আগামী অর্থবছরে সুদখাতে  বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে হবে। এখাতে আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে ১ লাখ ২২ হাজার ৫০০  কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে; চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে যা ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

ফলে আগামী অর্থবছরে সুদ ব্যয় বাড়ছে চলতি অর্থবছরের( ২০২৪-২০২৫) চেয়ে ৯ হাজার কোটি টাকা। এর আগে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদখাতে সরকারকে খরচ করতে হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি  টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আগামী ২ জুন বেতার-টিভি মাধ্যমে অর্থ উপদেষ্টা ড.

সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পড়ে শোনাবেন। বিকাল ৪টায় বাজেট বক্তব্য প্রচার করা হবে।

আরো পড়ুন:

বাজেট ঘোষণা ২ জুন
বাজেটে টেকসই প্রবৃদ্ধির বার্তা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের

তামাক নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির বাজেট বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপের আশ্বাস

এর আগে অর্থ বিভাগের করা এক প্রাক্কলনে বলা হয়েছিল, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ ব্যয় বেড়ে হবে ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু আগামী বাজেটের আকার ৮ লাখ কোটি টাকার নিচে নামিয়ে আনার কারণে সুদ ব্যয় এই পর্যায়ে যায়নি বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়।

এর আগে সুদ ব্যয় বেড়ে যাবার কারণ হিসেবে অর্থ বিভাগ থেকে উল্লেখ করা হয়েছিল, বৈদেশিক উৎস হতে অর্থায়নের ক্ষেত্রে  অনমনীয়  এবং আধা নমনীয় ঋণের পরিমান ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে এখাতের সুদের হারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপরন্তু টাকার অবচিতি(ডিভ্যালুয়েশন) এবং বৈশ্বিক সুদের হার বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক উৎসের অন্তর্নিহিত সুদের হার ২০২০-২০২১ অর্থবছরে  ১ শতাংশ হতে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে ২ শতাংশে উন্নীত হবে।

অর্থবিভাগ থেকে বলা হয়েছে, মধ্যমেয়াদে সরকারের প্রাক্কলিত সুদ ব্যয় এখাতে সরকারের ক্রমবর্ধমান ব্যয় বৃদ্ধির প্রবণতা নির্দেশ করে। সুদ পরিশোধের প্রাক্কলন অনুযায়ী ২০২১ অর্থবছরের সুদ ব্যয় ছিল ৭৭ হাজার ৭৭ কোটি টাকা। সেখানে ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে তা বেড়ে হবে এক লাখ ৫৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। মোট বাজেটের অনুপাতে সুদ পরিশোধ হ্রাস-বৃদ্ধি লক্ষ্যণীয়। সুদ ব্যয় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাজেটের ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ হতে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে১২ দশমিক ৪ শতাংশে হ্রাস পায় তবে তা ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে পুনরায় ১৫.৩ শতাংশে উন্নীত হতে পারে। 

বাজেটের কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, প্রতি বছরই বাজেটে সুদ ব্যয় বেড়ে চলেছে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে সুদখাতে ব্যয় ধরা হয় ৭০  হাজার ৬০০ কোটি টাকা। মূল বাজেটে যা ছিল ৬৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা।

সুদ ব্যয়ের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সুদখাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় ধরা আছে ৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। একইভাবে ২০২১-২২অর্থবছরে সুদ ছিল ৭০ হাজার ৮০০ কোটি টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯০ হাজার কোটি টাকা, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯৪ হাজার ৩০ কোটি টাকা, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে একলাখ ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা এবং সর্বশেষ ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সুদ বেড়ে হবে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৩০ কোটি টাকা।

ঢাকা//হাসনাত/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

টানা তিন মাস কমল দেশের পণ্য রপ্তানি

বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান দুই উৎসের একটি পণ্য রপ্তানি স্বস্তিতে নেই। টানা তিন মাস ধরে দেশের পণ্য রপ্তানি কমেছে। গত মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩৮২ কোটি ডলারের পণ্য। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম।

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে প্রায় ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। তারপরের দুই মাস, অর্থাৎ আগস্টে ২ দশমিক ৯৩ এবং সেপ্টেম্বরে পণ্য রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। তাতে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবরে) সামগ্রিক পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অথচ বিদায়ী অর্থবছর পণ্য রপ্তানি বেড়েছিল সাড়ে ৮ শতাংশ।

পণ্য রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ পরিসংখ্যান আজ সোমবার প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ১ হাজার ৬১৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ২ শতাংশ বেশি।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত অক্টোবরে তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হিমায়িত চিংড়ি, প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি কমেছে। তবে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, চামড়াবিহীন জুতা ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। মূলত তৈরি পোশাকের রপ্তানি ৮ শতাংশ কমে যাওয়ায় সামগ্রিক পণ্য রপ্তানি নেতিবাচক ধারায় চলে গেছে।

দেশের মোট রপ্তানি ৮০ শতাংশই তৈরি পোশাক। টানা তিন মাস ধরে তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমলেও অর্থবছরের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। গত জুলাইয়ে ৩৯৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল সাড়ে ২৪ শতাংশ। পরের মাসে রপ্তানি কমে পৌনে ৫ শতাংশ। আর সেপ্টেম্বরে কমেছিল প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ। গত মাসে, অর্থাৎ অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে ৩০২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এই রপ্তানি গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় ৮ শতাংশ কম।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ১ হাজার ২৯৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ২৮১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক।

দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পণ্য রপ্তানি খাত বর্তমানে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছর এখন পর্যন্ত ইতিবাচক ধারায় আছে এই খাতের রপ্তানি। গত জুলাই-অক্টোবর সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৪১ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি।

পণ্য রপ্তানিতে তৃতীয় শীর্ষ খাত কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ৩৮ কোটি ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় পৌনে ২ শতাংশ কম। শুধু গত মাসে ১০ কোটি ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি কমেছে সাড়ে ৯ শতাংশ।

এদিকে চতুর্থ শীর্ষ রপ্তানি খাত হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি গত মাসে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ শতাংশ। যদিও সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কমেছিল দশমিক ৫৪ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ২৮ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ৯ শতাংশ বেশি।

দেশের পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি এখনো ইতিবাচক ধারায় আছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ২৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেশি। শুধু গত মাসে ৮ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ শতাংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিলো পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স
  • পণ্য রপ্তানিতে বিলিয়ন ডলারের কাছে ইয়াংওয়ান, অর্ধবিলিয়ন ছাড়িয়ে হা-মীম, মণ্ডল ও ডিবিএল
  • টানা তিন মাস কমল দেশের পণ্য রপ্তানি
  • বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে 
  • বাজুসের নতুন সভাপতি এনামুল হক খান
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
  • নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন
  • ‘হুক্কা’ প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পেল জাগপা
  • উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি
  • ২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও ৭% কমতে পারে, বাংলাদেশে কেন কমছে না