সম্প্রতি দেশের সমাজ ও রাজনীতিতে অনেক কিছুই অনাকাঙ্ক্ষিত-অগ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়-এমন মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

সোমবার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফেসবুক পোস্টে জামায়াত আমির বলেন, বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিবেশ স্বাধীনতার পর থেকে কখনো কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি। সেই অবস্থা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতিতে অনেক কিছুই অনাকাঙ্ক্ষিত ও অগ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এ অবস্থায় দলীয় সহকর্মীদের প্রতি আমার পরামর্শ— সর্বাবস্থায় ধৈর্য, সহনশীলতা, মহান আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল এবং ইনসাফের ওপর দৃঢ় থাকার চেষ্টা করতে হবে। কোনো উসকানি কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়ানো একেবারেই ঠিক হবে না।

তিনি আরও বলেন, আশা করি, সকলে বিষয়টির দিকে গুরুত্বসহকারে নজর দেবেন। মহান আল্লাহ সর্বাবস্থায় আমাদের সহায় হোন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম জ ম য় ত আম র

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান কী হবে

দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক যেন কুয়াশার চাদরে ঢাকা এক অনন্ত যুদ্ধ। সম্প্রতি পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের পাকিস্তানের ওপর দায় চাপানোর প্রেক্ষাপটে নতুন করে দুই দেশ নতুন করে বিরোধে জড়ায়।

এই উত্তপ্ত ভৌগোলিক পরিসরের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ একটি তুলনামূলক ছোট রাষ্ট্র হলেও কৌশলগত অবস্থান ও ভূরাজনৈতিক গুরুত্বের কারণে উপমহাদেশের রাজনীতিতে অনেক বড় জায়গা করে নিয়েছে।

বাংলাদেশ তার কৌশলগত গুরুত্ব বুঝে আচরণ শুরু করে মূলত প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সময় থেকে। তিনি এই সংঘাতের মধ্যে শান্তির পরিসর খুঁজে নিতে ছোট দেশগুলোর সমন্বয়ে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা ‘সার্ক’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের মধ্যেও ছোট দেশগুলো যেন নিজেদের স্বার্থ ও পরিচয় নিয়ে টিকে থাকতে পারে, সে লক্ষ্যে গঠিত হয়েছিল সার্ক।

পরবর্তী সময় নানা কারণে সেই উদ্যোগ থমকে গিয়েছিল, বিশেষ করে যখন বাংলাদেশে ভারতের প্রভাব বেড়ে যায় এবং রাজনৈতিকভাবে একধরনের একমুখী পক্ষ নেওয়া শুরু হয়। ফলে একটা স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ যে সমান্তরাল অবস্থান থেকে কথা বলার সুযোগ একসময় তৈরি করেছিল, তা অনেকটাই ফিকে হয়ে যায়।

সাম্প্রতিক গণ-অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার যে প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে, তা যেন আবার নতুন করে আমাদের হারানো কণ্ঠকে ফিরিয়ে আনার বার্তা দেয়।

এই অঞ্চলে শান্তির প্রশ্নে বাংলাদেশের ভূমিকা কেবল কূটনৈতিক সৌজন্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি হয়ে উঠতে পারে নতুন সমীকরণ গঠনপ্রক্রিয়ার একটি কেন্দ্রবিন্দু। কারণ, যুদ্ধ শুধু সীমান্তে হয় না; যুদ্ধ চলে অর্থনীতিতে, সমাজে, গণতন্ত্রে, আত্মপরিচয়ে। আর সেই যুদ্ধের ছায়া যখন ঘন হয়ে আসে, তখন বাংলাদেশের মতো ছোট রাষ্ট্রগুলোর সামনে চারটি চ্যালেঞ্জ ঘুরেফিরে আসে—রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করা ও অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক তত্ত্বের আলোকে যেসব মতবাদ আছে, সেগুলোও ছোট রাষ্ট্রের পক্ষে এগুলোকেই সমর্থন দেয়। যেমন বাস্তববাদ বলে শক্তিই আসল; উদারবাদে সংলাপ ও সহযোগিতায়ই উত্তরণ; আর গঠনবাদ মনে করিয়ে দেয় রাষ্ট্রের পরিচয়, আত্মসম্মানবোধ ও পারস্পরিক ভাবনার আলোকে গড়ে ওঠে তার আচরণ ও কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত।

