গাজীপুরের কালীগঞ্জে নিসর্গ রিসোর্টে পেট্রোল বোমা হামলা করা হয়েছে। সোমবার (২৬ মে) দিবাগত রাত এবং মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোরে উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের উলুখোলা এলাকার কুচলিবাড়ি অঞ্চলে এ হামলা হয়। এ ঘটনা প্রথমে গোপন থাকলেও বুধবার (২৮ মে) রাতে মামলার মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসে।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও  কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিলন মিয়া। তিনি জানান, নিসর্গ রিসোর্টের দায়িত্বে থাকা আব্দুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা করেছেন।

তিনি আরো জানান, “তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে। বৃষ্টির কারণে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে, তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।”

আরো পড়ুন:

অভয়নগরে ১৯ বাড়িঘরে লুটপাট-আগুন: পাঁচ দিন পর মামলা, আটক ৩

শেরপুরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় ৫৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মামলার এজাহারে বলা হয়, সোমবার (২৬ মে) দিবাগত রাত ২টার দিকে রিসোর্টের পূর্বপাশে একটি পেট্রোল বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোরে দ্বিতীয় বোমা রিসোর্টের একটি দোতলা ভবনের লবিতে বিস্ফোরিত হয়। দ্বিতীয় বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনায় বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে সুতলি দিয়ে বাঁধা দুটি তরল পদার্থ ভর্তি কাঁচের বোতল, ভাঙা কাঁচ এবং একটি প্লাস্টিকের জারিকেন উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার আগে রিসোর্টের পাশের কাঁঠাল বাগানে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা গোপন বৈঠক করে। ধারণা করা হচ্ছে, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে তারা পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালায়।

নিসর্গ রিসোর্ট গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের মালিকানাধীন, যার চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা ট্রাস্টি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

ঢাকা/রফিক/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রাঙামাটিতে টানা বর্ষণে বেড়েছে পাহাড়ধসের ঝুঁকি, ফাঁকা আশ্রয়কেন্দ্র

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে বেড়েছে পাহাড় ধসের ঝুঁকি। এরই মধ্যে শুক্রবার (৩০ মে) সকালে রাঙামাটি শহরের যুব উন্নয়ন এলাকার একটি ঘরের ওপর ধসে পড়েছে পাহাড়ের মাটি। অধিকতর ধস এড়াতে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে স্থানটি।

শুধু যুব উন্নয়ন এলাকাই নয়; ছোট ছোট ধস হয়েছে লোকনাথ মন্দির সংলগ্ন ও মোনাদাম এলাকায়। মাটি রক্ষার জন্য দেওয়া বস্তা ধসে ঢুকে গেছে ঘরের ভেতর।

রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে উপজেলা পরিষদের সামনে আর্মি ক্যাম্পের সৌন্দর্য বর্ধনকারী কৃষ্ণচূড়া গাছটি উপড়ে পড়েছে। এতে যান চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত পদক্ষেপের কারণে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

আরো পড়ুন:

আর কতদিন থাকবে বৃষ্টি?

রাতে শুরু হওয়া বৃষ্টি বিকেলেও অব্যাহত, জলাবদ্ধতা নেই চট্টগ্রামে

এদিকে, ধস প্রবণ এলাকা থেকে সরেননি বাসিন্দারা। ফলে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পড়ে আছে ফাঁকা। শুধুমাত্র লোকনাথ মন্দির আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ১৪ পরিবারের ৬২ জন। রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে আসলেও দুপুর পর্যন্ত খাবার না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন তারা।

লোকনাথ মন্দির আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা মনোয়ারা বেগম বলেন, “রাতে বাসা থেকে খেয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আসি। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলো এখানো খাবার দেয়নি। বাচ্চাদের নিয়ে আছি। সারা রাত অনেক বৃষ্টি হয়েছে। আমাদের বাড়ির আশপাশের কিছু মাটি সরে গেছে। বাসায় যেতে ভয় পাচ্ছি।”

একই আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা আইয়ুব খানও খাবার না পাওয়ার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “রাতে এখানে আসি। বিভিন্ন লোকজন খোঁজ নিচ্ছে, তবে কেউ খাবার দেয়নি। জেলা প্রশাসন থেকে সব ব্যবস্থা করবে বলা হলেও কিছুই পাচ্ছি না।”

রাঙামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিফাত আসমা বলেন, “রাঙামাটি সদরে ২৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও শুধু লোকনাথ মন্দির আশ্রয় কেন্দ্রে ১৪ পরিবারের ৬২ জন মানুষ অবস্থান করছেন। তালিকা অনুযায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানকারীদের দুপুর ও রাতের খাবারের পাশাপাশি শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, গেল ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত) রাঙামাটি জেলায় ১৪০ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।

ঢাকা/শংকর/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