পুরোনো প্রযুক্তির গ্যাস মিটার গছিয়ে দিচ্ছে জাপান
Published: 28th, May 2025 GMT
জাপান থেকে পুরোনো প্রযুক্তির প্রিপেইড গ্যাস মিটার কিনছে বাংলাদেশ। সরকার টু সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে এসব মিটার কেনার জন্য জাপান থেকে ঋণ নিতে হবে কঠিন শর্তে। ঋণ দেবে জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন (জেবিআইসি)। ভবিষ্যতে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে ঋণ যেন সংকটে না পড়ে, সে নিশ্চয়তাও চাইছে দেশটি। এই ঋণের আওতায় আট লাখ গ্যাস মিটার কিনতে বাংলাদেশের খরচ হবে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। প্রতি মিটারের পেছনে ব্যয় হবে প্রায় ১২ হাজার টাকা। প্রধান উপদেষ্টা ড.
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের প্রিপেইড মিটার স্থাপন নীতিমালা অনুযায়ী গ্রাহক পর্যায়ে স্মার্ট গ্যাস মিটার বসানোর নিয়ম রয়েছে। কিন্তু জাপানে তৈরি পুরোনো প্রযুক্তির (নন-স্মার্ট) গ্যাস মিটার নেওয়া হলে নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। এ জন্য প্রচলিত নীতিমালাও পরিবর্তন করতে হবে। এতে গ্রাহকের ভোগান্তি বাড়তে পারে।
২০১৯ সালে আবাসিকে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ করে সরকার। তাই এ খাতে বিদ্যমান ও প্রয়োজনীয় প্রকল্প ছাড়া বোঝা হওয়ার মতো প্রকল্প নেওয়ার ব্যাপারে সরকারের অনীহা রয়েছে। তারপরও জাপানের মিটার কিনতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এর নেপথ্যে নানা ধরনের চাপ রয়েছে বলে একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তবে তারা নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।
জাপানের মিটারে অনীহা
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এক কর্মকর্তা সমকালকে জানান, তিতাসসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এ মিটার নিতে চাইছে না। জাপান জোর করে পুরোনো প্রযুক্তির এসব মিটার চাপিয়ে দিচ্ছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে জেবিআইসি ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটি নন-বাইন্ডিং সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। ওই চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে দু’পক্ষের মধ্যে সই হয় আরেকটি এমওইউ। এরপর পেট্রোবাংলা, তিতাস, কর্ণফুলী ও বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সঙ্গে মিটার স্থাপনে ঋণ দিতে একাধিক বৈঠক করে জেবিআইসি।
জেবিআইসির ঋণে জাপান থেকে গ্রাহক পর্যায়ে প্রিপেইড গ্যাস মিটার কেনা নিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সভা করেন। ওই বৈঠক থেকে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির জন্য দুই লাখ, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের জন্য দেড় লাখ ও বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির জন্য সাড়ে চার লাখ মিটার কেনার সিদ্ধান্ত হয়। জেবিআইসির শর্ত অনুসারে, এসব মিটার জাপানের অনদা ইনকরপোরেশনের কাছ থেকে কেনার কথা রয়েছে। মিটারগুলো দেশটির টয়োকেইকি কোম্পানির তৈরি।
গত ২২ জানুয়ারি জেবিআইসি মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে ফেব্রুয়ারির শুরুতে একটি সমঝোতা কমিটি গঠনের অনুরোধ করে। চিঠিতে এ প্রকল্প জাপান সরকারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলেও উল্লেখ করা হয়। ফলে ফেব্রুয়ারির বৈঠকে জাপানের অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিও উপস্থিত থাকবে বলে জানায় জেবিআইসি। ৩ ও ৪ ফেব্রুয়ারি সমঝোতা বৈঠকে ঋণের শর্ত নিয়ে আলোচনা হয়।
এদিকে, ১২ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের (পরিকল্পনা) সভাপতিত্বে আরেকটি বৈঠক হয়। সেখানে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ বলেন, জাপান থেকে যে মিটার কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন (এনএফসি) মিটার। বর্তমানে এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে যে মিটার নেওয়া হচ্ছে, তা স্মার্ট মিটার। জাপানের মিটার থেকে তাৎক্ষণিক তথ্য (রিয়েল টাইম ডেটা) পাওয়া সম্ভব নয়। আর এ মিটার নিলে গ্রাহকের ভোগান্তি বাড়বে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা-১ অধিশাখার যুগ্ম সচিব আকানুর রহমান বৈঠকে বলেন, জেবিআইসি নন-স্মার্ট মিটারের যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা নেওয়া ঠিক হবে না। অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ রাশেদুল আমীন বলেন, যদি তিতাসের স্মার্ট মিটারের চাহিদা থাকে, তাহলে জেবিআইসির ঋণ নেওয়ার যৌক্তিকতা নেই। পেট্রোবাংলার পরিচালক (পরিকল্পনা) মো. আবদুল মান্নান পাটওয়ারী বলেন, আবাসিক পর্যায়ে খোলাবাজার থেকে স্মার্ট প্রিপেইড মিটার ক্রয় ও স্থাপন নীতিমালা-২০১৯ এবং পরে ২০২৪ সালে সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী স্মার্ট প্রিপেইড মিটারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
ওই বৈঠক থেকে জাপানের প্রস্তাবিত মিটার লাগালে গ্রাহক পর্যায়ে কী সমস্যা হতে পারে, তা চিহ্নিত করে পেট্রোবাংলাকে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। পাশাপাশি ঋণের শর্তগুলো পর্যালোচনা এবং মিটারবিষয়ক নীতিমালা পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে কিনা, তারও মতামত জানাতে পেট্রোবাংলাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সংস্থাটির এক পরিচালক সমকালকে জানান, তিতাসসহ অন্য বিতরণ কোম্পানিগুলোর মতামত নিয়ে প্রতিবেদন এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। জাপানের মিটার এখন বসানোর প্রয়োজন নেই বলে বিতরণ কোম্পানিগুলো মত দিয়েছে। এতে কারিগরি জটিলতা বাড়তে পারে। পাশাপাশি ঋণের কয়েকটি শর্ত বেশ কঠিন বলে জানানো হয়।
এ নিয়ে পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী গ্রাহক পর্যায়ে স্মার্ট মিটার নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে, যাতে গ্রাহকের ভোগান্তি কমে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহক যেন গ্যাস মিটার রিচার্জ করতে পারে। এখন জাপান যে মিটার দিচ্ছে, তাতে এসব সুবিধা থাকবে না। সেই সঙ্গে স্মার্ট মিটার কেনার নীতিমালাও বদলাতে হবে।
ঋণের কঠিন শর্ত
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিশ্বব্যাংক কিংবা এডিবির চেয়েও কঠিন শর্ত জেবিআইসির ঋণে। একে তো বায়ার্স ক্রেডিট, সেই সঙ্গে ঋণ পরিশোধের সময়সীমাও কম। ঋণে প্রতিশ্রুতি চার্জ দশমিক ৫০ শতাংশ, অগ্রিম ফি ১ দশমিক ৫ শতাংশ, এজেন্ট ফি ২০ হাজার জাপানি ইয়েনসহ সব খরচ এ ঋণ থেকে বাংলাদেশকেই দিতে হবে। ঋণ পরিশোধে বিশ্বব্যাংক বা এডিবির ২০ থেকে ৩৫ বছর পাওয়া গেলেও জেবিআইসি ঋণ পরিশোধের সময় মাত্র ১০ বছর। ঋণ নেওয়ার ছয় মাস পরই প্রথম কিস্তি দিতে হবে। সুদ ধরা হয়েছে ৩ দশমিক ৩৯ থেকে ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত। এ ঋণের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নিশ্চয়তা আনতে হবে, যাতে এ ঋণ নিয়ে তাদের কোনো আপত্তি না থাকে। সরকারকে ঋণ পরিশোধের নিশ্চয়তার পাশাপাশি রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলেও কিস্তি যাতে সংকটে না পড়ে, সে নিশ্চয়তা দিতে হবে।
