আমরা যুদ্ধ জিতেছি, তবে শান্তি চাই: শাহবাজ শরিফ
Published: 17th, May 2025 GMT
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ‘আমরা যুদ্ধ জিতেছি, তবে শান্তি চাই। আমরা শত্রুকে শিক্ষা দিয়েছি, তবে আমরা আগ্রাসনের নিন্দা করি। আমরা এই অঞ্চলে অন্য উন্নত দেশের মতো শান্তিপূর্ণ ও উন্নয়নশীল পরিবেশ চাই।’
শুক্রবার ‘অপারেশন বুনইয়ান উম মারসুস’-এর সাফল্য উদ্যাপন উপলক্ষে ইসলামাবাদে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় ভারতকে শান্তিপূর্ণ প্রতিবেশীর মতো সহাবস্থানের আহ্বান জানান তিনি। খবর দ্য ডনের
ইউম-ই-তাশাক্কুর বা ধন্যবাদ দিবস উপলক্ষে গতকাল ইসলামাবাদের পাকিস্তান মনুমেন্টে এক জাঁকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, তিন বাহিনীর প্রধানসহ বেসামরিক ও সামরিক শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শাহবাজ শরিফ বলেন, ৯ ও ১০ মে রাতে সেনাবাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ভারতের আগ্রাসনের ‘সীমা লঙ্ঘনের’ পর একটি পরিমিত প্রতিক্রিয়া দেওয়া হবে।
পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাত আড়াইটার দিকে সেনাপ্রধান আমাকে সিকিউর লাইনে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, অনুমতি দিন, যাতে শত্রুকে এমনভাবে আঘাত করি যে তারা আজীবন মনে রাখে।
শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তান পাল্টা হামলা চালানোর পর সেনাপ্রধান আবার বলেন, ‘আমরা জবাব দিয়েছি, এখন আমাদের কাছে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ আসছে। আপনার কী মত?’ আমি বলেছি, ‘যখন শত্রুর মাথা ঘুরে যায়, তখনই আসল আঘাত; তাই এই প্রস্তাব গ্রহণ করুন।’
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান বিমানবাহিনীর প্রযুক্তি শত্রুকে হতবাক করেছে এবং মিত্রদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে। এই সাফল্যের ফলে পাকিস্তানের সামরিক শক্তি এখন বিশ্বজুড়ে আলোচিত- যুক্তরাষ্ট্র থেকে জাপান পর্যন্ত।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।
আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু নেতারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। এ সময় তাঁদের কাছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’
হিন্দুধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজামণ্ডপ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
নেতারা বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদ্যাপন হবে বলে তাঁরা আশা করছি।
এ সময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পূজায় আমরা দুই দিন ছুটি পেয়েছি। এ জন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সবাই সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ করেছি, এক বছর ধরে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ–জাতিনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি।’
বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণানন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রীশ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।