বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, এখন দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
Published: 22nd, May 2025 GMT
বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা রাজধানীর কাকরাইল মোড়, মৎস্য ভবন মোড় ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়ে ‘অবস্থান কর্মসূচি’ চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি করছেন।
ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয় গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে।
ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে হাইকোর্ট সরাসরি খারিজ করে দেন।
আরও পড়ুনইশরাককে মেয়র ঘোষণা নিয়ে রিট খারিজের খবরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাস-মিছিল২ ঘণ্টা আগেহাইকোর্টের এই আদেশের খবর জানার পর কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান নেওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীরা আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে স্লোগান দেন, মিছিল করেন। তাঁরা আনন্দমিছিল নিয়ে কাকরাইল মসজিদ মোড় থেকে মৎস্য ভবন মোড়ের দিকে যান।
এরপর বিএনপির নেতা-কর্মীরা কাকরাইল মোড়সহ মৎস্য ভবন ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন। এখন তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছেন। এই দাবিতে তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
আরও পড়ুনইশরাককে মেয়র ঘোষণার গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট সরাসরি খারিজ৩ ঘণ্টা আগেবেলা দেড়টার দিকে কাকরাইল মোড়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভিড় বাড়তে দেখা যায়। অনেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে এই মোড়ে আসছিলেন। মোড়ে এসে তাঁরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। এসব স্লোগানের মধ্যে আছে—‘দফা এক, দাবি এক, আসিফের পদত্যাগ, দফা এক, দাবি এক, মাহফুজের পদত্যাগ’; ‘এই মুহূর্তে দরকার নির্বাচিত সরকার’; ‘ঢাকাবাসীর দাবি এক, আসিফের পদত্যাগ।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সভাপতি জহির উদ্দীন তুহিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি শুরু থেকেই আমাদের দাবি ছিল, দুই ছাত্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে। এ ছাড়া দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। যেহেতু এই দাবি এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি তাই আমরা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’
আরও পড়ুনইশরাকের মেয়র হিসেবে শপথ নিতে বাধা নেই: আইনজীবী কায়সার কামাল১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র ন ত র পদত য গ উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে হামলার নিন্দা ব্রিকসের, কাদের ওপর অতিরিক্ত ১০% শুল্ক বসানোর হুমকি দিলেন ট্রাম্প
ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে নেতারা ‘ভবিষ্যৎ না ভেবে দেওয়া’ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা আমদানি শুল্ক আরোপ এবং সম্প্রতি ইরানে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ হামলার কড়া সমালোচনা করেছেন। গতকাল রোববার ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল রাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এই সমালোচনার জবাবে হুমকি দিয়ে লিখেছেন, ‘যেকোনো দেশ, যারা ব্রিকসের যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নীতির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করবে, তাদের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এ নীতির কোনো ব্যতিক্রম হবে না।’
ব্রিকসের ১১টি উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে রয়েছে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশ। এই সংস্থা বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে এবং বৈশ্বিক উৎপাদনের ৪০ শতাংশের বেশি অবদান রাখে।
এই জোট অনেক বিষয়ে বিভক্ত হলেও যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা শুল্কনীতি ও আচরণের বিষয়ে তারা একমত। অবশ্য সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি।
সম্মেলনের যৌথ বিবৃতিতে ব্রিকস নেতারা বলেন, ‘একতরফাভাবে বৃদ্ধি করা শুল্ক নিয়ে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। কারণ, এই শুল্ক বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষতি করতে পারে।’
ইরানের পাশে ব্রিকস
ব্রিকস সম্মেলনে ইরানের প্রতি প্রতীকী সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সামরিক হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে। এই দুই দেশ ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ নিশানায় এসব হামলা চালায়।
চলতি বছরের এপ্রিলে ট্রাম্প তাঁর মিত্র ও প্রতিপক্ষ দেশগুলোকে একের পর এক শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। তবে বাজারে ভয়াবহ দরপতনের মুখে পড়ে কিছু সময়ের জন্য তা স্থগিত করেন।
ট্রাম্প হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আগামী ১ আগস্টের মধ্যে চুক্তি না হলে তিনি একতরফা শুল্ক আরোপ করবেন। তবে সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র যেমন ব্রাজিল, ভারত ও সৌদি আরবের প্রতি সম্মান রেখে যুক্তরাষ্ট্র বা ট্রাম্পের নাম কোনো জায়গায় সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি।
সম্মেলনের প্রেক্ষাপট ও অনুপস্থিতির বিষয়
প্রায় ২০ বছর আগে গঠিত ব্রিকস এখন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তির বিকল্প কেন্দ্র হিসেবে চীনের নেতৃত্বাধীন একটি শক্তিশালী মঞ্চ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তবে সদস্যসংখ্যা বাড়িয়ে ইরান, সৌদি আরবসহ নতুন নতুন দেশ যুক্ত হওয়ায় গাজা যুদ্ধ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য নিয়ে জোটের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা কঠিন হয়ে পড়েছে।
যেমন ব্রিকস সম্মিলিতভাবে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বে শান্তিপূর্ণ দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে অবস্থান নেয়। অথচ ইরান বহুদিন ধরে বলে আসছে, ইসরায়েলের ধ্বংস হওয়া উচিত।
একজন ইরানি কূটনীতিক বলেন, তাঁদের সরকারের পক্ষ থেকে ‘কিছু আপত্তি’ ব্রাজিলের আয়োজকদের জানিয়েছে। তবুও ইরান পুরো বিবৃতিকে প্রত্যাখ্যান করেনি।
ব্রাজিল সরকারের একটি সূত্র জানায়, এই স্পর্শকাতর অবস্থান থেকে বোঝা যায়, কেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকালের আলোচনায় অংশই নেননি।
সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপ্রযুক্তির অস্ত্রের সবচেয়ে বড় গ্রাহকদের একজন এবং বহুদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র।
গুরুত্বপূর্ণ দুই নেতা অনুপস্থিত
চলতি বছরের সম্মেলনের রাজনৈতিক গুরুত্ব কিছুটা কমে গেছে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়েরঅনুপস্থিতির কারণে। তিনি ১২ বছরের মধ্যে এবার প্রথম ব্রিকস সম্মেলনে উপস্থিত হননি।
এ ছাড়া রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সরাসরি সম্মেলনে আসেননি। তিনি ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে সম্মেলনে অংশ নেন। তাঁর বিরুদ্ধে ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।
সম্মেলনে পুতিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, ব্রিকস এখন বৈশ্বিক নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ এক শক্তি হয়ে উঠেছে।
এআই নিয়ে উদ্বেগ
সম্মেলনে নেতারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারে আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন গঠনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই প্রযুক্তি শুধু ধনী দেশগুলোর একচেটিয়া অধিকার হতে পারে না।
বর্তমানে এই খাতে যুক্তরাষ্ট্রের টেক জায়ান্টরা এগিয়ে থাকলেও চীন ও অন্যান্য দেশও দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।