প্রতিদিনই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নতুন নতুন নিয়ম চাপাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তারই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির সীমা ঠিক করে দিলেন। তাঁর মতে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির সীমা ১৫ শতাংশ হওয়া উচিত।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে চীনের সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তার আক্রমণ এবং তীব্র সমালোচনা অব্যাহত রেখেছেন। বুধবার (২৮ মে) হোয়াইট হাউজে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির সীমা ১৫ শতাংশ হওয়া উচিত।” একই সাথে তিনি বিদেশি শিক্ষার্থীদের তালিকা জমা দেওয়ার জন্য চাপ অব্যাহত রেখেছেন।

আরো পড়ুন:

ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার ‘বাকযুদ্ধ’

স্টুডেন্ট ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র

ট্রাম্প বলেন, “হার্ভার্ডকে তাদের বিদেশি শিক্ষার্থীদের তালিকা আমাদের দেখাতে হবে। তাদের বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের প্রায় ৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী বিদেশি। প্রায় ৩১ শতাংশ। আমরা জানতে চাই, এই শিক্ষার্থীরা কোথা থেকে আসে। তারা কি ঝামেলা সৃষ্টিকারী?”

ট্রাম্পের দাবি, এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে উগ্র বামপন্থিদের মদদে ঝামেলা সৃষ্টিকারী।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি মনে করি হার্ভার্ডের বিদেশি শিক্ষার্থী ৩১ শতাংশ নয়, ১৫ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা উচিত। আমাদের হার্ভার্ড ও অন্যান্য স্কুলে যেতে আগ্রহী এমন লোকেরা আছেন যারা বিদেশি শিক্ষার্থী থাকার কারণে ভর্তি হতে পারেন না।”

ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর, অনেক মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়কে সতর্ক করে বলেছেন, যারা তাদের নীতিমালা পরিবর্তন করবে না তাদের তাহবিল হ্রাস করা হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিদ্বেষ নির্মূল করা এবং সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর পক্ষে বৈচিত্র্যপূর্ণ উদ্যোগ বাতিল করা।

ট্রাম্প প্রশাসন এরই মধ্যে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত মিলিয়ন ডলারের তহবিল স্থগিত করেছে, বহু শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছে এবং হাজার হাজার ভিসা বাতিল করেছে। যদিও এর অনেকগুলো পদক্ষেপ আদালতের রায়ে স্থগিত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বলছে, এসব পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের বাকস্বাধীনতা ও শিক্ষা গ্রহণের অধিকারের ওপর আঘাত হানছে।

বিশেষ করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মূল টার্গেটে পরিণত হয়েছে। দুই মাস আগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদান বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেই সঙ্গেই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে করমুক্ত সুবিধা দেওয়া হবে না বলেও জানান ট্রাম্প। একই সঙ্গে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদানের টাকা টেকনিক্যাল স্কুলগুলোকে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলেও জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে ইহুদি-বিদ্বেষের কেন্দ্রস্থল বলে অভিহিত করেছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প প্রশাসন গত সপ্তাহে হার্ভার্ডের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি ও বিদেশি গবেষক স্বাগত জানানোর ক্ষমতা প্রত্যাহার করে নেয়। তবে এক ফেডারেল বিচারক সেটি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন এবং এই বিষয়ে আদালতে শুনানির জন্য ২৯ মে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। 

হার্ভার্ডের তথ্য অনুসারে, বর্তমানে, হার্ভার্ড ১৪০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চল থেকে প্রায় ৬ হাজার ৮০০ বিদেশি শিক্ষার্থী ও গবেষক ভর্তি করে, যাদের বেশিরভাগই স্নাতক প্রোগ্রামে পড়াশোনা করছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ভর ত র স ম

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