এনবিআর চেয়ারম্যানকে রাজস্ব ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
Published: 29th, May 2025 GMT
অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত এনবিআর চেয়ারম্যানকে রাজস্ব ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থার চরম সংকট তৈরি হওয়ায় তাঁকে অপসারণের দাবিতে ঘোষিত লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি অব্যাহত আছে এবং থাকবে। এনবিআর বিলুপ্ত করে সরকারের জারি করা অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুতির প্রক্রিয়ার শুরু থেকে প্রতিটি ধাপে এনবিআর চেয়ারম্যান লুকোচুরির আশ্রয় নিয়েছেন ও চরম অসহযোগিতা করেছেন। সরকারকে ভবিষ্যৎ রাজস্ব কাঠামো নিয়ে এনবিআরের কর্মকর্তাদের আশা ও আকাঙ্ক্ষার কথা জানানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাও সৃষ্টি করেছেন তিনি।
বিজ্ঞপ্তিতে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগের প্রত্যাশা জানিয়ে আন্দোলনকারীরা জানান, ‘রাষ্ট্র ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে সরকার কর-রাজস্ব নীতি প্রণয়ন, কর-রাজস্ব আহরণ ও ব্যবস্থাপনায় জ্ঞান, দক্ষতা ও বাস্তব কর্ম-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন কর্মকর্তাকে এনবিআর চেয়ারম্যান পদে পূর্ণকালীন দায়িত্ব প্রদান করবেন বলে আমরা আশা করছি।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সরকার এনবিআর বিলুপ্ত করবে না অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারির পরপরই এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা ২৬ মে থেকে ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। এর ফলে ওই দিন থেকে সব দপ্তরে পুরোদমে কাজ চলছে।
এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণের দাবিটি এখনো পূরণ হয়নি। আমরা দাবি করেছিলাম আজ ২৯ মের মধ্যে তাকে অপসারণ করতে হবে। বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে বলে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি। সরকারের আন্তরিক হস্তক্ষেপে ইতিমধ্যে আমাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
উল্লেখ্য, এনবিআর বিলু্প্ত করে ১২ মে এক অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে সরকার রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি বিভাগ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর ওই অধ্যাদেশ বাতিল ও টেকসই রাজস্ব সংস্কারসহ মোট চার দফা দাবিতে ১৪ মে থেকে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে সারা দেশের কাস্টমস, ভ্যাট ও ট্যাক্স বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ২৫ মে পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’