জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চলমান কর্মবিরতির কারণে দেশের রাজস্ব সংগ্রহ কার্যক্রমে চরম অচলাবস্থা বিরাজ করছে।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে সোমবার (২৬ মে) আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ছাড়া সব ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালন করবেন কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
এনবিআর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে থাকায় আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। কর্মবিরতির ফলে প্রতিদিন রাজস্ব আদায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে শুল্ক আদায়ে বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। বন্দরে পণ্য খালাস ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ধীরগতির হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
আরো পড়ুন:
যে কারণে এনবিআরকে বিভক্ত করা হলো
সিপিডির গবেষণা: ২০২৩ সালে ২ লাখ ২৬ হাজার ২৩৬ কোটি টাকার কর ফাঁকি
কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলসহ চার দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। সংস্কার ঐক্য পরিষদের চার দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- জারি করা অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। অবিলম্বে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করতে হবে। অংশীজনের মতামত নিয়ে টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।
সংস্কার ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অসহযোগ কর্মসূচি শুরু হয়েছে ২১ মে থেকে। এর ধারাবাহিকতায় আজ ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত দেশের সব ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে। ২৬ মে থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ব্যতীত সব ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালন করা হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এনবিআরের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় দীর্ঘমেয়াদি কর্মবিরতি থাকলে জাতীয় অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। রাজস্ব ঘাটতি বাজেট বাস্তবায়ন ব্যাহত করতে পারে এবং উন্নয়ন খাতেও এর প্রভাব পড়তে পারে। এ কারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে চলমান অচলাবস্থা নিরসনে অবিলম্বে সরকারের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। অন্যথায় রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সবকিছুতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগকে (ইআরডি) সম্প্রতি এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। যার একটি রাজস্ব নীতি অপরটি রাজস্ব ব্যবস্থাপনা।এর প্রতিবাদে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কয়েকদিন ধরে নানা কর্মসূচি দিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার তাদের দাবির বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া না দেওয়ায় এবার অসহযোগ কর্মসূচির ঘোষণার মাধ্যমে কর্মবিরতি পালন করছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
ঢাকা/এনএফ/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এনব আর কর মকর ত ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ: ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল
মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের নানা অনিয়ম নিয়ে রাইজিংবিডিতে ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ডেরা রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক (সিনিয়র সহকারী সচিব) শেখ রাশেদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন করেন। নানা অনিয়মের কারণে তাদের লাইসেন্স নামঞ্জুর করা হয়েছে। রিসোর্টের লাইসেন্স না থাকায় প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘ফসলি জমি দখল করে ডেরা রিসোর্ট নির্মাণ, বিপাকে কৃষক’; ১৯ মার্চ ‘ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ডেরা রিসোর্ট, তদন্ত কমিটি গঠন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরার লাইসেন্স নামঞ্জুর করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ডেরা রিসোর্ট নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদক অনুসন্ধান করে ডেরা রিসোর্টের নানা অনিয়ম তুলে এনেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়ন করাটাই বড় কাজ। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে।”
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, “লাইসেন্সের বিষয়ে কোন নোটিশ এখনও পাইনি আমরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও জানা নেই। যদি লাইসেন্স বাতিল করে থাকে, তাহলে আমরা আইনিভাবে বিষয়টি সমাধান করব।”
এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এশিউর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ঢাকা/চন্দন/এস