২০০৫ সালে লাক্স বাংলাদেশের হাত ধরে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্ম বদলে দিয়েছে বাংলাদেশের বিনোদনজগতের চেহারা। এখান থেকেই উঠে এসেছেন আজমেরী হক বাঁধন, বিদ্যা সিনহা মিম, মেহজাবীন চৌধুরী, জাকিয়া বারী মম, আফসানা আরা বিন্দু, নাজিফা তুষি, নাজিয়া হক অর্ষা, মুমতাহিনা টয়াসহ দেশের অনেক জনপ্রিয় তারকা। সাত বছর পর আবারও ফিরছে বহুল আলোচিত এই রিয়েলিটি শো।

আয়োজকেরা জানিয়েছেন, প্রতিযোগিতার দশম আসর ঘিরে এবারের আয়োজন আরও বিস্তৃত, আরও আধুনিক সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এবার খোঁজা হচ্ছে এমন প্রতিযোগীদের, যাঁদের মধ্যে আছে অভিনয়ের প্যাশন, স্টাইল নিয়ে নিজস্ব চিন্তা আর কনটেন্ট মেকিংয়ের মাধ্যমে নিজের গল্প বলার ইচ্ছা।

লাক্স সুপারস্টার সব সময়ই পরিচিত ছিল একটি গ্রুমিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে। যেখানে অংশগ্রহণকারীরা তারকা হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে শেখেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও অভিনয়, স্টাইলিং, কনটেন্ট মেকিংসহ বিভিন্ন বিষয়ে অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদের শেখাতে ও সাহায্য করতে পুরো জার্নিতে থাকবেন ইন্ডাস্ট্রির অভিজ্ঞ ও নামকরা শিল্পী, ইনফ্লুয়েন্সার আর স্টাইলিস্টরা। এই আসরে বিচারকের আসনে থাকছেন জনপ্রিয় তিন মুখ—অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী, জয়া আহসান ও নির্মাতা রায়হান রাফী।

২০০৯ সালে লাক্স সুপারস্টার বিজয়ী হয়ে শোবিজে পা রাখেন মেহজাবীন চৌধুরী। সেই মঞ্চেই বিচারক হিসেবে ফেরার অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে মনে হচ্ছে, জীবন যেন পূর্ণ এক বৃত্তে ঘুরে এসেছে। যে মঞ্চ একসময় আমাকে সবকিছু দিয়েছিল, আজ আমি সেই একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে অন্য কারও জীবনের যাত্রাপথ গঠনে ভূমিকা রাখতে যাচ্ছি—এটা এক বিশাল সম্মান আর একই সঙ্গে অনেক বড় দায়িত্বও।’ মেহজাবীন আরও বলেন, ‘এই দায়িত্বে নিযুক্ত হওয়া আমার ক্যারিয়ারে আরেকটি গর্বের পালক যোগ করেছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত, কৃতজ্ঞ এবং রোমাঞ্চিত এই নতুন অধ্যায়ের (বিচারক হিসেবে) জন্য—একটি অধ্যায়, যেখানে আমি দেখতে পাব নতুন প্রতিভার উত্থান, যেমনটা একসময় লাক্সের মেয়েরা করেছে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির এখনো নতুন প্রতিভার প্রয়োজন রয়েছে এবং আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি এই সুন্দর যাত্রার জন্য। ধন্যবাদ ইউনিলিভার, ধন্যবাদ লাক্স এবং এই উদ্যোগ–সংশ্লিষ্ট সবাইকে।’

দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান তাঁর ২৫ বছরের ক্যারিয়ারে কাজ করেছেন অনেক নাটক, সিরিজ ও চলচ্চিত্রে। এবারের লাক্স সুপারস্টার নিয়ে জয়া বলেন, ‘এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে মেধাবী কিছু মেয়ে বের হবে। যেহেতু আমি অভিনয়শিল্পী, চাইব যে ইন্ডাস্ট্রিতে আরও ভালো ভালো অভিনেতা আসুক। আমি সিনেমায় নতুন নতুন মুখ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সব সময় চেয়েছি মেধাবীরা বড় পর্দাকে সমৃদ্ধ করুক। এখান থেকেও যদি মেধাবী কাউকে পাই, অবশ্যই তাকে নিয়ে কাজ করতে চাইব। আমরা সবাই মিলে তাকে আরও সুন্দর করে তৈরি করব। অভিনয়ের বাইরে এবার আরও বেশ কিছু বিষয় যুক্ত হয়েছে, আশা করি এখান থেকে বেরিয়ে তারা সেসব সেক্টরেও নিজেকে মেলে ধরবে।’

‘পরাণ’, ‘তুফান’-এর মতো ব্যবসাসফল সিনেমার পরিচালক রায়হান রাফী এবার ক্যামেরার সামনে আসছেন লাক্স সুপারস্টারের বিচারক হিসেবে। এ বিষয়ে রায়হান রাফী বলেন, ‘লাক্স সুপারস্টারের মাধ্যমে আমরা অনেক তারকা পেয়েছি। এখন দেশে কিছুটা পারফরমার–সংকট চলছে। চাই এখান থেকে মেধাবীরা বেরিয়ে আসুক, যারা ইন্ডাস্ট্রির স্বার্থে কাজ করবে। লাক্স অনেক বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিকে নতুন মুখ দিচ্ছে, একটা বিরতির পর আবার এটা শুরু হওয়াতে আমি আশাবাদী, এবারও একঝাঁক মেধাবী পাবে এই ইন্ডাস্ট্রি।’

এবার এমন একটি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করার সুযোগ পাচ্ছেন আপনিও। আপনার বয়স যদি হয় ১৮ থেকে ২৭—অভিনয়, স্টাইলিং আর কনটেন্ট মেকিংয়ে যদি থাকে প্যাশন, তাহলে এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে www.

luxsuperstar.com-এ ভিজিট করে। রেজিস্ট্রেশন চলবে আগামী ১২ জুন ২০২৫ পর্যন্ত। বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন লাক্স বাংলাদেশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ক স স প রস ট র ইন ড স ট র ম হজ ব ন ব চ রক

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা

রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।

গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।

উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।

সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।

ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।

তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।

মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।

রাজশাহী কালেক্টরেট মাঠে বইমেলা উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে আলোচনা সভা। গতকাল রোববার সন্ধ্যায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