প্রথম শ্রেণিতে পড়ে আয়ান। ছবি আঁকায় তার প্রচণ্ড আগ্রহ, রং-তুলিতে সে নিজের ছোট্ট স্বপ্নের জগৎ গড়ে তোলে। প্রতিদিনের মতো আজও সে স্কুলে গেলো। শ্রেণি শিক্ষক জানালেন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে অঙ্কন প্রতিযোগিতা হবে। হাতে একটা কাগজ দিয়ে বললেন, বাসায় নিয়ে বাবা-মাকে দেখাবে।
খুশিতে আয়ানের মন ভরে গেলো। তবে বাড়ি ফিরে মা আর বাবার অফিস আর নানা ব্যস্ততার ভিড়ে সে কথা বলতে পারলো না। এভাবে তিন দিন পার হয়ে গেলো। তৃতীয় দিন ক্লাসে বন্ধু রিহান বললো, আজই শেষ দিন, ফরম না নিলে প্রতিযোগিতায় অংশ নিবি কীভাবে? তাই আয়ান শিক্ষকের ফোন থেকে তার মাকে ফোন দিয়ে বিষয়টা বুঝিয়ে বললো।
মা বলেন, কে নিয়ে যাবে? আমরা তো দু’জনই ব্যস্ত। পড়াশোনায় মন দাও, এগুলো পরে হবে। ছোট্ট আয়ানের মনটা ভেঙে গেলো। বাড়ি ফিরে বিকেলে সে গেলো বাড়ির পাশের নতুন মাঠে। সেদিক দিয়ে ফিরছিলেন ওর মা। দূর থেকে দেখলেন, আয়ান মাটিতে একটা গর্ত খুঁড়ছে। মা কাছে গিয়ে বলেন– আয়ান,
কী করছো? আমি তো তোমাকে বলেছিলাম ময়লা-আবর্জনা ডাস্টবিনে ফেলতে, মাটিতে না।
আয়ান মাথা নিচু করে আস্তে বলে– মা, আমি আমার ইচ্ছেগুলোকে মাটিচাপা দিয়ে রাখছি। সময় পেলে পরে বের করবো।
মা নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে রইলেন।
ছোট্ট ছেলের মুখে এমন কথা শুনে তিনি যেন স্তব্ধ হয়ে গেলেন। হঠাৎই বুঝতে পারলেন, ছেলেটার ইচ্ছেগুলো কতোটা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ধীরে ধীরে আয়ানের কাঁধে হাত রেখে বললেন, এখনও সময় আছে, বাবা। চলো, আমরা একসাথে তোমার ফরমটা পূরণ করে ফেলি।
আয়ানের মুখে হাসি ফুটে উঠলো! এবার সে তার ইচ্ছের পথে, স্বপ্নের পথে এগিয়ে যেতে পারবে!
n দ্বাদশ শ্রেণি, ড.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড়ে বিবাহবিচ্ছেদের চার দিনের মাথায় লাউখেত থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
পঞ্চগড়ে স্বামীর মৃত্যুর দুই বছর পর সন্তানদের রেখে গোপনে বিয়ে করে ঘর ছেড়েছিলেন এক নারী। দ্বিতীয় বিয়ের প্রায় এক মাস পর বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁদের। এ ঘটনার চার দিনের মাথায় বাড়ির পাশের লাউখেত থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার দুপুরে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের ধামোর মধ্যপাড়া এলাকার একটি লাউখেত থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁর নাম তানজিনা আক্তার (৩৫)। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তানজিনার দ্বিতীয় স্বামী মিনাল হোসেনের বাবা দিলু হোসেনকে (৫৫) হেফাজতে নিয়েছে আটোয়ারী থানার পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, তানজিনা আক্তারের প্রথম স্বামী মজিবর রহমান প্রায় দুই বছর আগে মারা যান। তাঁদের দুটি ছেলে আছে। এর মধ্যে প্রায় এক মাস আগে স্থানীয় যুবক মিনাল হোসেনকে (২৭) গোপনে বিয়ে করে পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন তাঁরা। এর পর থেকেই মিনালকে ছেড়ে দিতে তানজিনার ওপর চাপ দিতে থাকে মিনালের পরিবার। গত ৩০ অক্টোবর তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এর পর থেকেই মিনালকে এলাকায় দেখা যায়নি।
পুলিশ জানায়, আজ সকালে ধামোর-মধ্যপাড়া এলাকার একটি লাউখেতে কয়েকজন লাউ তুলতে গিয়ে এক নারীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের জানান। এ সময় স্বজনেরা সেখানে গিয়ে লাশটি তানজিনার বলে শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে বারঘাটি পুলিশ তদন্তকেন্দ্র ও আটোয়ারী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। প্রাথমিক সুরতহাল শেষে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম সরকার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক সুরতহালে ওই নারীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর মৃত্যুর কারণ জানতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।