রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফা আলোচনা জুনে
Published: 26th, May 2025 GMT
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জুনের প্রথম সপ্তাহে বা ঈদের আগে সংস্কার কাজ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় আলোচনা শুরু করবে ঐকমত্য কমিশন।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এই আলোচনার উদ্বোধন করবেন। গত ১৯ মে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের প্রথম দফায় আলোচনা শেষ হয়।
সোমবার (২৬ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ঐকমত্য কমিশনের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় ঐকমত্য কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।
আরো পড়ুন:
প্রতিটি নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: প্রধান উপদেষ্টা
নির্বাচন ৩০ জুনের ওই পারে যাবে না, সবাই সন্তুষ্ট: প্রেস সচিব
এ সময় সংস্কার প্রক্রিয়া ও নির্বাচন বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি নাগরিক সমাজ ও তৃণমূলের সংগঠনগুলোকে সম্পৃক্ত করে জনসচেতনতা বাড়িয়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জনগণকে নির্বাচনমুখী করতে হবে। কেউ যেন ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নিতে না পারে সেই বিষয়ে নাগরিকদের সচেতন করতে হবে। শৃঙ্খলা আনতে হবে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নিরাপদ ভোটের আয়োজন করতে হবে।”
“এত বড় অভ্যুত্থানের পর যে বাংলাদেশ আমরা পেয়েছিলাম এটা যেন তেমন বাংলাদেশই রয়ে না যায়,” বলেন তিনি।
আজকের সভায় অতীতে বিভিন্ন নির্বাচনে অনিয়মের সাথে যারা জড়িত তাদের ভূমিকা তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়।
কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, এ বিষয়ে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যেই ঐকমত্য প্রকাশ করেছে।
কমিশন সদস্য আইয়ুব ভূঁইয়া অবিলম্বে জনপ্রশাসন সংস্কার বাস্তবায়ন কমিশন গঠনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “১৯৮২ সালে এনাম কমিশন বিভিন্ন সরকারি সংস্থার যে অরগানোগ্রাম তৈরি করেছিল সেটাই তাদের এখনো রয়ে গেছে।ইতোমধ্যেই বিভিন্ন সংস্থা অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে এবং নতুন অনেক সংস্থা গঠন করা হয়েছে। এ কমিশন গঠন করা হলে এই অরগানোগ্রামগুলো পুনঃগঠন করা যাবে।”
তিনি বলেন, “এনবিআর সংস্কারে জনপ্রশাসন কমিশনের সুপারিশ ছাড়া আরো দুটি কমিশন কাজ করেছে যার ফলে এক ধরনের সমন্বয়হীনতা তৈরি হয়েছে।”
বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের প্রতিনিধি এমদাদুল হক রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগে যে কমিশন গঠন করা হয়েছে তা যেন স্বচ্ছভাবে কাজ করতে পারে সেটি নিশ্চিত করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে আহ্বান জানান।
দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন প্রতিনিধি ইফতেখারুজ্জামান প্রাথমিকভাবে গঠিত ছয়টি কমিশনের বাইরে গণমাধ্যম, শ্রম, স্থানীয় সরকার, নারী ও স্বাস্থ্য বিষয়ক যে সংস্কার কমিশনগুলো গঠিত হয়েছে সেগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নে একটি রোডম্যাপ প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার ২০০৮ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য প্রণীত খসড়া প্রস্তাবটি অধ্যাদেশ আকারে প্রকাশ করার আহ্বান জানান।
আজকের সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতিনিধি সফর রাজ হোসেন।
ঢাকা/হাসান/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গঠন কর ন গঠন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বার্সার সঙ্গে নতুন চুক্তিতে কী কী সুযোগ-সুবিধা থাকছে ইয়ামালের
দিন যতই গড়াচ্ছে, লামিনে ইয়ামাল নিজেকে আরও ভালো ফুটবলারে পরিণত করছেন। তাই তাঁর দিকে আরও বেশি ক্লাবের নজর পড়ছে।
