চরমোনাইর পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে চ্যালেঞ্জের মুখে। এই চ্যালেঞ্জের কোনো শেষ নেই। ভারত শকুনের দৃষ্টিতে প্রতিটি মুহূর্ত বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে আছে– কখন খাবলে খাবে। তাদের দালালরাও দেশের বিভিন্ন জায়গায় সুযোগের অপেক্ষায় ঘাপটি মেরে বসে আছে।

গতকাল বুধবার দিনাজপুরের ইনস্টিটিউট মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এ আমির বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শেষ নেই। এই অবস্থায়ও এক দল নেমেছে ত্বরিত নির্বাচনের জন্য। সংস্কারের কথা তাদের কোনো আলোচনায় দেখি না। খুনি, গুমকারী, টাকা পাচারকারীদের বিচারের বিষয়ে তেমন কোনো গুরুত্ব দিতে দেখি না। শুধু আমরা নির্বাচন, নির্বাচন বলতে শুনি।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দিনাজপুর দক্ষিণের সভাপতি নূর আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও দিনাজপুর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মুফতি মুহাম্মদ খাইরুজ্জামানের সঞ্চালনায় জনসভায় উপস্থিত ছিলেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মুনতাছির আহমাদ, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মুফতি মানসুর আহমদ সাকী প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চরম ন ই প র

এছাড়াও পড়ুন:

পশ্চিমবঙ্গসহ ৪ রাজ্য সফরে মোদি, নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস

প্রথমে সিকিম, এরপর পশ্চিমবঙ্গ, বিহার হয়ে উত্তর প্রদেশ। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে চার রাজ্য সফরে বের হচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের কেন্দ্রে এনডিএ-৩ সরকারের প্রথম বছরপূর্তি হবে আগামী ৯ জুন। কারণ, গতবছর তৃতীয়বারের জন্য কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসে ৯ জুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন নরেন্দ্র মোদি।

ইতিমধ্যেই এই দিনটি পালনের জন্য বিজেপির তরফে একাধিক কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এই এক বছরে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন কাজকর্ম এবং সাফল্য তুলে ধরা হবে দেশের মানুষের কাছে। স্বাভাবিকভাবে ব্যস্ত সফরসূচির মধ্যেই এই চার রাজ্য সফরে বেরোচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। 

সিকিম দিয়ে তার রাজ্য সফর শুরু হচ্ছে, এরপর পশ্চিমবঙ্গ, বিহার হয়ে তার সফর শেষ হবে উত্তরপ্রদেশে। দু’দিনের এই সফরে (বৃহস্পতি ও শুক্রবার) যেমন বেশ কয়েকটি জনসভায় উপস্থিত থাকবেন তেমনি ৬৯ হাজার কোটি রুপির বেশি মূল্যের প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলন্যাশ করবেন তিনি। 

দুই দিনের এই সফরের প্রথম দিন আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লি থেকে বিশেষ বিমানে সিকিমে আসবেন মোদি। সকাল ১১ টায় সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকে ‘সিকিম@৫০: হোয়ার প্রগ্রেস মিটস পারপাস অ্যান্ড নেচার নার্সারস গ্রোথ’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সিকিম রাজ্য হিসেবে মর্যাদা পাওয়ার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে স্মারক মুদ্রা, ডাক টিকিট, স্মরণিকা প্রকাশ করবেন প্রধানমন্ত্রী। 

উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য সিকিমে একাধিক উন্নয়ন মুখী প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছে নামচি জেলায় ৭০০ কোটি রুপি ব্যায়ে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল, গ্যালশিং জেলার সাঙ্গাচোলিং ও পেলিংয়ে প্যাসেঞ্জার রোপওয়ে, গ্যাংটকের শাঙ্গখোলা এলাকায় অটল অমৃত উদ্যানে ভারত রত্ন অটল বিহারী বাজপেয়ীর একটি স্ট্যাচু নির্মাণ। 

একই দিনে দুপুরে সিকিম থেকে পশ্চিমবঙ্গ সফরে আসবেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর ২টার দিকে আলিপুরদুয়ারে একটি অনুষ্ঠান থেকে কোচবিহার ও আলিপুর জেলায় সিটি গ্যাস বন্টন (সিজিডি) প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ১ হাজার ১০ কোটি রুপি প্রকল্পের লক্ষ্য হলো- কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলার প্রায় আড়াই লাখেরও বেশি মানুষের ঘরে এবং ১০০টি বাণিজ্যিকপ্রতিষ্ঠানে পাইপের মাধ্যমে গ্যাস পৌঁছে দেওয়া। পরে আলিপুরদুয়ারের একটি জনসভাতেও অংশ নেবেন মোদি। 

