চুয়াডাঙ্গার জীবননগর পৌর কাঁচা বাজারে অগ্নিকাণ্ডে ১১টি দোকান ও গুদাম পুড়ে গেছে। সোমবার রাতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এ ঘটনা ঘটে। এতে ব্যবসায়ীদের পৌনে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার মো. আব্দুল মোহাইমেন তুষার।

এ কর্মকর্তা বলেন, এসব দোকান ও গুদামে ঈদের জন্য বিভিন্ন ধরনের পণ্য কিনে মজুদ রেখেছিলেন ব্যবসায়ীরা। ঘটনার কিছুক্ষণ পর টহলরত পুলিশের মাধ্যমে রাত ১টা ৩৩ মিনিটে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

জানা গেছে, পৌর বাজারে সোমবার রাত ১টার দিকে একটি দোকানে আগুন লেগে যায়। মুহুর্তের মধ্যে তা আশপাশের দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি টের পেয়ে টহল পুলিশের সদস্যরা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। আধা ঘণ্টা পর একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। এরই মধ্যে ১১টি দোকান ও পণ্যসামগ্রী পুড়ে যায়।

ব্যবসায়ীদের দাবি, আগুনে তাদের কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। নৈশপ্রহরী রেজাউল ইসলামের ভাষ্য, কাঁচা বাজারের সাইফুল ইসলামের খাবারের রেস্তারাঁ থেকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুন লাগে। পরে পাশের দোকানগুলোয় ছড়িয়ে পড়ে। 

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামের দাবি, আগুনে তার ৩ লাখ টাকার বিভিন্ন ধরনের পণ্য পুড়ে গেছে। পাশাপাশি পাশের সাখাওয়াত হোসেনের রেস্তারাঁর সাড়ে ৩ লাখ, আমিনুল ইসলামের মুদি দোকানে ২০ লাখ, সাইফুর রহমানের ২০ লাখ, আমিনুল ইসলামের গুদামে ১৫ লাখ, ফারুক উদ্দিনের মুদির ৫, শাহিন মোল্লার ১০ লাখ এবং আরব আলীর জুতার দোকানের ১ লাখ টাকার পণ্য পুড়ে ক্ষতি হয়েছে।

এ ছাড়া তরিকুল ইসলাম ও রবিউল ইসলামের অস্থায়ী কাপড়ের দোকান এবং মিজান হোসেনের দোকানের আসবাব পুড়ে গেছে। ব্যাবসায়ী রানা হোসেন বলেন, এখানে কিছু দোকানের গুদাম ছিল। ঈদ উপলক্ষে অনেকে পণ্য রেখেছিলেন। সয়াবিনসহ অন্যান্য তেলের জন্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে। এছাড়া চায়ের দোকানের ফ্রিজসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জীবননগর বাজারের ব্যবসায়ী ও বাজার কমিটির সাবেক আহ্বায়ক মুন্সী মাহবুবর রহমান বাবু বলেন, ঈদের আগে দোকানগুলোয় আগুন লেগে ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পণ্য পুড়ে যাওয়ায় তারা পথে বসে গেছেন। অনেকেই পোড়া ছাইয়ের মধ্যে অবশিষ্ট অংশ খোঁজার চেষ্টা করছেন। ভুক্তভোগী মালিক ও কর্মচারীরা সব হারিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আগ ন ল ইসল ম র ব যবস য় গ রস ত

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ

আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।

আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু নেতারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। এ সময় তাঁদের কাছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’

হিন্দুধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজামণ্ডপ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।

নেতারা বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদ্‌যাপন হবে বলে তাঁরা আশা করছি।

এ সময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পূজায় আমরা দুই দিন ছুটি পেয়েছি। এ জন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সবাই সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ করেছি, এক বছর ধরে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ–জাতিনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি।’

বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।

প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।

বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণানন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রীশ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজকীয় ভোজে ট্রাম্প–মেলানিয়াকে কী কী খাওয়ালেন রাজা চার্লস
  • দুর্গাপূজায় নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থায় থাকবে পুলিশ: আইজিপি
  • শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সিঙ্গাইরের ৭৭ মণ্ডপে অনুদান বিতরণ
  • শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন উপলক্ষে বন্দরে প্রস্তুুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত 
  • মোদির জন্মদিনে ট্রাম্পের ফোন, মেসির উপহার
  • বেনাপোল দিয়ে ইলিশের প্রথম চালান গেল ভারতে
  • সদর উপজেলায় শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা
  • ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেল ৩৭টি প্রতিষ্ঠান
  • ‘ওজোনস্তর ক্ষয়ে স্বাস্থ্য, কৃষি ও প্রাণিজগৎ ঝুঁকির মুখে’
  • দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