আগেও কেনা হয়েছিল জাপানি মিটার
জাইকার সহযোগিতায় এরই মধ্যে জাপানের টয়োকেইকির তৈরি ৩ লাখ ২০ হাজার মিটার ঢাকা-চট্টগ্রামে তিতাস ও কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানির গ্রাহকের ঘরে লাগানো হয়েছে। টয়োকেইকি সাইটের তথ্য অনুসারে, ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ঢাকায় ২ লাখ ও চট্টগ্রামে ৬০ হাজার প্রিপেইড মিটার লাগানো হয়। মিটারগুলো এসটিকে২৫এমআই মডেলের। তাইওয়ানেও গ্রাহক পর্যায়ে এসব গ্যাস মিটার লাগানোর নজির রয়েছে। সেগুলো এনএস সিরিজের।
এদিকে অনদা ইনকরপোরেশনের ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, এই ২ লাখ ৬০ হাজার প্রিপেইড মিটার লাগানোর পর আরও ১ লাখ ২০ হাজার মিটার বসানোর কাজ পায় তারা। প্রতি মিটার স্থাপনে গড়ে খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। জাপানের মিটার স্থাপনের মধ্যেই এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় স্মার্ট মিটার কেনার উদ্যোগ শুরু হয়। এরই মধ্যে সিলেটে চীনের তৈরি ৬০ হাজার স্মার্ট প্রযুক্তির মিটার বসেছে।
কারা কী বলছেন
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অনদা ইনকরপোরেশনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি হোসেন আহমেদ মালেক সমকালকে বলেন, ‘আমরা এনএফএস প্রযুক্তির (স্মার্ট নয়) মিটার দিতে চেয়েছি। জাইকার সহযোগিতায় তিতাসে আগেও এই প্রযুক্তির মিটার বসানো হয়েছে। এখন একটি গ্রুপ চীনা মিটার কেনার জন্য জাপানি প্রযুক্তির মিটারের বিরোধিতা করছে। চীনা মিটার স্মার্ট হলেও ২জি প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে ইন্টারনেটের গতি কম, তাই এনএফএস প্রযুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে। এখন গ্যাস কোম্পানিগুলো স্মার্ট মিটার চাইলে আমরা আগামীতে ৪জি প্রযুক্তি লাগিয়ে দেব।’
তিনি বলেন, চীনা মিটারের মান জাপানের চেয়ে কম হলেও দাম বেশি।
তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ সমকালকে বলেন, জাপান থেকে একটি প্রস্তাব এসেছে। এ বিষয়ে আমাদের মতামত জ্বালানি বিভাগকে জানানো হয়েছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান গত মাসে সমকালকে জানিয়েছিলেন, উচ্চ সুদ, প্রযুক্তিগত ঘাটতির বিষয়টি জেবিআইসিকে জানানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড স ট র ব উশন জ ব আইস র কর মকর ত ন র জন য প রস ত ব ক পর য য় ব শ বব য গ র হক র সরক র র ন শ চয়ত দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য
‘কেনাকাটা আটকে দিয়েছিলেন নাহিদ, তোড়জোড় ফয়েজের’ শিরোনামে ২৭ জুলাই প্রথম আলোতে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) ‘৫-জি উপযোগীকরণে বিটিসিএলের অপটিক্যাল ফাইবার ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক উন্নয়ন’ শিরোনামের প্রকল্প নিয়ে প্রতিবেদনটির প্রতিবাদ পাঠানো হয় ২৮ জুলাই।
প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, প্রকল্পটি নিয়ে করা প্রতিবেদনে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবকে জড়িয়ে যে ‘অভিযোগ ও ব্যাখ্যাহীন অনুমানমূলক’ মন্তব্য করা হয়েছে, তা পুরোপুরি বিভ্রান্তিকর, একপক্ষীয় এবং ভিত্তিহীন। এতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে বিকৃত তথ্য উপস্থাপন করে ফয়েজ আহমদের মানহানি করার চেষ্টা করা হয়েছে, যা সাংবাদিকতার নৈতিকতা বিরুদ্ধ।
টেলিযোগাযোগ বিভাগ প্রতিবাদপত্রে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছে। নিচে সেই সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলো উল্লেখ করে প্রতিবেদকের বক্তব্য তুলে ধরা হলো।
