সাম্য হত্যা মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর দাবি
Published: 15th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী এবং স্যার এ এফ রহমান হলের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যর হত্যা মামলা ‘দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল’-এ হস্তান্তরের দাবি জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘সোচ্চার’ এর ঢাবি শাখা এ দাবি জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ঢাবি শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দূর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সাম্য হত্যার তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
আরো পড়ুন:
ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্যর মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল কাল
ঢাবির মুরুব্বিয়ানা বন্ধ করতে হবে: শরিফ ওসমান
এ সময় তারা সাম্যের হত্যা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি এবং বিচারের জন্য মামলাটি ‘দ্রত বিচার ট্রাইবুনাল’ এ হস্তান্তরের দাবি জানান। এছাড়াও মানবাধিকার সংগঠনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নয় দফা দাবি জানান।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, বহিরাগত নিয়ন্ত্রণ ও যান চলাচলে শৃঙ্খলা; রেজিস্ট্রেশন ছাড়া দোকান ও যান চলাচল নিষিদ্ধ; উন্নত নজরদারি ও নিরাপত্তা অবকাঠামো; ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষের উচ্ছেদ; অভ্যন্তরীণ রুট নির্ধারণ; মেট্রো স্টেশন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে টহল; যানবাহনের গতি ও পার্কিং নিয়ন্ত্রণ; ২৪/৭ জরুরি সেবা ও রিপোর্টিং প্ল্যাটফর্ম; নারী হলগুলোর জন্য বিশেষ নিরাপত্তা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শাহীনুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক প্রত্ন পৃথু বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মুনির, যুগ্ম-সম্পাদক সাজিদ ইসলাম প্রমুখ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
৫ জুলাইয়ের পর আর কোনো আলোচনা নয়, আপনি বিদায় নেন
পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে চলমান আন্দোলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট জেলা প্রশাসক শের মোহাম্মদ মাহবুব মুরাদকে উদ্দেশে করে বলেছেন, ‘আপনি সরকারকে ভুল ম্যাসেজ দিচ্ছেন। কারো সঙ্গে আলোচনা না করে যা ইচ্ছা তাই করছেন। ক্রাশার মিল গুড়িয়ে দিচ্ছেন, অন্ধ কল্যাণ সমিতির স্থাপনা ভেঙে দিচ্ছেন। দু’এক নেতাকে বশ করে আপনি যদি মনে করেন, পার পেয়ে যাবেন তা হলে ভুল করবেন। ৫ জুলাইয়ের পর আপনার সঙ্গে আর কোনো আলোচনা নয়। আপনি বিদায় নেন।’
আজ বুধবার দুপুরে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় জেলা প্রশাসককে ‘সিলেট বিদ্বেষী’ বলে অ্যাখ্যা দেন আরিফুল হক।
পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ আজ এ সমাবেশের আয়োজন করে। সংগঠনটি সিলেট জেলা পাথর ও পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে আগামী শনিবার থেকে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। সমাবেশে পরিবহন নেতারা জেলা প্রশাসকের অপসারণ দাবি করেন। যখন সমাবেশে জেলা প্রশাসকের যখন অপসারণ দাবি হচ্ছিল ঠিক সেই মুহূর্তে বিএনপি-জামায়াত নেতাসহ অংশীজনদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন তিনি। বৈঠকে সিলেটের পাথর কোয়ারিসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন রাজনৈতিক নেতাসহ অংশীজনেরা।
সমাবেশে আরিফুল হক চৌধুরী আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেন, শ্রমিক-মালিকদের দাবিগুলো ন্যায্য ও যৌক্তিক। সরকার যদি দ্রুত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না নেয়, তাহলে সিলেটের অর্থনীতি থমকে যাবে।
সম্প্রতি পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে সিলেট জেলা পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। গত কয়েক মাস ধরে বিচ্ছিন্নভাবে স্মারক লিপি ও মিছিল মিটিংয়ের পর গত সপ্তাহে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছে সংগঠনটি। গত শনিবার থেকে ৪৮ ঘণ্টা লোড-আনলোডের কর্মবিরতি ও গত রোববার থেকে সিলেট জেলা সকল পণ্য পরিবহনে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করা হয়। এ অবস্থায় আগামী শনিবার থেকে নতুন করে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
বুধবার সমাবেশে তারা ৫ দফা দাবি উপস্থাপন করে। দাবিগুলো হচ্ছে- বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়া, ক্রাশার মেশিন ধ্বংসের অভিযান বন্ধ করা, পাথর পরিবহনকারী ট্রাক আটকের অবসান, চালকদের হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ, প্রাইভেট কোম্পানিকে গাড়ির ফিটনেস না দেওয়া ও ডাম্পিং আইন স্থগিত রাখা।
সমাবেশে আরিফুল হক ছাড়াও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুর রাজ্জাক, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, পরিবহন শ্রমিক নেতা মইনুল ইসলাম প্রমুখ।
অপর দিকে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকে জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, মহানগর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজউল হাসান লোদী কয়েস, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, জামায়াতের জেলা আমির হাবিবুর রহমান, মহানগর আমির ফখরুল ইসলাম প্রমুখ অংশ নেন।
সভায় উপস্থিত থাকা নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সনাতন পদ্ধতিতে পাথর কোয়ারি চালু, ক্রাশার মিলে অভিযান বন্ধ ও অন্ধ কল্যাণ সমিতির জায়গা থেকে উচ্ছেদ বন্ধের দাবি করেছি। জেলা প্রশাসক পজিটিভ। তিনি পাথর কোয়ারি ইজারা বন্ধের বিষয়টি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। ক্রাশার মিলে যাদের বৈধতা আছে তাদের সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শের মোহাম্মদ মাহবুব মুরাদ বলেন, ‘সবার সঙ্গেই সুসম্পর্ক রয়েছে। উনি (আরিফুল হক) কি জন্য আমাকে নিয়ে এত কথা বলেছেন তা তিনি ভালো বলতে পারবেন। পাথর কোয়ারিসহ বিভিন্ন দাবির ক্ষেত্রে সবার কথা শোনা হচ্ছে। দাবিগুলো ভেবে দেখা হচ্ছে।’