আলিপুরের সভা শেষ করেই তিনি চলে যাবেন বিহারের পাটনায়। বিকেল পৌনে ৬টায় পাটনা বিমানবন্দরে একটি নতুন ভবনের উদ্বোধন করবেন মোদি। ১ হাজার ২০০ কোটি রুপির এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ওই বিমানবন্দরের যাত্রী ধারণক্ষমতা বেড়ে যাবে সেক্ষেত্রে একবছরে ১ কোটি। যাত্রীরা এই পথ দিয়ে চলাচল করতে পারবেন। 

পরদিন শুক্রবার, ৩০ মে সকাল ১১টার দিকে বিহারের কারাকাট এলাকায় ৪৮ হাজার ৫২০ রুপি প্রকল্পের বেশ কিছু উন্নয়নমুখী প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন মোদি। এর মধ্যে রয়েছে ঔরঙ্গাবাদ জেলায় ২৯ হাজার ৯৩০ কোটি রুপির নবীনগর সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট। ২ হাজার ৪০০ (৩x৮০০) মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা সম্পন্ন এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিহার এবং গোটা পূর্বভারতে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ হবে। পাশাপাশি শিল্প উন্নয়ন এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এছাড়াও কয়েকটি রেল প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন মোদী। পাশাপাশি পাটনায় একটি জনসভায় বক্তব্য রাখবেন তিনি। 

শেষ সফর হিসেবে তিনি উত্তরপ্রদেশে যাবেন। শুক্রবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে কানপুর নগর এলাকায় ২০ হাজার ৯০০ কোটি রুপি প্রকল্পের একাধিক উন্নয়ন্মুখী প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর করবেন। যার মধ্যে রয়েছে একাধিক বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, মেট্রোরেল প্রকল্প। পাশাপাশি একটি জনসভায় বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী। 

তবে, এই সফরের মধ্যে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সফর। বছর ঘুরলেই ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার নির্বাচন। ফলে নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে মোদির এই সফর নিয়ে রাজ্য বিজেপির নেতাকর্মীদের উন্মাদনা তুঙ্গে।  

ইতিমধ্যেই শিক্ষক নিয়োগ, রেশন, সরকারি হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় ডাক্তারি ছাত্রীর মৃত্যু, স্বাস্থ্য, বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, খুনসহ একাধিক ক্ষেত্রে দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের। এসব ইস্যুকে হাতিয়ার করে আগামীকাল বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের জনসভা থেকে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের কি বার্তা দেন সেদিকে যেমন বিজেপির দলীয় কর্মী-সমর্থকরা মুখিয়ে রয়েছেন, তেমনি এই সভার দিকে রাজনৈতিক মহলেরও নজর রয়েছে। 

পাশাপাশি গত মাসে কাশ্মীরের পেহেলগাসে বন্দুকধারীদের হামলার পর পাকিস্তান ও পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে (পিওকে) জঙ্গি ঘাটিগুলোতে সফলভাবে অভিযান চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী, যার নাম ছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’। ইতিমধ্যেই ওই ‘অপারেশন সিঁদুরে’র সফলতা প্রচার করতে গোটা বিশ্বে একাধিক দেশ সফর করছেন ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত ৭টি টিম। সেই অপারেশনের সাফল্যকে বিধানসভার ভোটে নির্বাচনী হাতিয়ার করতে নরেন্দ্র মোদি আদৌ কোনো দিক-নির্দেশনা দেন কি-না সেটাও দেখার বিষয়। 

যদিও মোদির সফর নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের সিনিয়র নেতা এবং দমদমের এমপি সৌগত রায় বলেছেন, ‘নির্বাচনের আগে বারবারই প্রধানমন্ত্রী ডেইলি প্যাসেঞ্জারের মত যাতায়াত করেন। আবার প্রতিবারই হেরে যান। এরপরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এসে বলবেন, আগলি বার দোশ পার। কিন্তু, ১০০ আসনও পার হতে পারবেন না। ওদের আসা যাওয়ায় আমাদেরকে কিছু এসে যায় না।’ সৌগত রায়ের প্রত্যাশা, ‘২০২৬-এর নির্বাচনে তৃণমূল ব্যাপকভাবে জিতবে এবং দুইশ’র বেশি আসন পাবেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পশ্চিমবঙ্গসহ ৪ রাজ্য সফরে মোদি, নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস