জোয়ারের পানিতে খালে ভেসে গেল অর্ধশতাধিক গরু, ২৬টি মৃত অবস্থায় উদ্ধার
Published: 23rd, May 2025 GMT
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের খালে জোয়ারের পানির তোড়ে অর্ধশতাধিক গরু ভেসে গেছে। আজ শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে হোসেন্দী ইউনিয়নের ভাটি বলাকী গ্রাম–সংলগ্ন খালে এ ঘটনার পর সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৬টি মৃত গরু উদ্ধার করা হয়েছে। এতে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাটি বলাকী গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রায় সবার গরু রয়েছে। গ্রামের মানুষ প্রতিদিন গ্রাম-সংলগ্ন চরে খাল পাড়ি দিয়ে শতাধিক গরু ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যান। ঘাস খেয়ে প্রতিদিন বিকেলে গরুগুলো আবার গোয়ালঘরে ফিরে আসে। শুক্রবার বিকেলে খাল জোয়ারের পানিতে ভরে যায়। কচুরিপানায়ও পূর্ণ হয়ে যায়। বিকেলে চর থেকে গরু খাল পার হচ্ছিল। সে সময় জোয়ারের পানির স্রোতে এবং কচুরিপানার চাপে গরুগুলো তলিয়ে যায়।
তবে উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে ৩৬টি গরু পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়েছে বলে জানান গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, ভাটি বলাকী গ্রামের কৃষক মহসিনের চারটি, নাহিদ ইসলামের তিনটি, ইয়ানূর হোসেনের তিনটি, এমরান মিয়ার দুটি, মাসুম মিয়ার একটি, আবুল হোসেনের তিনটি, শাহজালালের তিনটি, কবির হোসেন খানের তিনটি, শরিফ হোসেনের তিনটি, তরিকুল ইসলামের দুটিসহ অর্ধশতাধিক গরু পানিতে ডুবে যায়।
ভুক্তভোগী কৃষক মহসিন মিয়া বলেন, ‘এমন ঘটনা জীবনেও ঘটেনি। এমন কিছু ঘটতে পারে, তা আমরা চিন্তাও করিনি। আমার চারটি গরু পানিতে ডুবে গেছে। আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি। পথের ফকির হয়ে গেছি।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ত নট
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি