গভীর নিম্নচাপের ফলে রাজধানী ঢাকায় দিনভর বৃষ্টির মধ্যে ভিজে মোহাম্মদপুরে একাধিক জনসংযোগে অংশ নিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহবায়ক নাহিদ ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডাক্তার তাসনীম জারা, যুগ্ম সদস্যসচিব আকরাম হুসাইনসন এনসিপির নেতাকর্মীরা। 

বৃহস্পতিবার একটি ভ্রাম্যমান ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে স্থানীয় জনগণের সাথে একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নেন নাহিদ ইসলাম। 

এ সময় তিনি 'ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা; আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম; তোমার দেশ আমার দেশ,  বাংলাদেশ বাংলাদেশ; শহীদ সৈকত স্মরণে, ফারহান ফাইয়াজ স্মরণে, ভয় করি না মরণে' ইত্যাদি স্লোগান দেন। 

পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে তিনি শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় মসজিদ (কবরস্থান মসজিদ) প্রাঙ্গণে তিনি আসরের নামাজ আদায় করেন।

বিকাল ৫টায় শহীদ সৈকতের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে তিনি শহীদ স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আসরের পর মোস্তাকিমের কাবাব, জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় অনুষ্ঠিত পথসভায় বক্তব্য দেন এবং এর পরে বিহারি জনগোষ্ঠীর একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ড্রিম স্কুলে স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময়ে অংশ নেন।

মাগরিবের নামাজ আদায় করেন শহীদ পার্ক মসজিদে (টাউনহল)। এরপর টাউনহল এলাকায় প্রথম পথসভা ও লিফলেট বিতরণ করেন তিনি।

টাউন হলের সামনে ভ্রাম্যমান ট্রাকে জনসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, মোহাম্মদপুর আমাদের প্রতিরোধের অন্যতম জায়গা ছিল। আমাদের অনেক ভাই শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন। আমাদের এত জীবনের বিনিময়ে এতটুকু প্রত্যাশা আমাদের আর জীবন দিতে হবে না, আর লড়াই করতে হবে না। আমরা চাই গণঅভ্যুত্থান সফলতার দিকে যাক। আমাদের শহীদদের আত্মত্যাগ, গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে আমরা একসঙ্গে কাজ করবো ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির সবার প্রতি আহবান থাকবে, মানুষের পাশে দাঁড়ান। নাগরিকের সমস্যা সমাধান করুন। এটাই আমাদের রাজনীতি। নাগরিক সমস্যা সমাধানের রাজনীতি। আমরা কোনো চাঁদাবাজি-সন্ত্রাসের রাজনীতি চাই না। যদি সেই রাজনীতি আমাদের কেউ করে তাদেরকে আপনারা প্রত্যাখ্যান করুন। 

নাহিদ বলেন, সামনের বাংলাদেশে শিক্ষা-চাকরি-স্বাস্থ্যের অধিকার থাকবে। আমাদের হসপিটালে একটা সিট পেতে দুর্নীতির আশ্রয় নিতে হচ্ছে। চাকরি নিতে হলে বাবা- খালু থাকা লাগে। আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, যেখানে ইনসাফ কায়েম হবে। মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে। 

উপস্থিত জনতার উদ্দেশে নাহিদ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান থেকে আমরা নতুন দল গঠন করেছি। হাঁটি হাঁটি পা পা করে আমরা এগোচ্ছি, আপনাদের কাছে যাচ্ছি। আপনাদের কথাগুলো শুনতে চাই। আপনাদের সমস্যা নিয়ে কাজ করতে চাই।

সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে তিন রাস্তা মোড়ে দ্বিতীয় পথসভা ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রমে অংশ নেন। দিনশেষে রাত ৮টা ৩০ মিনিটে ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে চতুর্থ ও শেষ পথসভায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ করেন নাহিদ ইসলাম।

তাদের সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম আহবায়ক রিফাত রশীদ, যুগ্ম সদস্য-সচিব এস এম শোয়াইব। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প ন হ দ ইসল ম ন হ দ ইসল ম আম দ র র জন ত সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থান না হলে নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না: নাহিদ

‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির ২৮তম দিনে জামালপুরে ১১ জন শহীদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ, পদযাত্রা ও পথসভা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতারা। 

সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে শহীদদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ অন্য নেতারা। সেখানে থেকে হরিজন পল্লীতে যান তারা। পরে শহরের তমাল মোড় থেকে ফৌজদারি মোড় পর্যন্ত পদযাত্রায় অংশ নেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও জামালপুরের সাত উপজেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা। ফৌজদারি মোড়ে পথসভায় বক্তব্য রাখেন এনসিপির নেতারা। 

পথসভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “অনেকে বলছে, আমরা নাকি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছি, নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। গণঅভ্যুত্থান না হলে আপনারা নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না। কোটা আন্দোলন থেকে যদি সরকার পতনের দিকে আন্দোলন না নিয়ে যেতাম, তাহলে শেখ হাসিনার আমলে নির্বাচনের জন্য আরো চার বছর অপেক্ষা করতে হতো।”

আরো পড়ুন:

বিকেলে এনসিপির পদযাত্রা-সমাবেশ, প্রস্তুত ময়মনসিংহ

ফেনীতে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবিতে পদযাত্রা 

তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের শক্তি এখনো রাজপথে আছে। আমরা গণঅভ্যুত্থানের সময় সর্ম্পূণভাবে সংগঠিত ছিলাম না। আমাদের কোনো রাজনৈতিক দল ছিল না। ফলে, আমরা অনেক কিছুই করতে পারিনি। কিন্তু, আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি অন্তর্বতী সরকারকে ও এই সময়ের রাজনীতিকে গণঅভ্যুত্থানের দিকে ধাবিত করতে। আমাদের চেষ্টা এখনো জারি আছে।”

জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “জাতীয় সংসদকে দুই ভাগ করে ভোটের অনুপাতে উচ্চ কক্ষ নির্ধারণ করতে হবে, যাতে জবাবদিহিমূলক ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করা যায়। সেই উচ্চ কক্ষের বিষয়ে ঐক্যমত না হওয়ায় জুলাই সনদ আটকে আছে। জুলাই সনদের মাধ্যমে সর্বদলীয়ভাবে ৫ আগস্ট উদযাপন করা হবে।”

তিনি বলেন, ‘সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে ঐক্যমত কমিশন। সেখানে জাতীয় নাগরিক পার্টি অংশ নিচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানের পরে সামনে যে নির্বাচন আসছে, সেই নির্বাচনে মৌলিক সংস্কার শেষে আমরা অংশগ্রহণ করতে চাই। কারণ, বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধান এই গণঅভ্যুত্থানে আমাদের অন্যতম দাবি। সংস্কারের মাধ্যমে পুরনো আইনগুলো পরিবর্তন করতে হবে, যাতে বাংলাদেশে আর কখনোই নির্বাচন কমিশনে দলীয়করণ না হয়, পুলিশে দলীয়করণ না হয়, প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থায় দলীয়করণ না হয়। আমরা সবখানে নিরপেক্ষতা চাই। ইতোমধ্যে পুলিশ কমিশনে সবাই একমত হয়েছে। এজন্য ধন্যবাদ জানাই।”

পথসভায় আরো বক্তব্য রাখেন—জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্য সচিব লুৎফর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য মশিউর রহমান শুভ, জাতীয় যুবশক্তির যুগ্ম আহ্বায়ক হিফজুর রহমান বকুলসহ অনেকে।

এনসিপির পদযাত্রা ও সমাবেশ উপলক্ষে জামালপুরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পথসভা শেষে ময়মনসিংহের উদ্দেশে যাত্রা করেন এনসিপির নেতাকর্মীরা।

ঢাকা/শোভন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেখ হাসিনাকে ১০ বার ফাঁসিতে ঝোলালেও তাঁর অপরাধ কমবে না: নাহিদ ইসলাম
  • ৩ আগস্ট নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার ঘোষণা
  • জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে: নাহিদ
  • জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে: নাহিদ 
  • এনসিপির নেতারা টাঙ্গাইলে, মাওলানা ভাসানীর কবর জিয়ারত
  • কিশোরগঞ্জে এনসিপির সভায় যুবলীগ নেতার বক্তব্য, একদিন পর বহিষ্কার
  • গণঅভ্যুত্থান না হলে নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না: নাহিদ
  • কিশোরগঞ্জে এনসিপির পথসভায় যোগ দেওয়ায় তিন নেতাকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার