নৌপথে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স জারি করেছি : নৌ পুলিশ না’গঞ্জ
Published: 12th, May 2025 GMT
“দূষণমুক্ত নদী ও নিরাপদ নৌযান, সুস্থ থাকবে পরিবেশ, রক্ষা হবে প্রাণ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ উপলক্ষে নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর বিআইডব্লিউটির এর আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১২ মে) বিকেলে নারায়নগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল সংলগ্ন বিআইডব্লিউটিএর ভবনে নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ উপলক্ষে এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের নৌ পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মোঃ আলমগীর হোসেন।
এসময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নৌ পুলিশ নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, নৌপথে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স জারি করেছি। পুলিশ থাকবে আর কোনো চাঁদাবাজ থাকবে না, এটাই শেষ কথা। আপনাদের যদি কোন তথ্য থাকে, সেটা দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করবেন। আমরা পরিচয় গোপন রেখে তাৎক্ষণিক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।
নদী দূষণ প্রসঙ্গে আলমগীর হোসেন বলেন, নদী দূষণ হওয়ার জন্য আমরা সবাই দায়ী। নারায়ণগঞ্জে আগে নদীর যে নাব্যতা ছিল, সেই নাব্যতা এখন আর নেই। কলকারখানার বর্জ্য এসে নদী যেভাবে দূষণ করছে এটা যেমন ঠিক, তেমনি আমরাও বিভিন্নভাবে বর্জ্য ফেলে নদীকে দূষিত করছি। তাই টার্মিনালে মাইকিং এর মাধ্যমে এ বিষয়ে সকল যাত্রীদের সচেতন করার আহবান জানাচ্ছি।
নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর বিআইডব্লিউটিএ এর যুগ্ম পরিচালক মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন এর সভাপতিত্বে ও নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদ হোসেন এর সার্বিক তত্বাবধানে এসময় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ ডিইপিটিসি বিআইডব্লিউটি এর অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাজাহান, নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম আমিনুল হক, শ্রমিক নেতা মাহমুদ হোসেন ও মোঃ সাত্তার সহ বিভিন্ন কর্মকর্তা।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে স্ত্রীর জানাযায় মতি, কান্নাজড়িত কণ্ঠে চাইলেন ক্ষমা
কারাগারে থাকা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি ৩ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে তার সহধর্মিণী রোকেয়া রহমানের জানাজায় অংশ নিয়েছেন।
শনিবার (১ নভেম্বর) বেলা সোয়া ২টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের আইলপাড়া এলাকার বালুর মাঠে জানায়া অনুষ্ঠিত হয়। কড়া পুলিশি পাহারায় মতিউর রহমান মতি জানাযার মাঠে উপস্থিত হলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
স্ত্রী হারানো মতিকে দেখে তার আত্মীয়-স্বজনসহ উপস্থিত শত শত মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন। অঝোরে কাঁদতে থাকা মতিউর রহমান মতিও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
এসময় তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানাজায় উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশে বলেন, আমি দীর্ঘ ১০ মাস যাবত কারাগারে। আমার স্ত্রীর মৃত্যুর সময় আমি তার পাশে থাকতে পারিনি।
আমার দুর্ভাগ্য যে, এর আগে আমার বড় ভাই যখন মৃত্যুবরণ করেন, তখনও আমি কারাগারে ছিলাম। আজকেও আমার অনুপস্থিতিতে আপনারা আমার ভাইয়ের মতো সবাই আমার স্ত্রীর জানাযার জন্য সকল কিছু করেছেন।
তিনি আরও বলেন, তার সঙ্গে আমি ৩২ বছরের সংসার জীবন কাটিয়েছি। সে সবসময় আমাকে আগলে রেখেছেন। আমার স্ত্রী যদি চলার পথে আপনাদের সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ কিংবা ভুল করে থাকে, আমি তার হয়ে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই।
আপনারা সবাই তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং তার জন্য দোয়া করবেন। আমি তার জানাজায় অংশ নিতে পেরেছি, এটাই আমার জন্য অনেক।
পারিবারিক সূত্র জানায়, মতির সহধর্মিণী রোকেয়া রহমান দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন। গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোকেয়া রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বিকালে হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ এলাকায় নিয়ে আসা হলে শত শত নারী-পুরুষ বাড়িতে ছুটে আসে এক নজর তার মরদেহ এলাকার জন্য।
রোকেয়া রহমান এলাকারবাসীর কাছে সামাজিক ও মানবিক মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এলাকার অসহায় ও গরীব মানুষ বিয়ে, চিকিৎসা সহ কোনো সাহায্যের জন্য তার কাছে গিয়ে খালি হাতে ফেরেনি। তার মধ্যে কোন অহংকার ছিল না।
সাধারণভাবে সবার সাথে মিশতেন। জানাযার জন্য তার মরদেহ বাড়ি থেকে বের করার সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন শত শত নারী। অনেকে লাশবাহী গাড়ির পিছনে পিছনে ছুটে আসেন। এসময় এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠে।
এদিকে একাধিক মামলার আসামি হিসেবে মতিউর রহমান মতি কারাগারে থাকায়, স্ত্রীর জানাজায় অংশগ্রহণের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে উকিলের মাধ্যমে আবেদন করা হয়। সকালে কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছে ৩ ঘন্টার জন্য প্যারোলে মুক্তির কাগজ পত্র পৌছালে দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, মতিউর রহমান মতিকে কারা কর্তৃপক্ষ দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মোট ৩ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি দিয়েছেন। জানাজা ও দাফন কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে তাকে নিরাপত্তায় আনা হয় এবং সময় শেষে তাকে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।