আরও পড়ুনদুর্নীতির অভিযোগে কেনাকাটা আটকে দিয়েছিলেন নাহিদ, তোড়জোড় ফয়েজ আহমদের২৭ জুলাই ২০২৫এক. প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, প্রথম আলোর প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে ফয়েজ আহমদ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানাধীন একটি প্রকল্পের কার্যক্রম ‘এগিয়ে নিতে’ বিশেষ কৌশল অবলম্বন করেছেন। বাস্তবতা হলো, বিটিসিএলের ৫–জি রেডিনেস প্রকল্পে ২৯০ কোটি টাকার ঋণপত্র (এলসি) পূর্ববর্তী সরকারের আমলে চূড়ান্ত হয়েছে। সেই টাকা ফেরত পাওয়ার আর কোনো বাস্তবসম্মত পথ নেই। এবং এসব যন্ত্রপাতি গ্রহণ না করলে সম্পূর্ণ অর্থই রাষ্ট্রের অপচয়ে পরিণত হবে।
টেলিযোগাযোগ বিভাগ আরও বলেছে, ফয়েজ আহমদ শুধু অর্থনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে, আইনি কাঠামোর ভেতরে থেকে দুদকের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করেছেন, যেখানে দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিও তিনি তুলে ধরেছেন। এটি দুর্নীতির ‘সহযোগিতা’ নয়, বরং রাষ্ট্রীয় স্বার্থ রক্ষায় দায়িত্বশীল পদক্ষেপ।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতে বিটিসিএল একটি বেসরকারি আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে দুদকের অনুসন্ধানাধীন প্রকল্পের বাকি কাজ এগিয়ে দিতে আইনগত মতামত নেয় (২৭ মার্চ, ২০২৫)। যদিও এ ধরনের আইনগত মতামত দেওয়ার জন্য বিটিসিএলের নিজস্ব আইনজীবী প্যানেল রয়েছে। বেসরকারি আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রথমে ইতিবাচক মতামত দিলেও পরে (৮ এপ্রিল, ২০২৫) দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে পেরে সতর্ক করে দেয় যে তদন্তাধীন প্রকল্পে কেনাকাটার ক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
দুদক চিঠি দিয়ে বিটিসিএলকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয় (১৮ জুন, ২০২৫) যে তাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে ক্রয় আইনের লঙ্ঘন পাওয়া গেছে। তাই কেনাকাটার কার্যক্রম এগিয়ে নিলে আইনের ব্যত্যয় হবে এবং অর্থ ব্যয় আইনসিদ্ধ হবে না। দুদক তাদের মতামত জানানোর পরও ফয়েজ আহমদ আবার (২২ জুন) সংস্থাটির চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন এবং তাঁর ব্যক্তিগত মনোযোগ ও আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
দুদকের নেতিবাচক মতামতের পরও কেনাকাটার কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাওয়া টেলিযোগাযোগ বিভাগের (প্রতিবাদপত্রে উল্লেখ করা) দাবিকে সমর্থন করে না। ফয়েজ আহমদ দুদককে দ্রুত অনুসন্ধান শেষ করার অনুরোধ করতে পারতেন। অনুসন্ধান শেষ হলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারতেন। বিটিসিএলের ওই প্রকল্পে দুদক গত ৯ জানুয়ারি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। এই অনুসন্ধান নিশ্চয়ই বছরের পর বছর চলবে না। কেনাকাটায় আর কিছুদিন দেরি হলে রাষ্ট্রের বিপুল ক্ষতি হয়ে যাবে, এ দাবি যৌক্তিক নয়।
‘দুর্নীতি সহায়ক’ বক্তব্যটি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানের মতামত, প্রথম আলোর নয়।
দুই. প্রতিবাদপত্রে বলা হয়েছে, প্রয়োজনের চেয়ে ৫ গুণ সক্ষমতার যন্ত্রপাতি কেনার উদ্যোগ নিয়ে অর্থ অপচয়ের চেষ্টার অভিযোগ অসত্য। প্রতিবাদপত্রে কারিগরি বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে বলা হয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সমীক্ষায় বিভিন্ন ধরনের চাহিদা বিবেচনা করা হয়নি। সেসব বিবেচনায় নেওয়া হলে যন্ত্রপাতির সক্ষমতা ২৬ টিবিপিএস (টেরাবাইট পার সেকেন্ড) নয়, ১২৬ টিবিপিএসের প্রয়োজন হবে। ফাইভ-জি প্রকল্পে ১২৬ টেরাবাইট ক্ষমতা ‘রিডান্ডেন্ট’সহ নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এখানে কোনো যন্ত্রপাতি বা সক্ষমতা অব্যবহৃত থাকার সুযোগ নেই।
