ভারী বৃষ্টিপাতের কবলে পড়েছে ভারতের মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাই। আজ সোমবার শহরটিতে ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মুম্বাইয়ে ১০৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হলো। বৃষ্টির কারণে শহরে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সোমবার দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু মুম্বাইয়ের দিকে অগ্রসর হয়েছে। সাধারণত ১১ জুন মৌসুমি বায়ুর আগমন ঘটে। অর্থাৎ এবার ১৬ দিন আগেই বর্ষাকাল এসেছে।

বৃষ্টিপাতের রেকর্ড

টানা ভারী বৃষ্টিতে মুম্বাইয়ে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এবারের বৃষ্টিপাত ১৯১৮ সালের পুরোনো রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।

বৃহনমুম্বাই মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের (বিএমসি) রেকর্ড অনুযায়ী, গতকাল রোববার মধ্যরাত থেকে সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত দক্ষিণ মুম্বাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

অন্যদিকে কলাবা অবজারভেটরির তথ্য অনুযায়ী, এ সময় মুম্বাইয়ে সর্বোচ্চ ২৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল ১৯১৮ সালের মে মাসে। তখন ২৭৯ মিলিমিটার রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছিল।

৭৫ বছরের মধ্যে আগাম বর্ষাকাল

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মুম্বাইয়ে সাধারণত বর্ষা মৌসুম শুরু হয় ১১ জুন। গত বছর শুরু হয়েছিল ৬ জুন। কিন্তু গতকাল রোববার (২৫ মে) রাত থেকে বৃষ্টিপাতের কারণে মুম্বাইয়ে ৭৫ বছরের মধ্যে আগাম বর্ষা শুরু হয়ে গেল।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞানী সুষমা নায়ার পিটিআইকে বলেছেন, ২৬ মে মুম্বাইয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে মৌসুমি বায়ু বয়ে গেছে। গত ৭৫ বছরে এটিই সবচেয়ে আগেভাগে বর্ষা আসার রেকর্ড।

বৃষ্টির কারণে মুম্বাই, থানে, রায়গড় এবং রত্নগিরিতে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ছাড়া কর্ণাটক, কেরালা ও তামিলনাডুর কিছু অংশেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

ভারি বৃষ্টির কারণে মুম্বাইয়ের অর্লি মেট্রো স্টেশনে পানি উঠে গেছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, মুম্বাইয়ের অর্লি পাতাল রেলস্টেশনে পানি উঠে গেছে। শুধু স্টেশনের ফটকে নয়, মেট্রো স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম এবং মেট্রোতে ওঠার জন্য অপেক্ষা করার জায়গাও পানিতে ভেসে গেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