যত বাধা, যত চাপই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর থাকুক না কেন, তাঁকে কাজ করে যেতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। একই সঙ্গে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ চেয়েছেন তিনি।

আজ রোববার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর যে ঐতিহাসিক দায়িত্ব নিয়েছেন—গণহত্যাকারীদের বিচার এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের যে কাজ, তা সম্পন্ন করেই তাঁকে যেতে হবে। যত বাধা, যত চাপই প্রফেসর ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর থাকুক না কেন, তাঁকে কাজ করে যেতে হবে।’

দেশের সার্বিক রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত সমস্যা থাকায় ফ্যাসিস্টদের ফিরে আসার আশঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে সাকি বলেন, এ জন্য তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) সবার ঐক্য কামনা করেছেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, অনেক ধরনের অনাস্থা তৈরি হচ্ছে, দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে হবে। এ জন্য সবার মধ্যে আলোচনা হওয়া দরকার। জনগণ দৃশ্যমান বিচার দেখতে চায়। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এই বিচারকাজে সরকারের দিক থেকে বিচার বিভাগকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বর থেকে জুনের কথা বলা হয়েছে উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের নেতা বলেন, ‘আমরা বলেছি, একটা নির্দিষ্ট মাস ও সপ্তাহ কিংবা সুনির্দিষ্ট তারিখ বলা যেতে পারে।’

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, ঐক্যের ক্ষেত্রে যেসব বিষয় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তাজনিত ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা কম হয়েছে। তাঁরা একটি রাজনৈতিক ঐক্য কাউন্সিল গঠনের কথা বলেছেন। আরেকটি বিষয়, জুলাইয়ের স্পিরিট (চেতনা) একদল ধারণ করে আর অন্যরা জুলাইবিরোধী—এ রকম পরিবেশ তৈরি করা হলে সেটিও যেন সরকার গুরুত্বের সঙ্গে দেখে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে

১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।

এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