প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয়, বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল ২০২১ সালে প্রণীত বিটিসিএলের ফাইভ-জি প্রকল্পের একটি সমীক্ষায় মতামত দেয় যে শুধু আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ যদি ২৬ টিবিপিএস হয়, তাহলে সব মিলিয়ে ‘সিস্টেমের লাইন ক্যাপাসিটি’ ১২৬ টিবিপিএস প্রয়োজন হবে।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: এই প্রকল্প নিয়ে দুদকের অনুসন্ধানের বিষয়বস্তুই হলো ‘দরপত্রের শর্তানুযায়ী দরদাতাদের মূল্যায়ন না করে সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি লঙ্ঘনপূর্বক শুধু প্রকল্প পরিচালকের বক্তব্যের ভিত্তিতে তিনজন দরদাতাকেই কারিগরিভাবে রেসপনসিভ (যোগ্য) ঘোষণা করাসহ নন-রেসপনসিভ দরদাতাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সক্ষমতার পাঁচ গুণ বেশি যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি ক্রয় করে বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রীয় অর্থের ক্ষতিসাধনের অভিযোগ।’ প্রথম আলোর প্রতিবেদনে এ ‘অভিযোগ’ই শুধু তুলে ধরা হয়েছে।
তা ছাড়া ২০৩০ সাল পর্যন্ত যে ২৬ টিবিপিএস চাহিদা নিরূপিত হয়েছিল, কিন্তু কেনা হচ্ছে ১২৬ টেরাবাইট—এটা ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই অনুষ্ঠিত বিটিসিএলের ২১৩তম পর্ষদ সভার কার্যবিবরণীতে রয়েছে। পাশাপাশি তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদুজ্জামান লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কারণে টেলিকম যন্ত্রপাতিও অতি দ্রুত পরিবর্তনশীল। এ কারণে দীর্ঘ সময় যন্ত্রপাতির খুচরা যন্ত্রাংশ সহজলভ্য থাকে না। সাধারণভাবে টেলিকম যন্ত্রপাতির সর্বোচ্চ ব্যবহারযোগ্য আয়ুষ্কাল সাত বছর ধরা হয়। এই দরপত্রের ক্ষেত্রেও কারিগরি নির্দেশে যন্ত্রপাতির আয়ুষ্কাল সাত বছর নির্ধারিত রয়েছে। তিনি সাবধান করেছিলেন যে ২০৪০ সাল পর্যন্ত চাহিদা পূরণে বেশি সক্ষমতার যন্ত্রপাতি চাওয়া হলেও বাস্তবে তা সচল থাকার নিশ্চয়তা ২০৩০ সাল পর্যন্ত। অর্থাৎ যে পরিমাণ যন্ত্রপাতি কেনা হবে, তার একটি বড় অংশই ২০৩০ সাল পর্যন্ত ব্যবহৃত হবে না এবং ব্যবহারের পূর্বেই মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।
বিগত সরকারের সময় অতিরিক্ত সক্ষমতার যন্ত্র কেনার অনুমোদন না দেওয়ার কারণেই আসাদুজ্জামানকে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অপসারণ করা হয় এবং নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ করে কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
তিন. প্রতিবাদপত্রে টেলিযোগাযোগ বিভাগ বলেছে, দুদকের ওপর প্রভাব বিস্তারের দাবি তথ্যভিত্তিক নয়। দুদকের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করা এবং চিঠি পাঠানো একটি প্রাতিষ্ঠানিক, নীতিগত এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার অংশ। এর মধ্য দিয়ে কোনোভাবেই সংস্থাটির ওপর ‘প্রভাব বিস্তার’ করা হয়নি; বরং তদন্তকাজ চলমান রাখতে এবং যন্ত্রপাতি গ্রহণের অর্থনৈতিক যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করতে একটি প্রাসঙ্গিক ও প্রয়োজনীয় দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করা হয়েছে। তা ছাড়া বিশেষ সহকারীর দুদকে প্রেরিত আধা সরকারি পত্রের বক্তব্যকে প্রকল্পের কেনাকাটা করতে বিশেষ কৌশলের আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ বলে প্রচার করা হয়েছে, যা জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। এটা অপসংবাদিকতা ছাড়া আর কিছু নয়।