ছাত্রীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক: নোবিপ্রবির সেই শিক্ষককে চাকর
Published: 26th, May 2025 GMT
নিজ বিভাগের ছাত্রীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর দায়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) এক শিক্ষককে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
ওই শিক্ষক হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এইচএম মোস্তাফিজুর রহমান।
সোমবার (২৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তামজিদ হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫তম রিজেন্ট বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
আরো পড়ুন:
তিতুমীর কলেজে বৈষম্যবিরোধীসহ সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রদলের হামলা
রাবির ২ ইউনিটে ভর্তির বিভাগ পছন্দক্রম প্রক্রিয়া শুরু
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগ, দাখিলকৃত প্রমাণাদি, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশ এবং আইনানুগ মতামত প্রদান সংক্রান্ত কমিটির পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে অভিযোগটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
অভিযোগের জবাবও সন্তোষজনক না হওয়ায় ৬৫তম রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা বিধির আলোকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শোকজ নোটিশে অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষক এইচএম মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগকারী শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে প্রতারণা করে অসদাচরণ করেছেন।
অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিবাহবহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে নৈতিক স্খলন ঘটিয়েছেন। অভিযোগকারী শিক্ষার্থীকে নিয়ে নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে অবস্থিত শিক্ষক অ্যাপার্টমেন্ট ‘শঙ্খচিল’ এ অনৈতিক উদ্দেশ্যে অবস্থান করে অসদাচরণ এবং নৈতিক স্খলন ঘটিয়েছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক এইচ.
গত বছরের ২৩ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর অভিযোগত্রে ওই ছাত্রী বলেন, “২০২২ সালের ২৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ১৪ মার্চ পর্যন্ত দীর্ঘ তিনমাস তিনি (শিক্ষক) আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক জড়ানোর জন্য আমাকে মানসিক অত্যাচার করে। পরবর্তীতে আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না চাইলে ও সব জায়গা থেকে তাকে ব্লক দিলে তিনি (শিক্ষক) অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকতেন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে কল দিয়ে তিনি বলতেন, আমাকে পেলে তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন।”
তিনি বলেন, “পরে তিনি আমার মায়ের নম্বর জোগাড় করে ফোন দিয়ে বলেন, ‘পৃথিবীর সব সুখ আমি আপনার মেয়েকে দেব, কোনো স্বামী এই পৃথিবীতে দিতে পারবে কিনা আমি জানি না।’ তাও আমার মা নিষেধ করে দেন।”
অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থী আরো লেখেন, “২০২৩ সালের মার্চে শিক্ষক দেশে ফিরে এসে আমার আশপাশে থাকার আগ্রহ জানান, এবং একপর্যায়ে আমাকে ঢাকায় ডেকে নিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পর্ক চালিয়ে যান। কিন্তু ১৩ অক্টোবর চট্টগ্রামে গিয়ে অন্য এক নারীকে বিয়ে করেন তিনি, যার সঙ্গে পূর্বে থেকেই সম্পর্ক ছিল।”
ঘটনার পর ৩০ অক্টোবর অভিযুক্ত শিক্ষককে সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং ৬ ফেব্রুয়ারি সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তদন্ত শেষে এখন স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ কর শ ক ষকক
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে ছাত্রদল-শিবিরের হাতাহাতি, রাতে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার নগরীর আগ্রাবাদে কলেজের মূল ফটকের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটেছে। রাতে ছাত্রশিবির সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছে, ছাত্রদলের হামলায় তাদের তিনকর্মী আহত হয়েছেন।
পরে ছাত্রদল বিজ্ঞপ্তি দিয়ে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছিল। বরং শিবির ছাত্রদলের ওপর হামলা চালিয়েছে।
ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক জাহিদুল আলম জয় জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার্থীদের সহযোগিতার জন্য ছাত্রশিবির কলেজের সামনে একটি হেল্পডেস্ক স্থাপন করে। সেখানে পরীক্ষার্থীদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা এবং অভিভাবকদের জন্য পানি পান ও বসার ব্যবস্থা ছিল। সকালে ছাত্রদলের কয়েকজন কর্মী এসে হেল্পডেস্ক বন্ধ করতে বলে এবং হুমকি দেন। এরপর শিবিরের কর্মীরা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকলে ছাত্রদল হঠাৎ হামলা চালায়। এতে তিনজন আহত হন। আহতরা হলেন- শিবির মহানগর দক্ষিণ কলেজ শাখার সম্পাদক মোজাহেরুল ইসলাম, কামরুজ্জামান জীবন ও আব্দুল হাদী রাহি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের হেল্প করতে গিয়ে ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের মধ্যে শুধু কথা কাটাকাটি হয়েছে। হামলা-মারামারি কিছুই হয়নি। পরে আবার তারা নিজেরাই মীমাংসা করে নিয়েছে।
নগরের ডবলমুরিং থানার ওসি কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। একটু ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। কেউ আহত হয়েছে, এমন তথ্য নেই। কেউ লিখিত অভিযোগও করেনি।