লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি, নারীসহ আহত ৯
Published: 23rd, May 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতির সময় চাহিদামতো অর্থ ও মালামাল না পেয়ে সশস্ত্র ডাকাতরা মরদেহের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এ সময় ডাকাতের হামলায় নারীসহ ৯ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের তিলপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্বজনদের চোখের সামনে মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাতের এই দৃশ্য এলাকাজুড়ে সৃষ্টি করেছে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক। স্থানীয়দের দাবি, এমন জঘন্য ও ঘৃণিত কাজ আগে কখনো দেখেননি তারা।
ডাকাতের হামলায় আহতরা হলেন- গাড়ির চালক মো.
ভুক্তভোগীদের স্বজনদের ভাষ্যমতে, পূর্বভাগ ইউনিয়নের মুকবুলপুর গ্রামের ছবদর আলী নামে এক ব্যক্তি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার মিরপুর আহসানিয়া হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মারা যান তিনি। এর কিছুক্ষণ পরই ঢাকা থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়িতে ফেরার পথে বুড়িশ্বর ইউনিয়নের তিলপাড়া এলাকায় আসলে সশস্ত্র ডাকাতরা সড়কে গাছ ফেলে পথ রোধ করে গাড়ি আটক করেন। এরপর গাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। মরদেহের সঙ্গে থাকা স্বজনদের কাছ থেকে ৯টি মুঠোফোন ও নগদ অর্ধলাখ টাকা হাতিয়ে নেয় ডাকাত দল।
ডাকাতদের চাহিদা অনুযায়ী অর্থ ও মালামাল না পাওয়ায় মরদেহের ওপরও হামলা করা হয় বলে দাবি করেন নিহতের ছেলে মো. আলমগীর মিয়া।
আলমগীর মিয়া বলেন, টাকা পয়সা নিছে সেটা এতোটা কষ্টদায়ক না। কিন্তু আমার বাবা একটি মৃত লাশ। তার ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। বাবার লাশ দাফন করে আইনগত পদক্ষেপের দিকে অগ্রসর হব।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মুসলে উদ্দিন বলেন, ভোর সকাল এবং সন্ধ্যায় এই রাস্তাটি ভুতুড়ে জায়গায় পরিণত হয়। এই সড়কে কিছুদিন পরপর ডাকাতি হয়। রাতের চেয়ে বেশি দিনে হয়।
আজহারুল ইসলাম দুর্জয় বলেন, ঢাকা থেকে নিরাপদে বাড়িতে ফিরতে পারলেও এই সড়কটিতে আসার পর আতঙ্কে সময় কাটে।
স্থানীয় আইনজীবী মো. রেজাউল হক আমজাদ বলেন, এটি কেবল ডাকাতি নয়, লাশবাহী গাড়িতে হামলা। যেখানে মর্যাদার শেষ চিহ্নটুকুও রক্ষা পায়নি। স্বজন হারানোর বেদনায় ভেঙে পড়া একটি পরিবারের ওপর এমন ডাকাতির হামলা খুবই ন্যক্কারজনক।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম ডাকাতির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, এ এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ। এর আগেও একাধিকবার ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা নাসরিন বলেন, লাশবাহী গাড়িতে ডাকাতি খুবই পীড়াদায়ক।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
বাবাকে না পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে সড়কে যায় শিশু, মুহূর্তে ট্রাকচাপায় নিহত
ফেনীতে ট্রাকচাপায় এক শিশু নিহত হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে ফেনী শহরের রামপুর এলাকার সৈয়দবাড়ি-তাকিয়া সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুর নাম মোহাম্মদ জিসান (৫)। সে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দরবার শরীফ ইউনিয়নের চরকালিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলমগীরের ছেলে। আলমগীর পরিবার নিয়ে ফেনী শহরের রামপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা দেড়টার দিকে শহরের রামপুর এলাকার সৈয়দবাড়ি-তাকিয়া সড়কের পাশের একটি বস্তি ঘর থেকে শিশু জিসান সবার অগচরে বেরিয়ে সড়কে উঠে পড়ে। এ সময় ওই সড়কের চলাচলরত পণ্যবাহী একটি ট্রাক জিসানকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে জিসানের বাবা ও স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত জিসানকে উদ্ধার করে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জিসানকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিশুর বাবা মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, তাঁর তিন সন্তানের মধ্যে জিসান ছোট। জিসানের মা দুপুরে অন্য স্থানে গেলে তিনি ও জিসান ঘরের মধ্যে ছিলেন। একপর্যায়ে তিনি টয়লেটে গেলে জিসান তাঁকে খোঁজ করে না পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন। মুহূর্তেই ওই সড়কে চলাচলরত একটি ট্রাক তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামছুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য নিহত শিশুর মরদেহ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনায়জড়িত ট্রাক ও চালককে আটকের চেষ্টা চলছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা চলমান।