লালমনিরহাটে আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে আগুনে ছয়জন নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা, গ্রেপ্তার ৬
Published: 28th, May 2025 GMT
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় লালমনিরহাটে আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে আগুনে পুড়ে ছয়জন নিহতের ঘটনায় ৭৩ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। আসামিদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘটনার ৯ মাস ২২ দিন পর মামলাটি করেছেন নিহত ব্যক্তিদের সহযোদ্ধা পরিচয় দেওয়া আরমান আরিফ (২৭) নামের এক তরুণ। তিনি লালমনিরহাট শহরের নর্থ বেঙ্গল মোড় এলাকার বাসিন্দা। তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বিকেলে লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন ওরফে সুমন খানের (৪৬) শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার–সংলগ্ন বহুতল ভবনে আগুন লাগে। এতে পুড়ে মারা যান ছয়জন। তাঁরা সবাই ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলন’-এর অংশ ছিলেন বলে দাবি করা হয়।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে লালমনিরহাট সদর থানায় মামলাটি করা হয়। এরপর রাতেই অভিযান চালিয়ে ছয়জন এজাহারভুক্ত আসামিকে শহর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন লালমনিরহাট শহরের পূর্ব থানা পাড়ার বাসিন্দা ও পৌর আওয়ামী লীগের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো.
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে শরীফ মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, জাহিদ হাসান ও বাবুলকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অন্য তিনজনকে আজ বুধবার আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বেলা তিনটার দিকে স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র-জনতার একটি মিছিল সুমন খানের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁদের সঙ্গে আসামিদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর এজাহারভুক্ত আসামিরা ছয়জনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করেন। পরে বিকেল চারটার দিকে তাঁদের সুমন খানের বাড়ির ভেতরে আটকে রেখে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুন লাগিয়ে আসামিরা পালিয়ে যান বলে অভিযোগ করা হয়।
নিহত ছয়জন হলেন বসুন্ধরা এলাকার জোবায়ের হোসেন (১৭), সুরকিমিল এলাকার আল শাহরিয়ার রিয়াদ ওরফে তন্ময় (১৯), আদিতমারীর খাতাপাড়া গ্রামের শাহরিয়ার আল আফরোজ ওরফে শ্রাবণ (১৮), নবীনগরের জনি মিয়া (২০), কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ির রাধিক হোসেন ওরফে রুশো (১৯) এবং বানভাসা এলাকার রাজিব উল করিম সরকার (১৮)।
মামলার বাদী আরমান আরিফ বলেন, ‘আমাদের সহযোদ্ধা ছয়জনকে পরিকল্পিতভাবে আটক করে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু এত দিনেও কোনো সঠিক তদন্ত হয়নি। শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচারের আশায় মামলাটি করেছি।’
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরনবী ও পরিদর্শক (তদন্ত) বাদল কুমার মণ্ডল বলেন, মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা সুমন খানসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স মন খ ন এল ক র ন ওরফ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহে বিআরটিসির বাসের ধাক্কায় নিহত ৩
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) বাসের ধাক্কায় মাহেন্দ্রের তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ছয়জন। তাদের মধ্যে গুরুতর দুইজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
বুধবার (২৮ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের দত্তপাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারি পরিচালক মো. আতিকুর রহমান নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতদের মধ্যে দুইজন পুরুষ ও একজন নারী। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।
আরো পড়ুন:
চক্ষু বিজ্ঞানের কর্মচারীদের সঙ্গে জুলাইয়ের আহতদের ধাক্কাধাক্কি
বরিশালে মেডিকেল ছাত্রের আত্মহত্যা, চিরকুট উদ্ধার
প্রত্যক্ষদর্শী জানান, একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা ঘটনাস্থলে যাত্রী নামাচ্ছিল। পেছন থেকে আসা একটি মাহেন্দ্র অটোরিকশাটিকে ওভারটেক করার চেষ্টা করে। এসময় বিপরীত দিক থেকে আসা বিআরটিসির একটি বাস মাহেন্দ্রটিকে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান। আহত হন ছয়জন।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাদিয়া তামনিম মুনমুন বলেন, “উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছয়জনকে আনা হয়েছিল। গুরুতর দুইজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।”
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, “মারা যাওয়াদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।”
ঢাকা/মিলন/মাসুদ