গঠনবাদের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের ভূমিকা এখানেই গুরুত্বপূর্ণ। দেশটির আত্মপরিচয় গড়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র ও গণ-আন্দোলনের চেতনাকে কেন্দ্র করে। সেই পরিচয়ের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ যদি শান্তির পক্ষের দৃঢ় অবস্থান নেয়, তাহলে তা শুধু কূটনৈতিক সৌজন্যই নয়, বরং আঞ্চলিক বাস্তবতার মধ্যেও গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করবে।

এ প্রেক্ষাপটে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ যদি সার্কের পুনরুজ্জীবন, আঞ্চলিক সংলাপ ও দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতাকারী ভূমিকা নিতে পারে, তাহলে সেটি উপমহাদেশে ছোট রাষ্ট্রগুলোর জন্য একটি সাহসী দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। বর্তমান প্রজন্মের নেতৃত্ব, যাঁরা গণ-অভ্যুত্থানের জয়গাথা লিখেছেন, তাঁদের সামনে রয়েছে একটি ইতিহাস গড়ার সুযোগ, যেখানে যুদ্ধের উত্তাপ নয়, বরং শান্তির আলো ছড়িয়ে পড়বে সীমান্তের এপার-ওপার।

বাংলাদেশকে শুধু নিরাপদে টিকে থাকার চিন্তা নয়, বরং আত্মমর্যাদার জায়গা থেকে আঞ্চলিক শান্তির শক্তিশালী এক কণ্ঠস্বর হয়ে উঠতে হবে। অনন্ত যুদ্ধের মধ্যেও নিরন্তর শান্তির পক্ষে দাঁড়ানোই হবে এই জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অবস্থান।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের তত্ত্বের আলোকে ছোট রাষ্ট্রের ভূমিকা

বাস্তববাদ অনুযায়ী, বড় রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে যখন যুদ্ধ শুরু হয়, তখন ছোট রাষ্ট্রগুলো সাধারণত তিন ধরনের নীতির আশ্রয় নেয়—নিরপেক্ষতা, ভারসাম্যনীতি ও পক্ষাবলম্বন।

উদারবাদের মতে, আন্তরাষ্ট্রিক সম্পর্ক কেবল ক্ষমতার খেলাই নয়, বরং সংলাপ, পারস্পরিক নির্ভরতা ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যস্থতায় শান্তি অর্জন সম্ভব। তারা মধ্যস্থতাকারী, শান্তি প্রস্তাবদাতা বা নিরপেক্ষ অবজারভার হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পারে।

গঠনবাদ জোর দেয় রাষ্ট্রের পরিচয়, নৈতিকতা ও বিশ্বাসব্যবস্থার ওপর। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, ছোট রাষ্ট্র তাদের ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ও আন্তর্জাতিক নৈতিকতার আলোকে যুদ্ধরত প্রতিবেশীদের প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়া নির্ধারণ করে।

গঠনবাদ অনুসারে, যদি যুদ্ধরত প্রতিবেশীদের মধ্যে একটি দেশ আগ্রাসী আচরণ করে, তাহলে ছোট রাষ্ট্রগুলো মানবিক নৈতিকতার দিক থেকে অন্য পক্ষকে সমর্থন জানাতে পারে, যদিও সামরিকভাবে তারা নিরপেক্ষই থাকে। এতে রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি এবং দীর্ঘ মেয়াদে বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।

অতীতের অভিজ্ঞতা: ছোট রাষ্ট্রগুলোর পথচলা

ইতিহাসে দেখা যায়, ছোট রাষ্ট্রগুলো নানা রকম কৌশল অবলম্বন করেছে তাদের প্রতিবেশীদের যুদ্ধের সময়ে। ১৯৯০-এর দশকে যখন যুগোস্লাভিয়া ভেঙে যায়, তখন ক্রোয়েশিয়া, স্লোভেনিয়া ও বসনিয়া একদিকে নিজেদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে, অন্যদিকে শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা নিয়েছে।

লেবানন ইসরায়েল-সিরিয়া সংঘাতে দীর্ঘদিন ধরে নিরপেক্ষতার পাশাপাশি জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের ওপর নির্ভর করেছে।

দক্ষিণ আমেরিকায়, যখন আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল নানা সময়ে উত্তেজনায় জড়িয়েছে, ছোট রাষ্ট্রগুলো অনেক সময় নিজেদের আঞ্চলিক ভূমিকা পুনর্গঠন করে অর্থনৈতিক কূটনীতিতে মনোনিবেশ করেছে।

ছোট রাষ্ট্রগুলোর করণীয়: একটি বাস্তববাদী ও নৈতিক রূপরেখা

যুদ্ধরত প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ছায়ায় বসবাস করা ছোট রাষ্ট্রগুলোর বহুমাত্রিক কৌশল গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক। প্রথমত, কূটনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখা এবং যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত উদ্বাস্তু, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তা আহ্বান করা উচিত।

দ্বিতীয়ত, নিরাপত্তা জোট বা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করে রাষ্ট্র নিজস্ব ভূরাজনৈতিক অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে কোনো পক্ষপাত বা আধিপত্যের ফাঁদে না পড়ে একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি।

তৃতীয়ত, যুদ্ধরত দেশের উভয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বজায় রেখে, রাষ্ট্র তার অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে পারে। যুদ্ধের বাজারে চাহিদা ও জোগানব্যবস্থার পরিবর্তন বিবেচনায়, বিকল্প রপ্তানি ও আমদানির পথ খুঁজে বের করা হবে গুরুত্বপূর্ণ।

পাশাপাশি রাষ্ট্রকে একটি নৈতিক অবস্থান নিতে হবে, যা মানবাধিকার, শান্তি ও আন্তর্জাতিক আইনকে প্রাধান্য দেয়। এটি কেবল আন্তর্জাতিকভাবে দেশের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে না, বরং ভবিষ্যতের জন্য একটি ন্যায্য ও গ্রহণযোগ্য ইতিহাস রচনা করবে।

বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান ও শান্তি নিশ্চিতে কার্যকর ভূমিকা

বাংলাদেশ আজ দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। শুধু সংখ্যার গর্ব নয়, এটি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার একটি বড় স্বীকৃতি। এই ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় আমাদের জন্য বাড়ছে দায়িত্ব, বাড়ছে কৌশলগত গুরুত্ব। ভারত-পাকিস্তানের টানাপোড়েন শুধু তাদের সীমান্তের মধ্যেই থাকে না, বরং ছড়িয়ে পড়ে গোটা উপমহাদেশে। এই উত্তপ্ত প্রতিবেশে বাংলাদেশকে নিতে হবে সংযত, সতর্ক ও বিচক্ষণ অবস্থান।

এ অঞ্চলে ভারতের প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ধাক্কা এসেছে বাংলাদেশ থেকেই, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে মানুষের ঐক্য, প্রতিরোধের সংগ্রাম, গণতন্ত্রের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান—এই অভিজ্ঞতা আমাদের পথ দেখায়, ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রেরণা দেয়।

এমন আলোচনাও আছে, বাংলাদেশে ভারত দীর্ঘদিন ধরেই পরিকল্পিতভাবে ভারতবিরোধী বিদ্বেষ, উত্তেজনা ও উসকানি ছড়িয়ে যুদ্ধের মনস্তত্ত্ব তৈরিতে ভূমিকা রাখছে।

ভারতীয় কিছু টেলিভিশন অনুষ্ঠানে আমাদের অংশগ্রহণকেও তারা কাজে লাগায় ভারতের বিরুদ্ধে কৃত্রিম ঘৃণা তৈরিতে, যা এখানে সুস্থ জাতীয়তাবাদী অবস্থানের পরিপন্থী।

গণ-অভ্যুত্থানের প্রজন্ম বিজয়ী প্রজন্ম, তারা বিজয়ের উত্তরাধিকার বহন করে। অন্যদিকে যুদ্ধ চায় পরাজিত মনস্তত্ত্ব, যারা পথ হারিয়েছে। আমাদের যুদ্ধ কারও সঙ্গে নয়, আমাদের যুদ্ধ দারিদ্র্য, অশিক্ষা, বৈষম্য আর মানবিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য।

এখন বাংলাদেশের দায়িত্ব রাষ্ট্র পুনর্গঠন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন ও সামগ্রিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। আমাদের দরকার গণ–প্রতিরক্ষা, প্রয়োজনমতো কৌশলগত দৃঢ়তা। আধিপত্যবাদ সামরিক উত্তেজনা দিয়ে মোকাবিলা করা যায় না, করতে হয় কূটনৈতিক বুদ্ধিমত্তা ও বাস্তববাদী নীতি দিয়ে।

বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রগুলোর নিজেদের স্বার্থে ও আঞ্চলিক প্রয়োজনে একটি কৌশলগত সংকট ব্যবস্থাপনা সেল গঠন করা সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে। বর্তমান বিশ্বের জটিল ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় দুর্যোগ, সীমান্ত সংঘাত, যুদ্ধের অভিঘাত কিংবা শরণার্থীপ্রবাহ—এসব সংকট যদি দ্রুত ও দক্ষভাবে মোকাবিলা করা না যায়, তাহলে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, সামাজিক স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এই সেলের কাজ হবে সম্ভাব্য সংকটের আগাম পূর্বাভাস দেওয়া, বাস্তবসম্মত সমাধানপত্র প্রস্তুত করা এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে সক্রিয় করা।

এই সেলের কাঠামোতে নিরাপত্তা–বিশ্লেষক, কূটনীতিক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, মানবাধিকার পর্যবেক্ষক এবং আন্তর্জাতিক আইনবিদদের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। যেমন ২০১৫ সালে ইউরোপে শরণার্থী সংকট চলাকালে জার্মানির চ্যান্সেলর দপ্তরের অধীন একটি বিশেষ ‘রিফিউজি কো-অর্ডিশন সেল’ গঠিত হয়, যা দ্রুত আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের মাধ্যমে সীমান্তব্যবস্থা, আশ্রয়দাতা শহর নির্বাচন ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিশ্চিত করেছিল।

অনুরূপভাবে, বাংলাদেশের উচিত তাদের ভূরাজনৈতিক পরিবেশ বিবেচনায় একটি সুনির্দিষ্ট কৌশলগত সেল গঠন করে সম্ভাব্য যুদ্ধ বা আঞ্চলিক সংঘাতে নিজেদের প্রস্তুত রাখা। এ ধরনের সেল কেবল অভ্যন্তরীণ সমন্বয়েই নয়, বরং জাতিসংঘ, আঞ্চলিক জোট এবং মানবিক সংস্থার সঙ্গে একটি সক্রিয় নেটওয়ার্ক গঠনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সহায়তা গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
আর এভাবেই আমরা তৈরি হয়ে উঠতে পারি এই অঞ্চলের শান্তির অগ্রদূত ও ছোট রাষ্ট্রগুলোর কার্যকর প্রতিনিধি।

আলাউদ্দীন মোহাম্মদ যুগ্ম সদস্যসচিব, জাতীয় নাগরিক পার্টি

(মতামত লেখকের নিজস্ব)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সম্প্রতি দেশের সমাজ ও রাজনীতিতে অনেক কিছুই অনাকাঙ্ক্ষিত-অগ্রহণযোগ্য: জামায়াত আমির
  • ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান কী হবে
  • নারী কমিশনের সংস্কার-ভাবনা কতটা অন্তর্ভুক্তিমূলক