চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে জাপান পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (২৮ মে) বাংলাদেশ সময় বেলা সোয়া ১১টায় এবং জাপান সময় দুপুর ২টা ৫মিনিটে তিনি পৌঁছান।
জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং জাপানের প্রটোকল প্রধান মো. দাউদ আলী বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে অভ্যর্থনা জানান।
আরো পড়ুন:
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফা আলোচনা জুনে
প্রতিটি নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: প্রধান উপদেষ্টা
এর আগে, মঙ্গলবার (২৭ মে) রাত ২টা ১০ মিনিটের দিকে প্রধান উপদেষ্টাকে বহনকারী ফ্লাইটটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
এই সফরে টোকিওতে অনুষ্ঠিত নিক্কেই ফোরামের ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে অংশ নেবেন প্রধান উপদেষ্টা। পাশাপাশি দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, প্রধান উপদেষ্টার এই সফরে বাংলাদেশের ১ লাখ দক্ষ জনশক্তিকে জাপানে পাঠানো এবং মাতাড়বাড়ি-মহেশখালীর প্রকল্পসহ দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি গুরুত্ব পাবে। এছাড়া, জাপানি প্রতিষ্ঠান জাইকার সাথে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সফরে দুই দেশের মধ্যে ৭টি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। ঢাকা-টোকিও সম্পর্কের অমীমাংসিত সব ইস্যুতেও আলোচনা হবে। তবে সেখানে সামরিক খাত অগ্রাধিকারে থাকবে না। এয়ারক্রাফট সংকটে বন্ধ হওয়া জাপানের সাথে সরাসরি বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালুর ব্যাপারে কথা হবে।
এছাড়া, জাপানের কাছ থেকে এক বিলিয়ন ডলার স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তার প্রস্তাব করবেন প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা ৩১ মে সকালে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে টোকিও থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করবেন এবং রাতে ঢাকায় অবতরণ করবেন।
ঢাকা/হাসান/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’