নাকবা দিবসে গাজাজুড়ে ইসরায়েলের হামলা, নিহত অন্তত ১১৫
Published: 16th, May 2025 GMT
১৫ মে ছিল নাকবা বা মহাবিপর্যয় দিবস। ৭৭ বছর আগে ফিলিস্তিনেদের ওপর নেমে আসা মহাবিপর্যয় ও তাঁদের ঘর হারানোর দিন এটা। সেই দুঃসহ স্মৃতি আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। সেই নির্যাতন-দখলদারত্ব আজও তাড়া করছে তাদের। তাই বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনিরা এ দিবস পালন করেন।
নাকবা দিবসের ৭৭তম বর্ষপূর্তিরতে গতকাল বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকাজুড়ে জোরদার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এসব হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১১৫ জন। নিহতদের বেশিরভাগ নারী–শিশু।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস এলাকায় গতকাল ভোরের দিকে চালানো হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৬১ জন। উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়ায় আল–তাওবাহ চিকিৎসাকেন্দ্রে ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রাণ গেছে আরও অন্তত ১৫ জনের। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার জেরে গাজাজুড়ে অন্তত তিনটি হাসপাতালের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এগুলো হলো—জাবালিয়ার আল–আওদা হাসপাতাল, খান ইউনিসের ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল এবং ইউরোপীয়ান হাসপাতাল।
আল–জাজিরার সংবাদদাতা তারেক আল আজৌম গাজার দেইর এল বালাহ এলাকা থেকে বলেন, গাজাবাসীর জন্য এটা আরেকটি রক্তাক্ত দিন। ইসরায়েলি বাহিনী আবাসিক এলাকাতেও নির্বিচারে বিমান হামলা চালিয়েছে। খান ইউনিসের অন্তত নয়টি বাড়িতে পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই হামলা চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুননাকবা দিবস: মহাবিপর্যয় থেকে মুক্তি পায়নি ফিলিস্তিনিরা১৬ মে ২০২২এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি এবং কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে পরোক্ষ যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলছে। এর মধ্যেই ইসরায়েলি বাহিনী মরিয়া আচরণ করছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলের মাটিতে হামলা চালায়। এতে আনুমানিক ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
আরও পড়ুননাকবা: ১০০ বছর আগে যেভাবে ইহুদি রাষ্ট্র প্রকল্পের শুরু১৭ ঘণ্টা আগেহামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে, উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৩ হাজার ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৯১৯ জন।
তবে গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়ের তথ্য বলছে, নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। তারা বলেছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ থাকা হাজারো মানুষকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন৭৭ বছর আগে ফিলিস্তিনিদের ওপর যেভাবে নেমে এসেছিল মহাবিপর্যয়১৪ মে ২০২৫আরও পড়ুননাকবা দিবস: আরও বড় মহাবিপর্যয়ের মুখোমুখি ফিলিস্তিনিরা১৫ মে ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’