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: টেলিযোগাযোগ বিভাগের এক নম্বর পয়েন্টেও একই বিষয়ে বলা হয়েছে। সেখানেই প্রতিবেদকের বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। স্বচ্ছতার স্বার্থে টেলিযোগাযোগ বিভাগের এই বক্তব্য আবার উল্লেখ করা হলো। এখানে বলে রাখা দরকার, দুদকের স্পষ্ট মতামত পাওয়ার পরও চেয়ারম্যানকে দ্বিতীয় দফা চিঠি দেওয়া এবং অভিযোগকে ‘সত্য নয়’ বলে দাবি করা স্বাধীন সংস্থাটিকে প্রভাবিত করারই চেষ্টা। দুদকের মতামত যাতে কেনাকাটার পক্ষে পরিবর্তিত হয়, সে জন্যই ফয়েজ আহমদ দ্বিতীয় দফা আধা সরকারি পত্র দিয়েছিলেন এবং তিনি সেখানে দুদক চেয়ারম্যানের ‘ব্যক্তিগত মনোযোগ ও আন্তরিক সহযোগিতা’ কামনা করেন।
চার. প্রতিবাদপত্রে টেলিযোগাযোগ বিভাগ বলেছে, প্রথম আলোর প্রতিবেদনে কারখানা পরিদর্শন ও জিও (সরকারি আদেশ) জারির প্রেক্ষাপট চেপে রাখা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকেই জিও অনুমোদন না হওয়ায় চীনে কারখানা পরিদর্শনের জন্য প্রতিনিধিদল পাঠানো সম্ভব হয়নি। সরকারের নির্ধারিত বিধি অনুযায়ী, যখন কারখানা পরিদর্শন সম্ভব নয়, তখন পণ্য সরবরাহ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী জাহাজীকরণ করা যেতে পারে—বিষয়টি সচেতনভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দরপত্রের নিয়মানুযায়ী কারখানা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা বিটিসিএলের চারজন প্রকৌশলীর। সেখানে নিয়মবহির্ভূতভাবে চারজনের জায়গায় পাঁচজনকে কারখানা পরিদর্শনে পাঠানোর জন্য জিও জারির অনুরোধ করা হয়। নতুন দলে বিটিসিএলের প্রকৌশলী রাখা হয় দুজন আর টেলিযোগাযোগ বিভাগের তিনজন। তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, টেলিযোগাযোগ বিভাগের কর্মকর্তাদের খুশি রাখতে তাঁদের চীন সফরে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ করে দেওয়া হয়। যদিও তাঁদের চীনে যাওয়া হয়নি। কারণ, প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জিও (সরকারি আদেশ) জারির বিষয়টি আটকে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে গত ৯ ডিসেম্বর বিদেশ ভ্রমণসংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করা হয়। সেখানে সাধারণভাবে বিদেশ ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হয়। তবে নির্দেশনার ৯ নম্বরে কেনাকাটা, জাহাজীকরণের আগে কারখানা পরিদর্শন ইত্যাদি ক্ষেত্রে কেবল সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ প্রেরণের বিষয় বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ ‘ফ্যাক্টরি একসেপটেন্সের’ জন্য বিদেশ ভ্রমণ নিষিদ্ধ নয়। আরও উল্লেখ্য যে এই কেনাকাটার জন্য কারখানায় যন্ত্রপাতি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জিও গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর জারি করা হয়েছিল। কিন্তু পরে ২৪ সেপ্টেম্বর তা বাতিল করা হয়। ২৪ অক্টোবর (২০২৪) বিটিসিএলের পরিচালনা পর্ষদ প্রকল্প নিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় এবং এ বছরের ৬ জানুয়ারি সেই তদন্ত প্রতিবেদন দুদকে পাঠাতে বলে।
পাঁচ. প্রতিবাদপত্রে টেলিযোগাযোগ বিভাগ বলেছে, প্রথম আলোর প্রতিবেদনে ফয়েজ আহমদের চীন সফর নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। এতে চীন সফরের ব্যাখ্যা এবং এর সরকার অনুমোদিত বৈধতা সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে এটিকে ‘অপরিচিত সংস্থার অর্থে’ পরিচালিত বলে উপস্থাপন করা হয়েছে। অথচ এটি ছিল সরকারি অনুমোদিত সফর, যার উদ্দেশ্য ছিল তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অর্জন ও অবকাঠামোগত সক্ষমতা পর্যালোচনা।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: এ সফর সরকারের অনুমোদনহীন, তা প্রথম আলোর প্রতিবেদনের কোথাও বলা হয়নি। বলা হয়েছে, জিওতে উল্লিখিত ‘চায়নিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারস ইন বাংলাদেশ’ নামের সংগঠনটি অপরিচিত। তবে ‘চায়নিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন রয়েছে। উল্লেখ্য, ওই সফরে বিশেষ সহকারীর একান্ত সচিব সফরসঙ্গী ছিলেন, যা সরকারের বিদেশ ভ্রমণবিষয়ক নির্দেশনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ নির্দেশনায় একান্ত সচিবদের জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত সঙ্গে নেওয়া পরিহার করতে বলা হয়েছে।
ছয়. প্রতিবাদপত্রে টেলিযোগাযোগ বিভাগ বলেছে, একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের আর্থিক ও প্রযুক্তিগত বাস্তবতা বিশ্লেষণ না করে শুধু প্রাক্তন আমলাদের বক্তব্য, বাতিল হওয়া দরপত্র এবং অনুমাননির্ভর ব্যাখ্যা দিয়ে ফয়েজ আহমদের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে নিজের অবস্থান গণমাধ্যমে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, যার কিছু অংশ প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকলেও প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের প্রতি উত্তরের অনুপস্থিতিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: বক্তব্য জানতে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ১৬ জুলাই ফয়েজ আহমদ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তাকে ই-মেইলে প্রশ্ন পাঠানো হয়। পরে ফয়েজ আহমদকে ফোন করা হয় এবং খুদে বার্তা পাঠানো হয়। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তাকে ফোনে বিষয়টি জানানো হয়। ২০ জুলাই আইসিটি বিভাগে গেলে অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে জানানো হয়, ফয়েজ আহমদ অফিসে উপস্থিত নেই। তখন আইসিটি বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠাবেন বলে জানান। তিনি পাঠাননি। পরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে ৭ জুলাই ফয়েজ আহমদ সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। সেটাই তাঁর বক্তব্য। উল্লেখ্য, ফয়েজ আহমদের আগের বক্তব্যের চুম্বক অংশ প্রতিবেদনে রয়েছে। পাশাপাশি ৭ জুলাই তা প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়েছিল। প্রথম আলোর প্রতিবেদনে অনুমাননির্ভর কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
সাত. টেলিযোগাযোগ বিভাগ জানিয়েছে, ইতিমধ্যে দুজন কারিগরি ও দুজন ক্রয় বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে ‘কস্ট-বেনিফিট অ্যানালাইসিস’ (ব্যয়ের বিপরীতে সুফল পর্যালোচনা) কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: ‘কস্ট-বেনিফিট অ্যানালাইসিস’ করা হয়েছে কি না, সেটা প্রথম আলোকে দেওয়া বক্তব্যে জানতে চেয়েছিলেন টিআইবির ইফতেখারুজ্জামান।
আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলছি, প্রথম আলোর প্রতিবেদন মোটেও ‘ব্যাখ্যাহীন অনুমানমূলক’ নয়, এটা ‘বিভ্রান্তিকর, একপক্ষীয় এবং ভিত্তিহীন’ও নয়; বরং প্রথম আলোর প্রতিবেদন সঠিক এবং সংশ্লিষ্ট নথিপত্র প্রথম আলোর কাছে আছে।