলতি ছবি’ কবিতায় স্পেনের গৃহযুদ্ধের ছবি ফুটে উঠেছে: ‘যুদ্ধ লাগল স্পেনে;/চলছে দারুণ ভ্রাতৃহত্যা/ শতঘ্নীবাণ হেনে।’
এই সময়েই ‘লিগ এগেইনস্ট ফ্যাসিজম অ্যান্ড ওয়ার’ নামে একটি সংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মূল উদ্যোক্তা ছিলেন কবির ভ্রাতুষ্পুত্র সাম্যবাদী আদর্শে বিশ্বাসী সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথ এই সংঘের সভাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। তিরিশের দশকে জাপানের চীন আক্রমণ ও আগ্রাসনের ঘটনা রবীন্দ্রনাথ মেনে নিতে পারেননি। এ প্রসঙ্গে তাঁর অনুরাগী জাপানি কবি নোগুচির সঙ্গে খোলা চিঠি আদান-প্রদানের মাধ্যমে দীর্ঘ বিতর্ক চলে। জাপানের ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা সত্ত্বেও দেশটির হিংস্র ভূমিকার নিন্দা করেছেন রবীন্দ্রনাথ।
১৯৩৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর অমিয় চক্রবর্তীর উদ্দেশে এক চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘দেখলুম দূরে বসে ব্যথিত চিত্তে, মহাসাম্রাজ্যশক্তির রাষ্ট্রমন্ত্রীরা নিষ্ক্রিয় ঔদাসীন্যের সঙ্গে দেখতে লাগল জাপানের করাল দংষ্ট্রাপংক্তির দ্বারা চীনকে খাবলে খাবলে খাওয়া...দেখলুম ঐ স্পর্ধিত সাম্রাজ্যশক্তি নির্বিকারচিত্তে এবিসীনিয়াকে ইটালির হাঁ করা মুখের গহ্বরে তলিয়ে যেতে দেখল, মৈত্রীর নামে সাহায্য করল জর্মনীর বুটের তলায় গুঁড়িয়ে ফেলতে চেকোশ্লোভাকিয়াকে; দেখলুম ননইন্টরভেনশনের কুটিল প্রণালীতে স্পেনের রিপাবলিককে দেউলে করে দিতে—দেখলুম ম্যুনিক প্যাক্টে নতশিরে হিটলরের কাছে একটা অর্থহীন সই সংগ্রহ করে অপরিমিত আনন্দ প্রকাশ করতে। ...এই যুদ্ধে ইংলন্ড, ফ্রান্স জয়ী হোক একান্ত মনে এই কামনা করি। কেননা মানব- ইতিহাসে ফ্যাসিজমের নাৎসিজমের কলঙ্ক প্রলেপ আর সহ্য হয় না।’
আবিসিনিয়া, স্পেন ও চীন রণাঙ্গন—প্রায় সর্বত্রই ফ্যাসিস্টদের আক্রমণের মুখে সাম্রাজ্যবাদ ও ফ্যাসিবিরোধী মুক্তিফৌজের পরাজয়ের খবর আসছিল। মানবতাবাদী রবীন্দ্রনাথ সোভিয়েত রাশিয়া কর্তৃক ফিনল্যান্ড আক্রমণের ঘটনাটিকেও ভালো চোখে দেখেননি। এ ঘটনায় তাঁর হতাশা প্রকাশ পায় ‘অপঘাত’ কবিতায়: ‘টেলিগ্রাম এল সেই ক্ষণে/ ফিনল্যান্ড চূর্ণ হলো সোভিয়েত বোমার বর্ষণে।’ রবীন্দ্রনাথ সোভিয়েত রাশিয়াকে সম্পূর্ণ ভিন্ন চোখে দেখতেন। ১৯৩০ সালে রাশিয়া ভ্রমণ ছিল তাঁর কাছে ‘এ জন্মের তীর্থ দর্শন’। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, ‘অন্য কোনো দেশের মতোই নয়, একেবারে মূলে প্রভেদ। আগাগোড়া সকল মানুষকেই এরা সমান করে জাগিয়ে তুলেছে।’
রবীন্দ্রনাথের আঁকা মুসেলিনির ব্যাঙ্গচিত্র