সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনের মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া বনের ভেতরে ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছের সঙ্গে কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কা লেগেছে। আজ বৃহস্পতিবার সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল পৌনে ৯টায় লাউয়াছড়া বনে পৌঁছালে ঝড়ে উপড়ে পড়া একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ট্রেনের লোকোমেটিভ ইঞ্জিনের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে বড় ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটায় রক্ষা পেল শতাধিক যাত্রী। পরে বন বিভাগ ও রেলওয়ের কর্মীরা পড়ে থাকা গাছ ও ডালপালা কেটে সরিয়ে নিলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

স্থানীয়রা জানান, বুধবার দিবাগত রাতে বৃষ্টিপাতে লাউয়াছড়া বনের ভেতর রেললাইনের ওপর একটি বড় গাছ উপড়ে পড়ে। সকালে লাউয়াছড়া বনের ভেতর দিয়ে ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি অতিক্রম করার সময়ে রেললাইনে উপড়ে পড়া গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। ধাক্কায় ট্রেনের লোকোমেটিভ ইঞ্জিনের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এতে যাত্রীদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পান শতাধিক যাত্রী।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার সাখাওয়াত হোসেন জানান, গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের লোকোমেটিভ ইঞ্জিনের সামনের অংশ বাঁকা হয়ে গেছে। তবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। রেললাইন থেকে গাছ সরানোর পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। ট্রেনটি বাঁকা অংশ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। এতে ট্রেনের প্রায় ২০ মিনিট সময় বিলম্ব হয়।

গাছ পড়ার বিষয়ে বন বিভাগের লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী নাজমুল বলেন, আমরা খবর পেয়ে রেললাইনে পড়া গাছ ও ডালপালা কেটে সরাতে কাজ করি। লাউয়াছড়ায় অনেক গাছ পুরোনো রয়েছে। বৃষ্টি হলে মাটি দেবে গিয়ে সেগুলো উপড়ে পড়ে যায়।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা

রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।

গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।

উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।

সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।

ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।

তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।

মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।

রাজশাহী কালেক্টরেট মাঠে বইমেলা উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে আলোচনা সভা। গতকাল রোববার সন্ধ্যায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