যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে শুল্ক বেড়ে যাওয়ার প্রভাবে ব্যবসায়ে ব্যয় বেড়ে গেছে। আগামীতে আরও বাড়তে পারে। বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসির সাম্প্রতিক এক জরিপে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো এমন তথ্য দিয়েছে।

জরিপে উঠে এসেছে ক্রমবর্ধমান ব্যয়, সরবরাহ চেইনে বিঘ্নতা, শুল্ক ও পরিবর্তনশীল বাণিজ্যনীতির প্রভাবে বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কৌশল ও বিনিয়োগ পরিকল্পনা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য হচ্ছে।

এইচএসবিসি ‘ট্রেড পালস’ নামে এ জরিপ সম্প্রতি প্রকাশ করেছে। জরিপে বাংলাদেশসহ ১৩ দেশের ৫ হাজার ৭০০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের বর্তমান শুল্ক ও বাণিজ্য বিষয়ে পরিকল্পনা ও মনোভাবের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। দুই-তৃতীয়াংশ প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে শুল্ক ও বাণিজ্য অনিশ্চয়তার কারণে ব্যয় বৃদ্ধির মুখোমুখি হয়েছে এবং তারা মনে করছে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। 

গত ৩০ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত জরিপ পরিচালিত হয়। জরিপে বাংলাদেশের ২৫০ প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এসব প্রতিষ্ঠানের অনেকেই শুল্কের কারণে ব্যয় বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে। তবে অংশগ্রহণকারীদের উল্লেখযোগ্য অংশ আগামীতে আন্তর্জাতিক ব্যবসা সম্প্রসারণে আশাবাদী। অর্ধেকের মতো উত্তরদাতা জানিয়েছে, সম্প্রসারণে তাদের কৌশলগত পরামর্শের দরকার হবে। এইচএসবিসি বাংলাদেশ জরিপের বিষয়ে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।

জরিপে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশের ৫৪ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ৬১ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের ৫২ শতাংশ উত্তরদাতা চীনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশের ৬৫ শতাংশ, ভারতের ৫৪ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৫১ শতাংশ ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াচ্ছে। যুক্তরাজ্য (৪৬%), ভারত (৬২%) এবং বাংলাদেশের ৫৮ শতাংশ উত্তরদাতা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধির আশাবাদ বজায় রয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছে ভারত (৯৬%), বাংলাদেশ (৯৫%) ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (৯৪%)।

জরিপে অর্ধেকের বেশি অংশগ্রহণকারী সাপ্লাই চেইন কৌশলের জন্য ক্রমবর্ধমান খরচকে এক নম্বর উদ্বেগ হিসেবে দেখছে। ৮৫ শতাংশ উত্তরদাতা করপোরেট উচ্চতর খরচ বা বাজার পরিবর্তনের প্রতিফলনের জন্য তাদের ঊর্ধ্বমুখী মূল্য নির্ধারণ কৌশল নিয়েছে অথবা নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তিন-চতুর্থাংশের বেশি প্রতিষ্ঠানকে তাদের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক মডেল পুনর্বিবেচনা করতে হচ্ছে। যদি শুল্ক সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা আগামী দুই বছর ধরে চলতে থাকে, তাহলে ৪৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের আন্তর্জাতিক সম্প্রসারণ কৌশল পুনর্বিবেচনা করবে এবং ৩৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের দেশীয় বা আঞ্চলিক বাজারে মনোযোগ দেবে।

এইচএসবিসি গ্লোবাল ট্রেড সলিউশনের প্রধান ভিভেক রামাচন্দ্রন বলেন, শুল্ক এবং বাণিজ্য অনিশ্চয়তার বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তারা এ পরিস্থিতিতেও তাদের কার্যক্রমে সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে এবং পরিস্থিতি মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।  

বাংলাদেশের জরিপের ফলাফল সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো.

মাহবুব উর রহমান বলেন, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে আশাবাদী মনোভাব দেখিয়েছেন। এইচএসবিসি বৈশ্বিক দক্ষতা এবং আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কে সক্ষমতার মাধ্যমে গ্রাহকদের সঙ্গে কাজ করার জন্য এবং তাদের বৈশ্বিক সুযোগের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য সবসময়ই পাশে আছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এইচএসব স ব যবস য় ক পর স থ ত র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মাইক্রোসফটের ফ্রি অনলাইন কোর্স : ডেটা সায়েন্স–এআইসহ নানা বিষয়ে শেখার সুযোগ

ঘরে বসেই দক্ষতা বাড়াতে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ নিয়ে এসেছে মাইক্রোসফট। এই অনলাইন কোর্সগুলো edX প্ল্যাটফর্মে উন্মুক্ত করা হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের শিক্ষার্থী বা পেশাজীবীরা কোর্সগুলোতে অংশ নিতে পারবেন।

২০২৫ সালের এই প্রোগ্রামে ৬০টির বেশি অনলাইন কোর্স রয়েছে, যা বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ দেবে। দ্রুত পরিবর্তনশীল চাকরির বাজারে নিজেকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে সাহায্য করবে এসব কোর্স। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা Microsoft AI Skills Fest-এ অংশ নিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) সম্পর্কিত বিশেষায়িত কোর্সও করতে পারবেন।

মাইক্রোসফটের লক্ষ্য হলো আজকের চাকরির বাজারে চাহিদাসম্পন্ন প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত দক্ষতা গড়ে তুলতে সহায়তা করা। এই কোর্সগুলো শিক্ষার্থীরা নিজের সুবিধামতো সময়ে শিখতে পারবেন। এখানে থাকছে ক্লাউড কম্পিউটিং, মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ডেটা সায়েন্স, মেশিন লার্নিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং সাইবার সিকিউরিটিসহ নানা বিষয়ে হাতে–কলমে শেখার সুযোগ।

বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ

মাইক্রোসফটের অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞরা এই কোর্সগুলো তৈরি ও পরিচালনা করেন। ফলে অংশগ্রহণকারীরা বাস্তব জীবনের জ্ঞান এবং দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। যাঁরা প্রযুক্তির জগতে নতুন, তাঁরা বিগিনার লেভেলের কোর্স দিয়ে শুরু করতে পারবেন। আর যাঁরা অভিজ্ঞ, তাঁদের জন্য রয়েছে ইন্টারমিডিয়েট লেভেলের কোর্স। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের নতুন অ্যাপ্লিকেশন, ডিজিটাল সেবা এবং উদ্ভাবনী সমাধান ডিজাইন করার দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।

কোর্স কাঠামো ও সার্টিফিকেট

মাইক্রোসফটের এই অনলাইন কোর্সগুলো ফ্রি অডিট ট্র্যাকের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনা খরচে করা যাবে। তবে যাঁরা শিখে একটি অফিশিয়াল ভেরিফায়েড সার্টিফিকেট পেতে চান, তাঁরা নামমাত্র ফি দিয়ে সার্টিফিকেট নিতে পারবেন, যা চাকরি বা ক্যারিয়ারে বাড়তি গুরুত্ব দেবে।

এটি একটি MOOC (Massive Open Online Course) উদ্যোগ, যা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্রি অনলাইন কোর্স ২০২৫-এর মতো বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।

মাইক্রোসফটের কোর্স এখন করা যায় ঘরে বসেই

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনবে চোখের নতুন ড্রপ
  • মাইক্রোসফটের ফ্রি অনলাইন কোর্স : ডেটা সায়েন্স–এআইসহ নানা বিষয়ে শেখার সুযোগ
  • বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎমুখী সম্পর্ক চায় ভারত: প্রণয় ভার্মা