তবে ইয়ামাল গত ডিসেম্বর থেকে বলে আসছেন, তিনি বার্সেলোনাতেই থাকতে চান। বার্সাও নানা সময়ে ইঙ্গিত দিয়েছে, ইয়ামালকে তারা ছাড়তে চায় না। এমনিতেই ইয়ামালের সঙ্গে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত চুক্তি আছে বার্সার। দুই পক্ষের বন্ধনটা অটুট রাখতে এবার চুক্তির মেয়াদ আরও বাড়ানো হচ্ছে।
স্পেনের দুই ক্রীড়া দৈনিক মুন্দো দেপোর্তিভো ও দিয়ারিও স্পোর্ত বলছে, বার্সার সঙ্গে ২০৩১ সাল পর্যন্ত চুক্তি করতে যাচ্ছেন ইয়ামাল। সব ঠিক থাকলে আজই চুক্তিপত্রে সই করতে পারেন এই বিস্ময় বালক।
সংবাদমাধ্যম দুটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বার্সেলোনার তোরে মেলিনা হোটেলে ইয়ামালের এজেন্ট জর্জ মেন্দেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ক্লাব সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা এবং ক্রীড়া পরিচালক ডেকো। আলোচনা বেশ ফলপ্রসূ হয়েছে এবং বেশির ভাগ বিষয়ে দুই পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছেছে। চুক্তি হলে ইয়ামালই হবেন ক্লাবটির সর্বোচ্চ বেতনের ফুটবলার।
বার্সার খেলোয়াড়দের মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি বেতন পান রবার্ট লেভানডফস্কি। পোলিশ এই স্ট্রাইকার ক্লাব থেকে সপ্তাহে ৬ লাখ ৪০ হাজার ৯৬২ ইউরো (৮ কোটি ৯০ লাখ ২৩ হাজার টাকা) পান। বর্তমানে ইয়ামালের সাপ্তাহিক বেতন ৬৪ হাজার ৩৮ ইউরো (৮৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা)।
আগামী ১৩ জুলাই ১৮ বছর পূর্ণ হবে ইয়ামালের। এরপর এমনিতেই বেতন বাড়ত তাঁর। তবে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হলে তাঁর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করেই বেতন দেওয়া হবে।
বার্সার হয়ে ২০২৪–২৫ মৌসুম দুর্দান্ত কেটেছে ইয়ামালের। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে করেছেন ১৮ গোল, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ২৫টি। এর চেয়েও বড় ব্যাপার মাঠে তাঁর প্রভাব। এই মৌসুমে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের নাভিশ্বাস তুলে ছেড়েছেন। বেশ কয়েকটি চোখধাঁধানো গোল করেছেন, যার কয়েকটি ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দিয়েছে।
ইয়ামালের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে মুন্দো দেপোর্তিভো ও দিয়ারিও স্পোর্ত জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ২০৩০ সাল পর্যন্ত বার্সার সঙ্গে নতুন চুক্তি করার কথা ছিল ইয়ামালের। তবে তা আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তিনি ব্যালন ডি’অর জিততে পারলে মোটা অঙ্কের বোনাস পাবেন।
তবে ইয়ামালের রিলিজ ক্লজ কত হবে, তা নিয়ে দুই পক্ষ এখনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। মূল চুক্তিতে এটি ১০০ কোটি ইউরো (১৩ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা) নির্ধারণ করা হয়েছিল। এখন তা আবার পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
উয়েফা নেশনস লিগের ম্যাচ সামনে রেখে ইয়ামাল কয়েক দিনের মধ্যেই জাতীয় দল স্পেনে যোগ দেবেন। এরপর লম্বা ছুটিতে যাবেন। তাই বার্সার চাওয়া যত দ্রুত সম্ভব, ইয়ামালের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর প্রক্রিয়া শেষ করা।
তা ছাড়া বার্সা কর্তৃপক্ষের ধারণা, ইয়ামালের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলে চুক্তি করতে গিয়ে নানা রকম জটিলতায় পড়তে হতে পারে। ক্লাবটি তাই সব ধরনের ঝুটঝামেলা এড়িয়ে যেতে চায়।
বার্সেলোনার কোচ হিসেবে নিজের প্রথম মৌসুমেই ক্লাবকে তিনটি ট্রফি (লা লিগা, কোপা দেল রে, স্প্যানিশ সুপার কাপ) এনে দিয়েছেন হান্সি ফ্লিক। তাঁর সার্বিক কাজ নিয়ে ক্লাব কর্তৃপক্ষ বেশ সন্তুষ্ট।
কোচ হওয়ার সময় ক্লাব সভাপতি লাপোর্তাকে ফ্লিক যে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পের পরিকল্পনা জমা দিয়েছিলেন, তাতে সম্মুখ সারিতেই ছিলেন ইয়ামাল। এখন তো ইয়ামালকে ছাড়া একাদশ কল্পনাই করা যায় না। তরুণ উইঙ্গারকে তাই যেকোনো মূল্যে ধরে রাখতে চাইছে বার্সা।