হবিগঞ্জে হাট কাঁপাবে জিল্লু-ডন-সুলতান
Published: 23rd, May 2025 GMT
শাহিওয়াল জাতের ২০ মণ ওজনের ষাঁড়ের নাম জিল্লু। এক বছর ধরে গরুটি লালন-পালন করছেন হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নিশাপট গ্রামের খামারি তারেকুল ইসলাম সুজন। এবারের কোরবানির পশুর হাটের জন্য গরুটি প্রস্তুত করেছেন তিনি। শুধু জিল্লু নয়, ডন ও সুলতান নামে ১৫ থেকে ১৬ মণ ওজনের আরও দুটি ষাঁড় ঈদের বাজারের জন্য প্রস্তুত করেছেন তিনি।
একই গ্রামের শামীম মিয়া তাঁর খামারে লালন-পালন করেছেন শাহিওয়াল জাতের কালো রাজা ও লাল রাজাবাবু নামে দুটি গরু। তাঁর খামারে ৪ গরু থাকলেও ওই দুটি গরুই সবচেয়ে বড়। দুটির ওজন ৯ থেকে ১০ মণ। এছাড়া বানিয়াচং উপজেলার ভবানীপুর এলাকার রফিক ডেইরি ফার্মে বাহাদুর ও রবিন নামে দুটি ষাঁড় রয়েছে। ফিজিয়ান ও শাহিওয়াল জাতের ওই দুটি ষাঁড়ের ওজন ১০ থেকে ১২ মণ। কোরবানির বাজারে ষাঁড় দুটি তোলার প্রস্তুতি নিয়েছেন খামারি রফিক মিয়া; যার দাম হাঁকা হয়েছে ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা।
শায়েস্তাগঞ্জের নিশাপট গ্রামের খামারি তারেকুল ইসলাম সুজন বলেন, তাঁর খামারে থাকা এবারের সবচেয়ে বড় গরু জিল্লু। তাঁর খামারে ডন, সুলতানসহ বিভিন্ন জাতের আরও ৫টি গরু রয়েছে। এবারের পশুর হাটে সবক’টি বিক্রি করবেন তিনি। বাজারে দর ভালো থাকলে এসব ষাঁড় ৪-৫ লাখ টাকা করে বিক্রি করা যাবে।
একই গ্রামের খামারি শামিম মিয়া বলেন, এবারের কোরবানির পশুর হাটে তিনি ৪টি ষাঁড় বিক্রির জন্য তুলবেন। এসব ষাঁড়ের মধ্যে কালো রাজা ও লাল রাজাবাবু সবচেয়ে বড়। যদি বাজারে ভারতীয় গরু না আসে তাহলে প্রতিটি ষাঁড় ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী।
বানিয়াচং উপজেলার ভবানীপুরের খামারি রফিক বলেন, তাঁর খামারের গরুগুলোকে দেশি খাবার দেওয়ার কারণে এর চাহিদা অন্য গরুর চেয়ে বেশি থাকে। যে কারণে ক্রেতারা সরাসরি খামারে এসে পছন্দের গরু কিনে নিয়ে যান। ঈদের বাজারে স্থানীয় খামারিরা যেন ভালো দাম পান সেজন্য ভারতীয় গরু আসা বন্ধ করার দাবি জানান তিনি।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, জেলায় ৯টি উপজেলায় প্রায় ৭ হাজার ২৯৯টি ছোট-বড় গরুর খামার রয়েছে। এ বছর জেলায় কোরবানির চাহিদা রয়েছে প্রায় ৭০ হাজার ৫৮৩টি। মজুত রয়েছে ৭১ হাজার ৭৪৬টি গরু; যা খামার ও বাড়িতে কৃষকরা কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছেন। এতে এ বছর জেলায় কোরবানির পশুর সংকট থাকবে না।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক রব ন র র জন য কর ছ ন উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
নেত্রকোনায় পোস্টার লাগানো নিয়ে বিএনপির দলীয় কোন্দলে একজন নিহত, আহত ৬
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বিএনপির এক পক্ষের হামলায় অন্য পক্ষের একজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ছয়জন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের আব্বাছনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম শফিকুল ইসলাম ওরফে সফু (৪০)। তিনি আব্বাছনগর গ্রামের বাসিন্দা এবং কাঠের মিলে কাজ করতেন।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হামিদুর রহমান (রাশেদ) আসন্ন ঈদ উপলক্ষে দুর্গাপুরে শুভেচ্ছা পোস্টার ও ছোট ছোট বিলবোর্ড পাঠান। তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা গতকাল দুপুরে দুর্গাপুর বাজারসহ স্থানীয় বিএনপি কার্যালয়ে সেই পোস্টার ও বিলবোর্ড লাগাতে যান। দুর্গাপুর পৌরসভার পুলিশ মোড় এলাকায় বিলবোর্ড টানানোর সময় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন এতে বাধা দেন। পরে হামিদুর রহমান বিষয়টি দুর্গাপুর থানা পুলিশকে লিখিতভাবে জানান। এতে জামাল উদ্দিন আরও ক্ষিপ্ত হন। পরে তাঁর নেতৃত্বে রাত সাড়ে আটটার দিকে ২৫-৩০টি মোটরসাইকেলে এক দল লোক আব্বাছনগর গ্রামে গিয়ে হামিদুর রহমানের গ্রামের বাড়িতে হামলা চালান। তাঁরা আব্বাছনগর বাজারেও হামলা এবং ভাঙচুর করে। হামলায় হামিদুর রহমানের ভাতিজা শফিকুল ইসলাম নিহত হন। এ সময় আরও ছয়জন আহত হন।
নিহত ব্যক্তির স্বজনদের অভিযোগ, জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে মোটরসাইকেল ও একটি পিকআপে করে দেশি অস্ত্র এনে হামলা চালানো হয়। একপর্যায়ে তাঁরা গুলি ছোড়েন। শফিকুল পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। খবর পেয়ে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানসহ পুলিশ সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
শাকিল নামের হামিদুর রহমানের এক ভাতিজা বলেন, ‘গতকাল বেলা দেড়টার দিকে দুর্গাপুর পৌরসভার পুলিশ মোড় এলাকায় বিলবোর্ড টানাতে গেলে জামাল উদ্দিন ও তাঁর লোকজন বাধা দেন। তাঁরা আমাদের ৪০টি বেলবোর্ড ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন। এরপর আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিই। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে রাতে জামাল উদ্দিন ও তাঁর সহযোগীরা আমাদের বাড়িঘরে হামলা ও আমার চাচাতো ভাই শফিকুলকে গুলি করে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
হামিদুর রহমান বিএনপির সাবেক হুইপ (পরে এলডিপি নেতা) আইনজীবী আবদুল করিম আব্বাছীর ভাতিজা। অপর পক্ষের জামাল উদ্দিন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইমাম হোসেন আবু চানের ছেলে।
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত জামাল উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ওসি মাহমুদুলের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, গুলির ঘটনা ঘটেছে কি না, তা এখনো স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।